২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৬:০৯:৩৬ অপরাহ্ন


শীতকাল মুমিনের ইবাদতের জন্য চমৎকার মৌসুম
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-১১-২০২২
শীতকাল মুমিনের ইবাদতের জন্য চমৎকার মৌসুম ফাইল ফটো


একজন মুমিনের জন্য শীতকাল ইবাদত করার চমৎকার মৌসুম। কারণ শীতকালে রাত লম্বা হয়। এতে সে (সহজেই) তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে পারে। আবার দিন ছোট হয়। ফলে সে (সহজেই) রোজা রাখতে পারে। এ জন্যই আগের যুগের মুমিন বান্দাদের মধ্যে যাঁরা ইবাদত-বন্দেগিতে কঠোর পরিশ্রম করতেন তাঁরা যদি কোনো কারণে এ সময়গুলোতে তাহাজ্জুদ না পড়তে পারতেন এবং রোজা রাখতে না পারতেন তাহলে এর জন্য তারা কাঁদতেন। হজরত হাসান বসরি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এই অভিব্যক্তি।

অধিকাংশ মানুষেরই প্রিয় ঋতু শীত। আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের কাছে এ মৌসুম আরও প্রিয়। কেননা অন্যান্য মৌসুমের চেয়ে এ মৌসুমে ইবাদত বেশি করা যায় এবং সহজভাবে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।

শীতের ভোরে শিরশিরে বাতাসে দেহ-মন শিউরে উঠে। খুব সকালে মৃদু কুয়াশায় ঢেকে যায় সারা মাঠ। সোনালী রোদে ঘাসের ডগায় শিশিরের ঝিকিমিকি পরিলক্ষিত হয়। তার মানে এসে গেছে শীত, এটি মুমিনের ইবাদত করার বসন্তকাল। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

الشتاء ربيع المؤمن

‘শীতকাল হচ্ছে মুমিনের বসন্তকাল।’ (মুসনাদে আহমাদ ১১৬৫৬)

বায়হাকির এক বর্ণনায় এসেছে, ‘শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাতের সময় নফল নামাজ আদায় করতে পারে এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারে।’ (বায়হাকি ৩৯৪০)

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন-

الشتاء غنيمة العابدين

‘শীতকাল ইবাদতকারীদের জন্য গণীমত (ইবাদত করার চমৎকার মৌসুম)।’ (আবু নুআইম)

শীতকাল মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত। মানুষের জন্য বরকত নিয়ে আসে এ ঋতু। শীতের দিন ও রাতে মুমিন মুসলমান ইবাদত-বন্দেগির সুযোগ পায়। এ প্রসঙ্গে এসেছে-

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়ল্লাহু আনহু বলেন-

مرحباً بالشتاء تتنزل فيه البركة، ويطول فيه الليل للقيام، ويقصر فيه النهار للصيام

শীতকালকে স্বাগতম । এ সময় (আল্লাহর পক্ষ থেকে) বরকত নাজিল হয়। রাত হয় লম্বা। তাই তাহাজ্জুদ পড়া সহজ। দিন হয় ছোট। তাই রোজা রাখা সহজ। (লাতা ইফুল মাআরিফ, আল্লামা ইবনে রজব)

শীতকাল ইবাদতের গণীমত। এ কারণে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু লোকদের বলতেন-

ألا أدلكم على الغنيمة الباردة ، قالوا : بلى، فيقول : الصيام في الشتاء

‘আমি কি তোমাদের শীতকালীন গণীমতের সন্ধান দেব না? তারা বলতো, অবশ্যই! এরপর হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, শীতের মৌসুমে রোজা। (তিরমিজি)

বিখ্যাত তাবেয়ি হজরত হাসান বসরি রাহমাতুল্লাহু আলাইহি বলেছেন-

نعم زمان المؤمن الشتاء، ليله طويل يقومه، ونهاره قصير يصومه ، ولذا بكى المجتهدون على التفريط – إن فرطوا – في ليالي الشتاء بعدم القيام، وفي نهاره بعدم الصيام .

‘একজন মুমিনের জন্য শীতকাল ইবাদত করার চমৎকার মৌসুম। শীতকালে রাত লম্বা হয়। এতে সে (সহজেই) তাহাজ্জুদ পড়তে পারে। দিন ছোট হয়। ফলে (সহজেই) রোজা রাখতে পারে। এজন্যই (আগের লোকদের মধ্যে) যাঁরা ইবাদত-বন্দেগিতে কঠোর পরিশ্রম করতেন তাঁরা যদি (কোনো কারণে) এ সময়ের রাতগুলোতে তাহাজ্জুদ না পড়তে পারতেন এবং দিনের বেলা রোজা না রাখতে পারতেন তাহলে এর জন্য তাঁরা কাঁদতেন।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এই ঋতুতে বেশি বেশি ইবাদত করে চিরস্থায়ী জীবনের জন্য সম্বল করে রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।