সড়কের একেবারেই বেহাল দশা তাই ঘোড়ায় চড়ে স্কুলে যান শিক্ষক


স্টাফ রিপোর্টার: , আপডেট করা হয়েছে : 23-08-2022

সড়কের একেবারেই বেহাল দশা তাই ঘোড়ায় চড়ে স্কুলে যান শিক্ষক

সড়কের একেবারেই বেহাল দশা তাই ঘোড়ায় চড়ে স্কুলে যান শিক্ষক রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শিক্ষক এটিএম লাল মোহাম্মদ।

তার বাড়ি থেকে স্কুল প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। মাঝের ৪ কিলোমিটার সড়ক কাদা মাটিতে একাকার। সাইকেল, মোটর সাইকেল তো দূরের কথা, পায়ে হাঁটার মতোও অবস্থা নেই। তাই সাইকেল-মোটরসাইকেল ফেলে বাহন হিসেবে ঘোড়াকে বেছে নিয়েছেন শিক্ষক এটিএম লাল মোহাম্মদ। 

এটিএম লাল মোহাম্মদ উপজেলার দ্বীপপুর ইউনিয়নের নানছোর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সহকারী শিক্ষক হিসেবে উত্তর জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মরত রয়েছেন। 

লাল মোহাম্মদ জানান, দীর্ঘ দিন ঘুরে-ফিরে আশপাশের এলাকার স্কুলে চাকরি করেছেন। এক সময় বাইসাইকেলে স্কুলে যাতায়াত করতেন। পরে মোটরসাইকেলে যাতায়াত করতেন। সর্বশেষ তিনি বদলি হয়ে আসেন উত্তর জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বাড়ি থেকে পথের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। তবে হুলিখালী থেকে জামালপুর পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার বর্ষায় কাদাপানিতে একাকার অবস্থা। গ্রীষ্মে ধুলাবালুতে যাতায়াতে সমস্যায় পড়তে হয়। মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে হয় ঠেলে। এতে ভোগান্তির শেষ থাকে না। সময়মতো স্কুলে পৌঁছানোও যায় না। তাই বিকল্প বাহনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নওগাঁর মহাদেবপুর থেকে কিনে আনা হয় ঘোড়া। ঘোড়াকে নিজের মতো পোষ মানান। সেই ঘোড়ায় চড়ে ২০ কিলোমিটার (আসা-যাওয়া) পথ পাড়ি দেন লাল মোহাম্মদ। 

এই শিক্ষক জানান, প্রথম দিকে অনেকে হাসাহাসি করলেও এখন আর করেন না। সহকর্মী, শিক্ষার্থী ছাড়াও এলাকার লোকজন বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন। অন্য বাহনের চেয়ে ঘোড়ায় যাতায়াত সবদিক থেকেই নিরাপদ।

তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ে আসার জন্য যেমন নিজে প্রস্তুতি নেন, তেমনি ঘোড়াকেও প্রস্তুত করেন। ঘোড়াকে খাওয়ানোসহ সব পরিচর্যা নিজেই করেন। মাঝে-মধ্যে পরিবারের সদস্যরাও সহযোগিতা করেন।

শিক্ষকের ঘোড়া থাকার বিষয়টি বেশ উপভোগ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কখনো কখনো তারা ঘোড়ায় চড়ার বায়নাও ধরে। শিক্ষক তাদের শখও মেটান। 

লাল মোহাম্মদ একজন ব্যতিক্রম ও দায়িত্বশীল শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করেছেন উত্তর জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বয়েন উদ্দিন প্রামাণিক। তিনি জানান, তিনি ঘোড়া নিয়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যালয়ে আসেন। 

সোনাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাহারুল বলেন, হুলিখালী থেকে জামালপুর পর্যন্ত চার কিলোমিটার রাস্তায় জনদুর্ভোগ বাড়ছে। এই রাস্তাটা কাঁচা। শিগগিরই রাস্তাটি পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী খলিলুর রহমান, খোঁজ-খবর নিয়ে রাস্তাটি পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।  


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]