১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ০৭:১১:৫৯ অপরাহ্ন


শীতকেও হাতিয়ার করছে ক্রেমলিন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-১০-২০২২
শীতকেও হাতিয়ার করছে ক্রেমলিন শীতকেও হাতিয়ার করছে ক্রেমলিন


শীতের শুরু। ধীরে ধীরে বরফে ঢেকে যাবে গোটা ইউক্রেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে এ বার ঠান্ডায় যে কত প্রাণহানি ঘটবে,তার কোনও ধারণা নেই। আশঙ্কার প্রহর গুণছেন অনেকেই। এত দিন শীত আসার আগে যুদ্ধে ইতি টানার কথা ভাবছিলেন কূটনীতিকেরা। কিন্তু সেই সম্ভাবনা তো দূর অস্ত। বরং শীতকেই এ বার যুদ্ধের হাতিয়ার করতে চাইছে রাশিয়া।

১০ অক্টোবর থেকে লাগাতার ইউক্রেনের পাওয়ার গ্রিডগুলি লক্ষ্য করে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। প্রতিদিনই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছে। রাত হলেই বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে গোটা দেশ। ইউক্রেনের জাতীয় শক্তি সংস্থা বাসিন্দাদের কাছে অনুরোধ করেছে, যখন বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু থাকবে, তাঁরা যেন বিদ্যুৎ মজুত করে রাখেন। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি চার্জ দিয়ে রাখেন।

পাওয়ার গ্রিড লক্ষ্য করে প্রথম হামলা চলে ১০ অক্টোবর। তার পর থেকে একাধিক হামলা ঘটে গিয়েছে। কিছু দিন আগেই রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হানায় অন্ধকারে ডুবেছিল ইউক্রেন— পূর্ব থেকে পশ্চিম। সে দিনও পাওয়ার গ্রিড লক্ষ্য করে হামলা করা হয়েছিল। কাল হামলার জেরে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। রাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে ঘোষণা করা হয়, সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত যতটা সম্ভব বিদ্যুৎ বাঁচাতে হবে সকলকে। সকাল ৭টার মধ্যেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে চার্জ দিয়ে রাখতে হবে।

ইউক্রেনের চারটি এলাকা রাশিয়ার দখলে— জ়াপোরিজিয়া, ডনেৎস্ক, লুহানস্ক ও খেরসন। এলাকাগুলিতে মার্শাল ল জারি হয়েছে। এলাকার মানুষজনকে জোর করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাশিয়া এ সবের কারণ হিসেবে নানা ব্যাখ্যা দিচ্ছে। মস্কোর দাবি, ইউক্রেনের হামলার হাত থেকে বাসিন্দাদের বাঁচাতে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিভ অবশ্য বারবার করে সতর্ক করছে এই চারটি অঞ্চলের বাসিন্দাদের। তাদের আশঙ্কা, লোকজনকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে যুদ্ধের মানববর্ম হিসেবে ব্যবহার করা হবে। যুদ্ধবন্দি করা হবে।

বিদ্যুৎ না থাকলে ঘর গরম রাখার উপায় নেই। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘এ অবস্থায় যথেষ্ট পানীয় জল মজুত করে রাখা দরকার। সেই সঙ্গে গরম মোজা, কম্বল ও প্রিয়জনেদের কাছাকাছি নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’ মোবাইল ফোন, পাওয়ার ব্যাঙ্ক, টর্চ, ব্যাটারি— সব কিছু চার্জ দিয়ে রাখা দরকার। শক্তি মন্ত্রকের উপদেষ্টা অলেকসান্দার খারচেঙ্কো জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই দেশের ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন, গত কালের হামলায় তিনটি বিদ্যুৎ গ্রিড খারাপ হয়ে গিয়েছে। শক্তি সংস্থাগুলি সব রকম খারাপ পরিস্থিতির জন্য তৈরি হচ্ছে। সেন্ট্রাল ইউক্রেনের ক্রিভি রি এবং পশ্চিমের বুর্শটিনে বিদ্যুৎ গ্রিডগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজধানী কিভের অবস্থাও খারাপ। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ বাঁচানো ছাড়া আর কোনও পথ দেখছে না ইউক্রেন সরকার।