১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১১:৩৮:২৪ অপরাহ্ন


রূপপুরের স্বচ্ছ বিদ্যুতে বদলে যাবে উত্তরের জনপদ: প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-১০-২০২২
রূপপুরের স্বচ্ছ বিদ্যুতে বদলে যাবে উত্তরের জনপদ: প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ফটো


রূপপুরের স্বচ্ছ বিদ্যুতে বদলে যাবে উত্তরের জনপদ। ২০২৩ সালে প্রথম এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যাবে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। নিরাপত্তায় দেয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব; এ ক্ষেত্রে ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের (আরএনপিপি) দ্বিতীয় ইউনিটের পরমাণু চুল্লি স্থাপনের কার্যক্রম উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়ন হলে উত্তরের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যাবে। পরিবেশের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিতে কাজ করছে বাংলাদেশ।

এ সময় রুশ আণবিক শক্তি সংস্থার (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। রূপপুর প্রকল্পে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন করেন।

এর আগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভ্যাসেল (আরপিভি) স্থাপনের মধ্যদিয়ে আরএনপিপির দ্বিতীয় ইউনিটে বড় ধরনের পারমাণবিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ হবে।

প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আরএনপিপি বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল হলো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূলযন্ত্র। এর ভেতরে ইউরেনিয়াম থেকে শক্তি উৎপাদন হয়, যা কাজে লাগিয়ে তৈরি হয় বিদ্যুৎ।

পারমাণবিক চুল্লিপাত্র স্থাপনের আগে রিঅ্যাক্টর ভবনের বিভিন্ন স্তরের অবকাঠামোসহ সংশ্লিষ্ট পর্যায়গুলো এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ৩৩৩ দশমিক ৬ টন ওজনের ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টর ভেসেল প্রস্তুত করতে দুই বছরের বেশি সময় লেগেছে। এই রিঅ্যাক্টর ভেসেল কৃষ্ণসাগর ও সুয়েজ খাল হয়ে ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের মোংলা বন্দরে আসে। এতে সময় লাগে দুই মাসের বেশি।

রূপপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন। কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় রয়েছে রাশিয়া। প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার।

প্রকল্পের বিবরণ থেকে জানা যায়, রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল পারমাণবিক জ্বালানি সংরক্ষণ করে এবং সেই সঙ্গে তা থেকে তেজস্ক্রিয় দ্রব্য বেরিয়ে যাতে পরিবেশ দূষণ করতে না পারে, তার জন্য প্রতিবন্ধকতার কাজও করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১০ অক্টোবর আরএনপিপির প্রথম ইউনিটে আরপিভির উদ্বোধন করেন।এটির কাজ সম্পন্ন হলে, বাংলাদেশ হবে পারমাণবিক জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অধিকারী বিশ্বের ৩৩তম দেশ। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিটও অনুরূপ বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।

বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশন রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্প কাজ বাস্তবায়নে জনশক্তি প্রশিক্ষণসহ মোট ব্যয় হচ্ছে ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৯৯ শতাংশ অর্থায়ন করছে রাশিয়া। বর্তমানে প্রকল্পে ৩৩ হাজার লোক কাজ করছেন। এদের মধ্যে সাড়ে ৫ হাজার বিদেশি নাগরিক রয়েছেন।