সেরে ওঠো নেমার, তোমাকে ব্রাজিলের দরকার। সিংহহৃদয় নিয়ে মাঠে নেমে পড়ো। পুরো দল খেলবে, আর তুমি মাঠের বাইরে থাকবে, তা কি হয়! ব্রাজিলের নামী সংবাদমাধ্যম ও গ্লোবো পত্রিকায় লেখা খোলা চিঠিতে রোমারিও লিখেছেন নেমারের উদ্দেশে।
প্রিয় নেমার ,
ভাই সব ভাল তো? সত্যি বলতে আমরা ভাল নেই। আমি ও ব্রাজিলের মানুষরা। তুমি মাঠের বাইরে থাকবে, আর আমরা আনন্দে থাকব, তা হতে পারে! নেমার তোমার চোটটা আমাদের চিন্তায় রেখেছে। তুমি কেন ফোলা গোড়ালির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিলে? আমি জানতে পারি কি! হয়তো তুমি তোমার সততা থেকে দিয়েছ, কিন্তু এতে করে ব্রাজিলের মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছে।
দলের সেরা তারকা চোটের ছবি প্রকাশ্যে দিয়েছে, এতে করে হিতে বিপরীত হতে পারে। পুরো দল ভেঙে পড়তে পারে, কোচ চিন্তায় মাথার চুল ছিঁড়তে পারে। ব্রাজিল অবশ্য একার ওপর নির্ভর করে না। তাঁরা ব্যক্তি পুজোয় বিশ্বাসী, কিন্তু দলের ওপর কেউ নয়। আগে দল, তারপর বাকি সবকিছু।
নেমার ২০১৪ সালে তোমার চোটের সময় বুকটা ছনাৎ করে উঠেছিল। জুনিগা তোমার স্বপ্নকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। ২০১৮ সালেও চোট তোমার পিছু ছাড়েনি, এবার কাতারেও একই বিষয়। মেগা মঞ্চে তোমার পুরো সার্ভিস পাচ্ছে না ব্রাজিল, বহুদিন থেকে। তুমিও নিশ্চয়ই এই বিষয়টি নিয়ে ভাবো।
আমার নামে একটা সময় ব্রাজিল দলে অপবাদ ছিল, আমি নাকি শৃঙ্খলাহীন এক ফুটবলার। নাইট ক্লাব, আমোদের তরী পেরিয়ে মাঠে খেলতে নামি। ১৯৯৩ সালে তো আমাকে দল থেকে বাদও দেওয়া হয়েছিল। তারপর অবশ্য ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে আমাকে দলে নেওয়া হয়। তারপর আমি আর বেবেতো যা খেলে দিয়েছি, সবটাই ইতিহাস হয়ে গিয়েছে।
তোমার নামেও ব্যাডবয় ইমেজ রয়েছে। তুমি ১৯ বছরে পুত্রের বাবা হয়েছ। ব্রাজিলে তোমার সমালোচকের সংখ্যা আকাশের তারার চেয়েও বেশি। তাও তুমি এগিয়েছ দক্ষতার ওপর ভর করেই। আমার তো মনে হয় কাতারেও তোমার গা ঝাড়া দিয়ে ওঠা উচিত। কতদিন সমালোচনায় ক্ষতবিক্ষত হবে। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে আমাদের মুখে হাসি ফোটাও। বিশ্বকাপ তো চারবছর অন্তর আসে। চারবছর পরে তোমার বয়সও বাড়বে, কিন্তু সময়টা অনেকটা এগিয়ে যাবে। তাই এবারই কিছু একট করো। পুরো দেশ তোমার সাফল্য দেখার আশায় বুঁদ হয়ে রয়েছে।