গণকমিশনের ১১৬ জনের তালিকায় একজন মৃত, আরেকজন ভারতীয়


ইব্রাহীম হোসেন সম্রাট , আপডেট করা হয়েছে : 16-05-2022

গণকমিশনের ১১৬ জনের তালিকায় একজন মৃত, আরেকজন ভারতীয়

একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক ককাসের যৌথ উদ্যোগে গঠিত ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন’ ১১৬ জন আলেমের তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে জমা দিয়েছে। 

এ তালিকা প্রকাশের পর আলেমদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ইসলামী বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে এর নিন্দা জানানো হয়েছে।

১১৬ জনের তালিকায় আছেন এমন একজন হচ্ছেন চট্টগ্রাম ওমরগণি এমইএস কলেজের সাবেক অধ্যাপক ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও জামিয়া আরবিয়া ইসলামিয়া জিরির মুহাদ্দিস। 

গণকমিশনের এ তালিকা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।   

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আমরা মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত নয়। জঙ্গি অর্থায়নের কথা বলা হয়েছে এটাও সত্য নয়। আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলা হয়েছে। আমরা যা বক্তব্য দেয় সব অনলাইনেই আছে। আমরা সব সময় এদেশের জাতি গোষ্টি সাম্প্রদায়ের পারস্পরিক সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য মানুষকে আহ্বান করে থাকি। কেনো আমাদের নামগুলো সংযোজন করেছেন বুঝে আসে না। ৩০ নম্বরে যার নাম দিয়েছে মাওলানা মতিউর রহমান মাদানি ওনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদার বাসিন্দা। ওনি এখন থাকেন সৌদিআরবে। ওনার নামও এখানে যুক্ত হলো। তাহলে তো যথাযথ তদন্ত হয়নি। আরেকজন অন্ধ হুজুরের নাম আছে ওনি তো মারা গেছেন। তাহলে এটা কোন ধরনের তদন্ত। একজন নাগরিক আরেকজন নাগরিকের বিরুদ্ধে এভাবে তদন্ত করে জমা দেয়ার ক্ষমতা তাদের কে দিয়েছে? এভাবে তদন্ত করার কি আইনগত কোনো বৈধতা আছে? 


ড. আ ফ ম খালিদ বলেন, এটা করতে পারে রাষ্ট্র। তদন্ত কমিশন রাষ্ট্র গঠন করতে পারে। তারা নয় মাস ধরে এক হাজার মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ১১৬ জন বিভিন্ন ঘরনার আলেমের বিরুদ্ধে একটা রিপোর্ট জমা দেয়ার অর্থ হচ্ছে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার পায়তারা বলে আমাদের মনে হচ্ছে। যাদের নাম দেয়া হয়েছে তাদের অনেকেই আছেন অনেক শ্রদ্ধাভাজন। তারা রাজনীতি থেকে অনেক দূরে। তারা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরবে কাজ করে যাচ্ছেন। দুদক তদন্ত করে দেখুক। নির্বাচনের আগে তারা এগুলো কেনো করলো?

গণকমিশনের অনেকেই ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ছিলেন জানিয়ে ওমরগণি এমইএস কলেজের সাবেক অধ্যাপক বলেন, ওনার (তুরিন আফরোজ) বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর ওনাকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। ১১৬ জন আলেমের মধ্যে একজন ভারতীয় আরেকজন মৃত। আর থাকলো ১১৪ জন। এদের বিদেশে কোনো বাড়ি আছে আমার মনে হয় না। আমি তাদের অধিকাংশকেই চিনি। 

তিনি বলেন, এ তালিকা দেখলে দেখবেন এদেশের সব ঘরণার উলামায়ে কেরামকে এতে যুক্ত করা হয়েছে। মোটকথা এদেশে যারা ইসলামকে ফোকাস করে তাদের সবাইকেই টার্গেট করা হয়েছে। দেওবন্দী, আলিয়া, বেরলবী, আহলে হাদিস কাউকেই বাদ দেয়া হয়নি। গণকমিশনের এই পদক্ষেপকে ধিক্কার জানানোর পাশাপাশি আমি মনে করি সব মাসলাকের আলেমদের একসঙ্গে হয়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে। প্রেস কনফারেন্স করতে হবে। দুদকে স্মারকলিপি দিতে হবে। তাদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিদেশি কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। শ্বেতপত্র প্রকাশ সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ। আমরা এর নিন্দা ও তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। 

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আমি তালিকায় নাম আছে এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিবো। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে আমরা আইনিভাবে এর মোকাবেলা করবো।  

গণকমিশনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আলতাফ হোসাইন জানায়, ইতোমধ্যে আমরা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছি। আসলে এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ওনি বাহিরের কোনো ইন্ধনে ভিনদেশিদের হীনস্বার্থ রক্ষায় এটি করেছেন। এটার মধ্যে ওনার কোনো অবৈধ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। মানি লন্ডারিং মামলায় কোনো আলেম জড়িত আজ পর্যন্ত আমরা দেখি নাই। ওনি যে মুক্তিযোদ্ধা (শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক) সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। ওনি তো লন্ডনের নাগরিক। আর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে ওনার মা, ওনার ভাই সংবাদ সম্মেলন করে ওনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। ওনারা নীতির কথা বলে নীতিহীন কাজ করছেন। ১১৬ জন আলেমের নাম অসৎ উদ্দেশ্যে দুদকে দিয়েছেন। দেশ স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। দেশে অশান্ত পরিবেশ তৈরি করার জন্য এ তালিকা করা হয়েছে। এ মুহুর্তে এই তালিকা কেন? তারা তো এই তালিকা করতে পারে না। তাদের তো সেই অধিকার নেই। 


মাওলানা আলতাফ হোসাইন বলেন, শ্বেপত্রে বলা হয়েছে আলেমরা ধর্ম ব্যবসা করেন। এখানে ৯০ শতাশং আলেম আছেন যারা মানুষকে কোরআনের কথা বলছেন, হাদিসের কথা বলছেন। মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে বলছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছেন। বাবা মায়ের হক নিয়ে কথা বলছেন। প্রতিবেশির হক নিয়ে কথা বলছেন। আজকে কেনো তাদেরকে মানি লন্ডারিংয়ে জড়িত বলা হচ্ছে। ধর্ম ব্যবসায়ীর তালিকায় আলেমদের নাম দেয়ার মধ্যে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে।


গণকমিশনের ১১৬ জনের তালিকায়

১. মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, 

২. মাওলানা সাজিদুর রহমান, 

৩. মুফতি রেজাউল করিম, 

৪. মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম, 

৫. মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী, 

৬. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (বাশার), 

৭. মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব,

৮. মুফতি দিলওয়ার হোসাইন সাইফী, 

৯. মাওলানা সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন জাফরী, 

১০. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ভূজপুরী, 

১১. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, 

১২. মাওলানা মুহিব খান, 

১৩. মুফতি সাঈদ আহমদ কলরব, 

১৪. মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, 

১৫. মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী, 

১৬. মাওলানা আব্দুর রহিম বিপ্লবী, 

১৭. মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, 

১৮. মাওলানা বজলুর রশিদ, 

১৯. মুফতি নাজিবুল্লাহ আফসারী, 

২০. মাওলানা ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী, 

২১. মুফতি নূর হোসেন নুরানী, 

২২. মুফতি কাজী ইব্রাহিম, 

২৩. মাওলানা গোলাম রাব্বানী, 

২৪. মাওলানা মুজাফফর বিন মহসিন, 

২৫. মাওলানা মোস্তফা মাহবুবুল আলম, 

২৬. মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবি, 

২৭. মাওলানা শায়েখ সিফাত হাসান, 

২৮. মাওলানা মোহাম্মদ রাকিব ইবনে সিরাজ, 

২৯. মাওলানা ফয়সাল আহমদ হেলাল, 

৩০. মাওলানা মতিউর রহমান মাদানী, 

৩১. মাওলানা মুজিবুর রহমান, 

৩২. মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, 

৩৩. মাওলানা হাফিজুর রহমান ছিদ্দীকী, 

৩৪. মাওলানা আজিজুল ইসলাম জালালী, 

৩৫. মাওলানা মেরাজুল হক কাসেমী, 

৩৬. মুফতি মুহসিনুল করিম, 

৩৭. মাওলানা আব্দুল বাসেত খান, 

৩৮. মাওলানা আবদুল খালেক সাহেব শরিয়তপুরী, 

৩৯. মুফতি মাহমুদ উল্লাহ আতিকী, 

৪০. মুফতি উসমান গণি মুছাপুরী, 

৪১. মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, 

৪২. মুফতি শিহাবুদ্দীন, 

৪৩. মুফতি মুসতাঈন বিল্লাহ আল-উসওয়ায়ী,

৪৪. মাওলানা আশরাফ আলী হরষপুরী, 

৪৫. মাওলানা জাকারিয়া, 

৪৬. মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফী, 

৪৭. মুফতি আনোয়ার হোসাইন চিশতী, 

৪৮. মাওলানা আতিকুল্লাহ, 

৪৯. মাওলানা বশির আহমদ, 

৫০. মাওলানা সিরাজুল ইসলাম মিরপুরী, 

৫১. মাওলানা রিজওয়ান রফিকী, 

৫২. মাওলানা আবরারুল হক হাতেমী, 

৫৩. মাওলানা রাফি বিন মুনির, 

৫৪. মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম জাবেরী, 

৫৫. মাওলানা মোতাসিম বিল্লাহ আতিকী, 

৫৬. মুফতি শেখ হামিদুর রহমান সাইফী, 

৫৭. মাওলানা আজহারুল ইসলাম আজমী, 

৫৮. মাওলানা কামাল উদ্দিন দায়েমী, 

৫৯. মাওলানা কামাল উদ্দিন কাসেমী, 

৬০. মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন নুরী, 

৬১. মাওলানা মাজহারুল ইসলাম মাজহারী, 

৬২. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফেরদাউস, 

৬৩. মুফতি এহসানুল হক জিলানী, 

৬৪. মাওলানা মাহবুবুর রহমান জিহাদি, 

৬৫. মুফতি আব্দুল হক, 

৬৬. মুফতি শাহিদুর রহমান মাহমুদাবাদী, 

৬৭. মাওলানা ইসমাঈল বুখারী, 

৬৮. মাওলানা জয়নুল আবেদীন হাবিবী, 

৬৯. মাওলানা ইউসুফ বিন এনাম, 

৭০. মাওলানা শাববীর আহমদ উসমানী, 

৭১. মুফতি জাহিদুল ইসলাম যায়েদ, 

৭২. মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম জামী, 

৭৩. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, 

৭৪. মাওলানা ইসমাইল হোসাইন, 

৭৫. মুফতি আব্দুর রহিম হেলালী, 

৭৬. মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, 

৭৭. মাওলানা মুশাহিদ আহমদ উজিরপুরী, 

৭৮. মাওলানা কাজিম উদ্দীন (অন্ধ হাফেজ), 

৭৯. মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, 

৮০. মুফতি হারুনুর রশিদ, 

৮১. মাওলানা আবুল কাসেম, 

৮২. মুফতি ওয়ালী উল্লাহ, 

৮৩. মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, 

৮৪. মাওলানা জাকারিয়া নাটোর, 

৮৫. মাওলানা আবুল হাসান (সাদী), 

৮৬. মুফতি রুহুল আমিন নুরী, 

৮৭. মুফতি মামুনুর রশিদ কামালী, 

৮৮. মাওলানা আবদুল কালাম আজাদ, 

৮৯. মাওলানা ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজী (নওমুসলিম), 

৯০. মাওলানা শামসুল হক যশোরী (নওমুসলিম), 

৯১. মুফতি হাবিবুর রহমান মিসবাহ, 

৯২. মাওলানা মুফতি ওলিউল্লাহ, 

৯৩. মাওলানা বেলাল হুসাইন ফারুকী, 

৯৪. মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, 

৯৫. মাওলানা আমির হামজা, 

৯৬. মাওলানা মিজানুর রহমান আযহারী, 

৯৭. মাওলানা তারেক মনোয়ার, 

৯৮. মাওলানা আব্দুল হালিম বোখারী,

৯৯. মাওলানা আতাউল্লাহ হাদেমী, 

১০০. মাওলানা আ ফ ম খালিদ হোসেন, 

১০১. মাওলানা মামুনুল হক, 

১০২. মুজিবুর রহমান হামিদী, 

১০৩. মাওলানা মুশতাকুন্নবী, 

১০৪. মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, 

১০৫. মাওলানা কুতুব উদ্দীন নানুপুরী, 

১০৬. মাওলানা বেলাল উদ্দীন, 

১০৭. মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, 

১০৮. মাওলানা রুহুল আমিন যুক্তিবাদী, 

১০৯. মাওলানা আবুল কালাম বয়ানী, 

১১০. মাওলানা রফিকুল্লাহ আফসারী, 

১১১. মাওলানা আব্দুল্লাহ আল-আমিন, 

১১২. মাওলানা মোয়াজ্জেম হোসাইন সাইফী,

 ১১৩. মাওলানা আলাউদ্দীন জিহাদি, 

 ১১৪. মাওলানা আবু বকর মোহাম্মদ জাকারিয়া, 

 ১১৫. জৈনপুরী সিলসিলার মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী

 ১১৬. মাওলানা মাহবুবুর রহমান জৈনপুরী।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]