২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৮:২৫:৪৬ অপরাহ্ন


থাপ্পড় মেরে ছাত্রীর কানের পর্দা ফাটানো সেই শিক্ষিকা বরখাস্ত
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-১১-২০২২
থাপ্পড় মেরে ছাত্রীর কানের পর্দা ফাটানো সেই শিক্ষিকা বরখাস্ত থাপ্পড় মেরে ছাত্রীর কানের পর্দা ফাটানো সেই শিক্ষিকা বরখাস্ত


যশোরের চৌগাছায় থাপ্পড় মেরে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীর কান ফাটানোর অভিযোগে সেই সহকারী শিক্ষিকা নারগিস পারভীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

একই সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেনকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে আগের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।  

বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বাক্ষরিত এক আদেশে ওই দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।  

জানা যায়,  রোববার (৬ নভেম্বর) দুপুরে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুর রহমান ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। তিনি যখন অফিসে বসে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন সহকারী শিক্ষক নারগিস পারভীন ওই শিক্ষার্থীকে একটি ঝাড়ু এনে দিতে এবং আরেক শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের সিঁড়ি ঘর ঝাড়ু দিতে বলেন। তবে পান্না ঝাড়ু নিয়ে এসে সেখানে রাখলেও অন্য শিক্ষার্থী ঝাড়ু দেয়নি। ঝাড়ু না দেওয়ায় পান্নাকে ডেকে শিক্ষক নার্গিস বলেন, ঝাড়ু দিসনি ঝাটা দিয়ে তোর মুখ ভেঙে দেব। তখন পান্না বলে, আপনি কী আমার মুখ বানিয়ে দিয়েছেন? ঝাড়ু দিয়ে ভেঙে দেবেন? তখন শিক্ষক নার্গিস মেয়েটি বাম কানে তিনটি থাপ্পড় মারেন। এ সময় মেয়েটি কান্নাকাটি করলে নার্গিস পারভীন তাকে আরও কয়েকটি থাপ্পড় মেরে বলেন, লাগেনি। অভিনয় করছে। পরে মেয়েটি বাড়ি গিয়ে না বললেও সোমবার সন্ধার দিকে মেয়ের গায়ে জ্বর এবং কানে যন্ত্রণার কথা শুনে তার মা বিষয়টি জানতে চাইলে মেয়েটি সব খুলে বলে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) ওই শিক্ষার্থীকে তার মা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করাতে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করতে গেলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তোলপাড় হয়। ওইদিন (মঙ্গলবার) উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হন। এ সময় ৫ম ও ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এবং তাদের অভিভাবকরা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেন ও নারগিস পারভীন প্রতিনিয়তই শিক্ষার্থীদের কারণে-অকারণে মারধর করেন এবং প্রধান শিক্ষকসহ ওই দুই সহকারী শিক্ষক অশ্লীল ভাষায় শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ করেন।  

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেন প্রতিনিয়তই তাদের মারধর করেন এবং পানি মুখে নিয়ে ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর মেয়ে শিক্ষার্থীদের গায়ে কুলি করেন। এসব বিষয়ে তারা প্রধান শিক্ষককে বলেও প্রতিকার পায়নি। উল্টো তিনিও তাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজ সকালে (বুধবার) তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

বুধবার সন্ধ্যায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুস সালাম বলেন, শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। এ ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক নারগিস পারভীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে আগের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেনকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন।