১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১১:২০:২১ পূর্বাহ্ন


‘কালো ধানের হাসির ঝিলিক’
আল আমিন মন্ডল (বিপ্লব), বগুড়া প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-১১-২০২২
‘কালো ধানের হাসির ঝিলিক’ ‘কালো ধানের হাসির ঝিলিক’


বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় প্রথমবারের মতো ‘ব্ল্যাক রাইস’ ধান চাষে কৃষকের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে। এটি ‘কালো ধান’ নামে পরিচিত। ফলে এবছরে ব্ল্যাক রাইস ভাল ফলন হওয়ায় কৃষককের মুখে ফুটেছে কালো ধানের হাসির ঝিলিক। কালো ধান চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মহিষাবানের ধোড়া-মহিষাবান গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে কৃষক আশরাফুল আলম। অনেকেই তার ধান খেত দেখতে ভীড় করছেন। বাজারে দাম ও চাহিদা বেশী হওয়ায় আগামীদিনে কালো ধান চাষ করতে কৃষকেরা ইতিমধ্যে তথ্য বা পরামর্শ নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। নতুন ধানের এজাত সবার নজর কেড়েছে। 

রোগবালাই কম ও উচ্চ ফলনশীল হলেও নিচু জামিতে কালো ধান চাষ করা সম্ভব। এমনকি কৃষক দাম ও ফলন দুটাই ভাল পেবেন। ফলে এবছরে ব্ল্যাক রাইস ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। 

সূত্র  জানায়, অন্যধানের মতো এধানের লম্বা গাছ সবুজ হলেও ধানের শীষ ‘কালো’। গাছের ডগায় দুলছে কালো ধানের শীষ। কৃষকরা ব্ল্যাক রাইস দেখে মুগ্ধহন ও উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদের মনে এখন নানা কৌতুহল। কৃষক আশরাফুল আলম জানান, ২৫শতক জমিতে ভিয়েতনাম থেকে বীজ সংগ্রহ করে ব্ল্যাক রাইস চাষ করেছি। আগামীদিনে আরো ২বিঘা জমিতে এধান চাষ করবো। আমি সবসময় নতুন জাতের ফলন চাষ করি। এধান চাষে সার-কীটনাশক কম লাগে। ফলন অন্য ধানের চেয়ে ভাল। এমনকি আমার নিকট থেকে স্থানীয় কৃষকেরা ধান বীজ নিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। 

এছাড়াও গাবতলী পৌরসভা সন্ধাবাড়ী গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলামও কালো ধানের চাষ করেছে। এভাবেই গাবতলীতে ব্ল্যাক রাইস চাষ বাড়বে এমনটাই আশা করছেন কৃষি বিভাগ। এ চাল পুষ্ঠিগুন সমৃদ্ধ খাদ্য ও অনেক ঔষধী গুনাগুনের জন্য ব্ল্যাক রাইস কে ‘ওয়ার্ল্ড সুপার ফুড’ বলা হয়। ধনীদেশ গুলো এধানের চাষ করে। এধান একটু মোটা ও গোন্ডেন ব্ল্যাক রাইস চিকন হয়। এছাড়াও কালো ধানে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি এক্সিডেন্ট থাকায় ধানের চাল ডায়াবেটিস ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। 

গাবতলী উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুম কবির জানান, গাবতলীতে কয়েকজন কৃষক ব্ল্যাক রাইস বীজ সংগ্রহ করে নতুন এ কালো ধান চাষ করেছেন। কৃষক চাইলে এধান চাষে কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিতে পারেন। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান জানান, মহিষাবানের আশরাফুল ব্ল্যাক রাইস চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বানিজ্যিক ভাবে ব্ল্যাক রাইস চাষ করলে অবশ্যই কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ দেওয়া হবে।এমনকি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ আশরাফুলের ধান খেত নিবিড় পর্যবেক্ষনে রেখেছে। 

উপজেলা সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী হায়দার জানান, কালো ধান চাষে সার-কীটনাশক ও পরিচর্যা কম লাগে। কালো ধান নতুন জাত হওয়ায় কৃষকের মাঝে সাড়া ফেলেছেন। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল বাছেদ জানান, গাবতলীতে রোপা আমন ধান ও শীতকালিন সবজি চাষের পাশাপাশি ব্ল্যাক রাইস চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রতিবিঘায় ১২থেকে ১৫মন ধান উৎপাদন হতে পারে।