বিক্রমাসিংহেই শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত


আন্তর্জাতিক ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 20-07-2022

বিক্রমাসিংহেই শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত

শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ও ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) নেতা রনিল বিক্রমাসিংহে।

ছয়বারের প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছেন শ্রীলঙ্কার সংসদ সদস্যরা। তবে এর মধ্য দিয়ে সংকট-বিধ্বস্ত দেশটিতে নতুন আরও বিক্ষোভ শুরু হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।

বুধবারের (২০ জুলাই) প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে মোট ২১৯ ভোটের মধ্যে বিক্রমাসিংহে ১৩৪ ভোট পেয়েছেন এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুল্লাস আলাহাপ্পেরুমা পেয়েছেন ৮২ ভোট। আর বামপন্থি নেতা অনুরা দেশনায়েক শুধু নিজের দল থেকে ৩ ভোট পেয়েছেন। খবর আল-জাজিরার।

এদিকে এ জয়ের পর পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে ‘এগিয়ে যাওয়ার পথে যাত্রা’ শুরু করার জন্য ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে। 

ছয়বারের এ প্রধানমন্ত্রী দেশের সংকট মোকাবিলায় অন্যান্য প্রার্থীদের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে দেশের অবস্থা কতটা কঠিন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। এখন আমি সবাইকে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য আলোচনা করতে একত্র হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’ 

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার ভাগ্য অনেকটাই নির্ধারণ হয়ে গেল। 

গুরুত্বপূর্ণ এ পদটিতে কে আসীন হবেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল গত বেশ কিছুদিন ধরেই। উদ্বিগ্ন ছিল সাধারণ মানুষও। তবে তাদের সেই উদ্বেগ সহসাই কমছে না বলেই মনে করা হচ্ছে। 

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে এত দিন এগিয়ে ছিলেন দেশটির প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। তবে তার সরে দাঁড়ানোর ঘোষণায় হাঠাৎ পাল্টে যায় সব সমীকরণ।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। দেশের কল্যাণের স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি। তার সরে যাওয়ার পর বিক্রমাসিংহের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে ‍যায়। এ জয়ের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। 

এর আগে মঙ্গলবার সাজিথ প্রেমাদাসা সরে দাঁড়ালেও পার্লামেন্টে তিনজনকে মনোনীত করা হয়। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ১০ মিনিটের বিশেষ অধিবেশনে মনোনয়ন পর্ব সম্পন্ন হয়। এদের মধ্যে বিক্রমাসিংহে ছাড়াও অন্য দুজন ছিলেন সংসদ সদস্য দুল্লাস এবং বামপন্থি নেতা অনুরা দেশনায়েক। বুধবার গোপন ভোটাভুটিতে এ তিন প্রার্থীর মধ্য থেকে রনিলকেই বেছে নেয় পার্লামেন্ট।

কিন্তু গোতাবায়ার ঘনিষ্ঠ হওয়ায় রনিল বিক্রমাসিংহের ওপর ক্ষুব্ধ শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ। বিক্রমাসিংহের শাসন থেকেও মুক্তি চান তারা। রনিল প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ায় ইতোমধ্যে কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের একদিন আগে অর্থাৎ মঙ্গলবারও বিক্রমাসিংহের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভে নামেন শত শত বিক্ষোভকারী। এ সময় স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে আশপাশ। গোতাবায়ার পদত্যাগের পর আন্দোলনের গতি কিছুটা কমে এলেও, দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠল কলম্বো। 

গণঅভ্যুত্থান থেকে বাঁচতে গত সপ্তাহে বিদেশে পালিয়ে যান শ্রীলঙ্কার সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। এরপর গত বুধবার (১৩ জুলাই) ই-মেইলের মাধ্যমে দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকারের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। 

শুক্রবার (১৫ জুলাই) রাজাপাকসের পদত্যাগপত্র সংসদে গৃহীত হয়। এর প্রায় এক সপ্তাহ আগে সরকারবিরোধী হাজার হাজার বিক্ষোভকারী গোতাবায়ার সরকারি বাসভবন ও অফিস দখল করার পর প্রথমে তিনি মালদ্বীপে এবং পরে সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান। 

রাজশাহীর সময়/এ


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]