গোদাগাড়ীতে ছাগল চুরি , রাজশাহী মহানগরীতে ধরা কথিত সাংবাদিক রানা: উদ্ধার হলো পুলিশের হাতিকড়া!


মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: , আপডেট করা হয়েছে : 30-05-2022

গোদাগাড়ীতে ছাগল চুরি , রাজশাহী মহানগরীতে ধরা কথিত সাংবাদিক রানা: উদ্ধার হলো পুলিশের হাতিকড়া!

রাজশাহীর গোদাগাড়ির কোন এক গ্রামে একটি ছাগল চুরি করে কথিত সাংবাদিক এসএম রানা (৪২) ও তার সহযোগী চোর শফিকুল ইসলাম অরফে শফিকুল (২৭)।

এরপর কৌশলে তারা তাদের ব্যবহৃত (১৫০ সিসি) এ্যপাচি মোটরসাইকেলের (১১-১৯০৪) মাঝস্থানে তুলে নেয় ছাগলটি। বাইক ড্রাইভ করছিলো কথিত সাংবাদিক রানা। আর ছাগল জাপটে ধরে বাইকের পেছেনে বসে ছিলো চোর শফিকুল। কিন্তু ওই যে কথায় আছে, চোরের দশ দিন আর পুলিশের একদিন। ছন্দটাও মিলে গেছে। দির্ঘপথ পাড়ি দিয়ে আসলেও ভাগ্য তাদের সাথ দেয়নি। ধরা পড়েছে কাশিয়াডাঙ্গা পুলিশের হাতে।

রোববার (২৯ মে) দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার কোট স্টেশন মোড় থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চুরি করা ছাগল, একটি সরকারি চায়না হাতকড়া ও রানা নামের কথিত সাংবাদিকের পকেটে ভেতর থেকে একটি ক্রাইম ওয়াচ অনলাইন নিউজ পোর্টালের আইডি। 

গ্রেফতার কথিত সাংবাদিক এবং ছাগল চোর এসএম রানা চাপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট থানার রাধানগর গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে। বর্তমানে মহানগরীর  শাহমখদুম থানার দুরুলের মোড়ের একটি বাড়িতে থাকেন। 

তার সহযোগী চোর শফিকুল ইসলাম অরফে শফিকুল নওগাঁ জেলার মান্দা থানার আব্দুল আজিজের ছেলে।

জানতে চাইলে কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, গোদাগাড়ী থেকে ছাগল চুরি করে বাইকে তুলে রাজশাহী মহানগরীতে আসে রানা ও শফিকুল নামের দুই চোর। রাত পৌনে ১১টায় দামি মোটরসাইকেলে ছাগল ! টহল পুলিশের নজরে আসতেই তাদের সন্দেহ্ হয়। এ সময় তারা দ্রুত তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তাদের কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হলে তাদের শরীর তল্লাশী করে পুলিশের ব্যবহৃত একটি চায়না হাতকড়া উদ্ধার করা হয়। এরপর তাদের থানার নিয়ে আসা হয়। তাবে রানা নিজেকে সাংবাদিক দাবি করেছে। তার পকেট থেকে ক্রাইম ওয়াচ নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের আইডি উদ্ধার করা হয়েছে। চুরি করা ছাগলটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা নওগাঁ কোর্ট এলাকা হতে হ্যান্ডকাপ সংগ্রহ করে পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, প্রতারণা, চুরি, ছিনতাই-সহ বিভিন্ন অপরাধ করে আসছিলো। তারা রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার বড়শিপাড়া হতে একটি ছাগল চুরি করে বিক্রির উদ্দেশ্যে রাজশাহী মহানগরীতে এনেছিলো। 

এ ব্যপারে তাদের বিরুদ্ধে সরকারি হাতকড়া রাখার দায়ে ও ছাগল চুরির বিষয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

সোমবার সকালে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।

এদিকে, ছাগল চোর কথিত সাংবাদিক এসএম রানা গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে রোববার (২৯ মে) দিবাগত রাত ২টা দিকে থানার সামনে ভিড় জমায় বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকরা। তারা বলেন, অনিয়মিত পত্রিকা আর অনলাইন নিউজ পোর্টালের আইডি এখন চোর, মাদক কারবারি, হোটেলের বয়, ছিনতাইকারী, চিট, বাটপার ফ্রট, ভুয়া ডিবি, ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রতারকদের হাতে ছড়িয়ে পড়েছে। 

রাজধানী ঢাকায় এক শ্রেণীর টাউট পত্রিকার মালিক রয়েছে যাদের পত্রিকা নিয়মিত ছাপা হয়না। এমনকি রাজশাহীতেও আসেনা। কোন হকাদের কাছেও পাওয়া যায়না তাদের পত্রিকা। কিন্তু তারা ৫- ১০-১৫-২০ হাজার টাকায় কার্ড বিক্রি করে বিভিন্ন টাউটদের কাছে। যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। পদ-পদবী দেয় রাজশাহী বুরে‌্যা চিফ, ক্রাইম রিপোর্টার, স্টাফ রিপোর্টার, জেলা প্রতিনিধি, আবার কেউ মফস্বল সম্পাদক। 

এছাড়াও রাজশাহীতে কিছু অখ্যাত অনলাইন নিউজ পোর্টাল রয়েছে। সেই সব পোর্টালে নিয়মিত নিউজ আপডেট হয়না। তাদের মূল লক্ষ্যই হলো কার্ড বিক্রি করা। তারা মাদক কারবারি থেকে শুরু করে ছিনতাইকারী, টোকাইদের কাছেও কার্ড বিক্রি করে থাকে। এদের দৈরাত্ম থামানো প্রয়োজন বলে মনে করেন সাংবাদিকরা। 

এই সকল কার্ডধারী সাংবাদিকরা দামি দামি মোটরসাইকেল হাকিয়ে জেলা, উপজেলার ইটভাটা, বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নাই এমন সব বেকারী ও পুকুর খননকারীদের কাছে নিউজের ভয় দেখিয়ে (ফাঁপড় দিয়ে) টাকা নেয়।

এরপর মাদক সেবন করতে পাড়ি জমায় নগরীর উপকন্ঠ মিজানের মোড়, শ্যামপুর, চৌমহিনি, টাংগণ, ইউসুফপুর সহ বিভিন্ন মাদক স্পটে। এদের আইডি যাছাই, পত্রিকা আছে কিনা, রাজশাহীর কোথায় তাদের পত্রিকা কিনতে পাওয়া যায় ? এমন সব প্রশ্নে করলেই ধরা পড়বে কার্ডধারীরা। অনলাইনের ক্ষেত্রে সরকারী নিবন্ধণ আছে কিনা। থাকলে আবেদনের রিসিভ কপি দেখতে হবে। সেই সাথে অফিস দেখতে চাইলেই কার্ড বের করার সাহস পাবে না বলে মনে করেন সাংবাদিকরা।  

এ ব্যপারে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের কঠোর দৃষ্টি ভঙ্গি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান সাংবাদিকরা।ক্তিদের কঠোর দৃষ্টি ভঙ্গি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান সাংবাদিকরা।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]