বেহাল দশা পৌরসভার: দুর্ভোগে জনগন


স্টাফ রিপোর্টার-বাঘা : , আপডেট করা হয়েছে : 21-09-2022

বেহাল দশা পৌরসভার: দুর্ভোগে জনগন

কাগজে কলমে প্রথম শ্রেণির হলেও কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রাজশাহীর বাঘা পৌরবাসী। সড়কবাতি, রাস্তা, ড্রেনসহ অন্যান্য স্থাপনাগুলো হয়ে পড়েছে ব্যবহারের অনুপযোগী।

খানাখন্দে ভরা একেকটি সড়ক। ভেঙে পড়েছে পৌর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থাও। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। আর এই দুর্ভোগের সঙ্গে মরার উপর খাঁরার ঘা হিসেবে যুক্ত  হয়েছে পৌরসদরে নবনির্মিত অপরিকল্পিত ড্রেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজশাহীর  বানেশ্বর থেকে  পাবনার ঈশ্বরদী পর্যন্ত   সড়ক প্রশ্বস্তকর‌নের কাজ চলমান র‌য়ে‌ছে। বর্তমান সড়কটি রয়েছে ১৮ ফুট চওড়া।  ৫৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর নতুন সড়ক হবে ৩৪ ফুট। বাজার এলাকাগুলোতে সড়কের পাশে  নালা নির্মাণ করা হচ্ছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্বাবধা‌নে সড়ক ও ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে।  কিন্তু সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাজশাহী কর্তৃপ‌ক্ষের উদাসীনতার কারণে  লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ড্রেন এখন অ‌কেজো হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছে।  নির্মা‌নের শুরু থে‌কেই ঠিকাদা‌রি  প্রতিষ্ঠা‌নের বিরু‌দ্ধে একা‌ধিক অ‌ভি‌যোগ উ‌ঠে। কিন্তু সেই অ‌ভি‌যোগ  কর্নপাত ক‌রেন‌নি ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ।

তবে স্থানীয়দের বারংবার অভিযোগের প্রেক্ষি‌তে সওজ বিভাগ রাজশাহী রে‌ঞ্জের প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম সরেজমিন পরিদর্শন করে   ড্রেন  নির্মানের সীমানা নির্ধারন করেছেন এবং সিমানা বরাবর  ড্রেন নির্মানের জন‍্য গত ২০ আগষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ( ডন এন্টারপ্রাইজ )   কে নির্দেশনা দিয়েছেন । এছাড়াও বর্তমানে নির্মানাধিন  অপরিকল্পিত ড্রেনের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনাও  দিয়েছেন। 

ফলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে  ড্রেন নির্মানের কাজ এখন বন্ধ  র‌য়ে‌ছে। আর এতেই  চরম দুর্ভোগে পতিত  হয়েছে এলাকাবাসী।

পৌরবা‌সির অ‌ভি‌যোগ, কার নি‌র্দেশে 

ভবিষ্যতের কথা  না ভে‌বে, সীমানা নির্ধারণ না করে   পাকা রাস্তার ধার ঘেঁসেই নির্মাণ হচ্ছে এই ড্রেন। 

ভবিষ্যতে রাস্তা প্রসস্থ করার প্রয়োজন হলে ড্রেনের কারণে তা সম্ভব হবে না। আবার, রাস্তা প্রসস্থ করতে হলে ড্রেন ভাংতে হবে।  এমতাবস্তায়   ড্রেনের ৬০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হ‌য়ে‌ছে। 

এখন প্রশ্ন হ‌লো,  য‌দি সিমানা অনুযায়ী ড্রেন নির্মান করতে হয় তাহ‌লে বর্তমা‌নে নি‌র্মিত  ড্রেন ভে‌ঙ্গে ফেল‌তে হ‌বে । তা‌তে ক‌রে কম বে‌শি প্রায় ২০ লক্ষাধিক  টাকার গচ্চা যা‌বে । প্রশ্ন হ‌চ্ছে, এই গচ্চা কে দে‌বে।  বলা যেতে পারে  সব মিলিয়ে পৌরসদরে ড্রেন নির্মান কাজের অবস্থা এখন হ-য-ব-র-ল ।

এদিকে  ড্রেনের কাজ বন্ধ থাকায় অসমাপ্ত ড্রেনে ময়লা আবর্জনা ও কাদা পানি জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে । এতে করে বাজারের ব‍্যবসায়ি থেকে শুরু করে ক্রেতা পথচারীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন । 

শুধু বাজার এলাকা নয়,অপরিকল্পিত ড্রেনের কারনে পানি নিস্কাসনের ব‍্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে পৌর সদরের  অধিকাংশ রাস্তায় পানি জমে থাকছে। ফলে  চলাচলে ব‍্যাপক ভোগান্তিতে পড়ছে পথচারীরা।

ব‍্যবসায়ীদের বক্তব্য, দ্রুত এর সমাধান করতে হবে। কারন অসমাপ্ত ড্রেন ও খোঁড়াখুড়িতে  তাদের চলাচলে ব‍্যাপক সমস‍্যা হচ্ছে। 

বিদ‍্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, অপরিকল্পিত ড্রেনের কারনে রাস্তা সরু হয়ে গেছে। সড়কটি বাঘা টু ঈশ্বরদী চলাচলের প্রধান সড়ক। এছাড়াও ঐতিহাসিক বাঘা মসজিদ মাজারে প্রবেশেরও প্রধান সড়ক এটি। এখানে ঘুরতে আসা দেশি বিদেশী পর্য়টকরাও পড়ছেন বিপাকে। তাছাড়া বতর্মানে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা চলমান। সংকির্ন সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়াই পরীক্ষার্থীদের সময় মতো উপস্থিত হতে ব‍্যাঘাত ঘটছে।

সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, একটি প্রথম শ্রেনীর পৌরসভায় এমন জনদূর্ভোগ মনে হয় এটা ছাড়া দেশের আর কোন পৌরসভায় নেই। বর্তমান মেয়র পৌরনাগরিকদের উন্নয়নের চিন্তা না করে পৌরসভাকে লুটপাটের স্বর্গরাজ‍্যে পরিনত করেছেন। কোথাও কোন উন্নয়ন নেই। আছে শুধু  উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ।

এ বিষয়ে বাঘা পৌর মেয়র  আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অতীতের যে কোন সময়ের থেকে বর্তমানে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে। পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রয়েছে।   পৌর সদরে নির্মিত  অসমাপ্ত ড্রেনের কারনে নাগরিকদের  ভোগান্তির বিষয়ে ইতমধ্যেই  রাজশাহী সওজ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ জেলা প্রশাসক কে জানানো হয়েছে। দ্রুত ব‍্যবস্থা গ্রহনের জন‍্য কার্য়করি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এ বিষয়ে সওজ রাজশাহী  নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম কে মুঠোফোনে একাধিক বার কল করেও কলটি রিসিভ হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অ‌ফিসার শার‌মিন আখতার বলেন, বিষয়টি  সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে   অবগত করা হয়েছে। আশা করছি খুব শিঘ্রই সমাধান হবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ২৪ জুন   বাঘা পৌরসভার কার্যক্রম শুরু হয়। ১৫.০১ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভা

“খ” শ্রেণীতে উন্নীত হয় ২৭ জানুয়ারি,২০১১ এবং 

‍‍‍‍“ক”শ্রেণীতে উন্নীত হয় ০২ জুলাই ২০১৭ ইং তারিখে।

পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে বসবাস করেন প্রায়  ৬০ হাজার মানুষ। ভোটার সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]