২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১১:৩৭:৪২ পূর্বাহ্ন


আল্লাহর আরশের ছায়ায় থাকবেন যারা
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-১০-২০২২
আল্লাহর আরশের ছায়ায় থাকবেন যারা ফাইল ফটো


মহান আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের সীমাহীন কঠিন সময়ে সাত শ্রেণির ব্যক্তিকে তাঁর আরশের ছায়ায় স্থান দেবেন। যে দিন তার ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। মুমিন মুসলমানের জন্য এরচেয়ে মহাসুসংবাদ আর কী হতে পারে! নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ সাত শ্রেণির মানুষকে হাশরের ময়দানে আরশের ছায়ায় স্থান দেবেন। তাঁরা কারা? কী তাদের পরিচয়?

কেয়ামতের কঠিন সময়ে মহান আল্লাহর আরশের ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। সূর্য ঠিক মাথার উপরে অবস্থান করবে। মানুষ ঘামের সাগরে হাবুডুবু খেতে থাকবে। সেদিন সাত শ্রেণির মানুষ আল্লাহর আরশের ছায়া পাবেন। তারা হলেন-

> আরশের ছায়ায় আশ্রয়

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন,  আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে দিন আল্লাহর (আরশের) ছায়া ছাড়া কোনো ছায়া থাকবে না, সে দিন আল্লাহ তাআলা সাত প্রকার মানুষকে সে ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। (তাহলো)-

১. ন্যায়পরায়ণ শাসক।

২. যে যুবক আল্লাহর ইবাদতের ভিতর গড়ে উঠেছে।

৩. যার অন্তরের সম্পর্ক সর্বদা মসজিদের সঙ্গে থাকে।

৪. আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে যে দু’ব্যক্তি পরস্পর মহববত রাখে, উভয়ে একত্রিত হয় সেই মহববতের উপর আর পৃথক হয় সেই মহববতের উপর।

৫. এমন ব্যক্তি যাকে সম্ভ্রান্ত সুন্দরী নারী (অবৈধ মিলনের জন্য) আহবান জানিয়েছে। তখন সে বলেছে, আমি আল্লাহকে ভয় করি।

৬. যে ব্যক্তি গোপনে এমনভাবে সাদাকা করে যে, তার ডান হাত যা দান করে বাম হাত তা জানতে পারে না।

৭. যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তাতে আল্লাহর ভয়ে তার চোখ হতে অশ্রু বের হয়ে পড়ে।’ (বুখারি ১৪২৩)

অন্য বর্ণনায় আরও একশ্রেণির কথা এভাবে ওঠে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে লোক অভাবি ঋণগ্রস্তকে সুযোগ প্রদান করে অথবা ঋণ মাফ করে দেয়, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে নিজ আরশের ছায়ায় আশ্রয় প্রদান করবেন, যেদিন তার আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না।’ (তিরমিজি ১৩০৬)

> রহমতের ছায়ায় আশ্রয়

তিনটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারীকে মহান আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার রহমতের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। তারা কারা? হাদিসে এসেছে-

হজরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যার মধ্যে নিম্নোক্ত তিনটি গুণ রয়েছে, আল্লাহ তাআলা তার উপর তার (রহমতের) ডানা প্রসারিত করবেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (তা হচ্ছে)- দুর্বলদের সঙ্গে ভদ্র ব্যবহার, মা-বাবার সঙ্গে মমতা জড়ানো কোমল ব্যবহার এবং দাস-দাসীর প্রতি অনুগ্রহপূর্ণ ও সৌজন্যমূলক আচরণ।’ (তিরমিজি ২৪৯৪)

প্রসিদ্ধ সাত ব্যক্তির আরশের ছায়া পাওয়া সংক্রান্ত হাদিস ছাড়াও কিছু কিছু নেক কাজের বিনিময় রয়েছে আল্লাহর আরশের ছায়াসহ রহমতের ছায়ার ঘোষণা। মূলত এখানে সংখ্যা কোনো উদ্দেশ্য নয় বরং নেককার বান্দারাই পাবেন আল্লাহর রহমতের ছায়া।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নেক কাজের মাধ্যমে আল্লাহর আরশ তথা রহমতের ছায়ায় আশ্রয় পাওয়ার চেষ্টা করা। অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা। আল্লাহর বিধিবিধান মেনে চলা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর আরশের ছায়ায় এবং রহমতের ছায়ায় পাওয়ার তাওফিক দান করুন। নেক আমলে জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।