২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১১:৪৬:১০ অপরাহ্ন


ঘুমানোর আগে পড়ুন সুরা কাফিরুন
ইসলামীক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০২-২০২২
ঘুমানোর আগে পড়ুন সুরা কাফিরুন ফাইল ফটো


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এক সাহাবি আরজ করলেন, আমাকে ঘুমের আগে পড়ার জন্য কোনো দোয়া বলে দিন।  তখন তিনি ‘সুরা কাফিরুন’ পড়তে আদেশ দেন; কিন্তু কেন তিনি রাতে ঘুমানোর আগে সুরা কাফিরুন পড়তে বললেন?

হজরত ফারওয়াহ ইবনু নাওফাল রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাওফালকে বললেন- তুমি ‘কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন’ সুরাটি পড়ে ঘুমাবে। কারণ এ সুরাটি হচ্ছে শিরক থেকে মুক্তির ঘোষণা।’ (আবু দাউদ, (তাবারানি))

অর্থ ও উচ্চারণসহ সুরা কাফিরুন

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ 

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ 

কুল ইয়া আইউহাল কাফিরুন

বলুন, হে অবিশ্বাসী সম্প্রদায়, 

لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ

 লা আ’বুদু মাতাবুদুন

আমি ইবাদত করিনা, তোমরা যার ইবাদত কর। 

وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ

ওয়ালা আনতুম আবিদুনা মা আবুদ

এবং তোমরাও ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি।

وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ

ওয়া লা আনা আবিদুনা মা আবাদতুম

এবং আমি ইবাদতকারী নই, যার ইবাদত তোমরা কর। 

وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ

ওয়ালা আনতুম আবিদুনা মাআবুদ

তোমরা ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি।

لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ

লাকুম দীনুকুম ওয়ালীয়া দ্বীন

তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্য এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্য। (মাখরাজসহ বিশুদ্ধ উচ্চারণে সুরাটি শিখে নেওয়া জরুরি )

এছাড়াও নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশিভাগ সময় কাবা শরিফ তাওয়াফের পর দুই রাকাত নামাজ, মাগরিব ও ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত নামাজে সুরা কাফিরুন ও সুরা ইখলাস পড়তেন।

সুরাটির নাজিল প্রসঙ্গে

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাওহিদের বাণী প্রচার করতেন। তাওহিদের বাণী প্রচারে বাধা দেওয়ার জন্য মক্কার কুরাইশরা এমর্মে এক অভিনব কিন্তু (তাবারানি) প্রস্তাব দেন যে-

‘এক বছর তারা এবং সবাই তাদের মূর্তি পূজা করবে এবং আর এক বছর তারা এবং সবাই আল্লাহর ইবাদত করবে। (নাউজুবিল্লাহ)

তাদের এই অনৈতিক ও হাস্যকর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ তাআলা নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে শিরকমুক্ত ঈমানের জন্য এই সুরাটি নাজিল করেন। এ সুরাটি নাজিলের পর মক্কার অনেক মুশরিক ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং তারা আল্লাহর একত্ববাদকে সাদরে গ্রহণ করেছিলেন।

শিরক মুক্ত ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকা এবং মৃত্যুবরণ করার জন্য সুরাটির আমল, বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণেই নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্রাম রাতে ঘুমানোর আগে শিরকমুক্ত বিশ্বাস নিয়ে ঘুমাতে যাওয়ার জন্যই সুরা কাফিরুন পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, ঘুমানোর আগে সুরা কাফিরুন পড়া। শিরকমুক্ত ঈমানের অধিকারী হওয়ার চেষ্টা করা। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার চেষ্টা করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুরা কাফিরুনের যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের আমলে জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।

রাজশাহীর সময় / এফ কে