২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০২:৪৬:১৭ অপরাহ্ন


নারী আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর অভিযোগে ফাঁসি হতে পারে ইরানি ফুটবলার আমির আজদানির
আব্দুল্লাহ্ সাদাত:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-১২-২০২২
নারী আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর অভিযোগে  ফাঁসি হতে পারে ইরানি ফুটবলার আমির আজদানির নারী আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর অভিযোগে ফাঁসি হতে পারে ইরানি ফুটবলার আমির আজদানির


সরকার বিরোধী আন্দোলনে জ্বলছে ইরান। সেই আন্দোলনে সরব হওয়ার ‘অপরাধে এবার এক তরুণ ফুটবলারকে ফাঁসির সাজা দিতে চলেছে সেই দেশের সরকার।

ইরানের সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, দেশের জাতীয় যুব দলের প্রাক্তন ফুটবলার আমির নাসর-আজাদানিকে সরকারের বিরুদ্ধে ‘মুখ’ খোলার অপরাধের গ্রেফতার করা হয়েছিল। এবার তাঁকে ফাঁসি দেওয়ার ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে ইরান সরকার।

চলতি মাসেই সরকার বিরোধী আন্দোলনের জেরে দু’জনকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২২ সেপ্টেম্বর হিজাব না পরার অভিযোগে মাহশা আমিনিকে নামে এক মহিলাকে আটক করেছিল ইরানের পুলিশ। তাঁকে গাড়ি করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। ঘণ্টা দুই পরে তাঁর পরিবারকে জানানো হয়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন মাহশা। তাঁর মৃত্যুর খবর চাউর হতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে দেশের জনগণের একটা বড় অংশ।

দিনে দিনে বাড়ছে এই আন্দোলন। চলতি বিশ্বকাপে কাতারের মাটিতেও আছড়ে পড়েছিল এই বিক্ষোভের আঁচ। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ইরানি ফুটবলাররা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলাননি। যদিও পরের ম্যাচে তেহরান সরকারের চাপে প্রতিবাদ থেকে সরে আসতে হয়েছিল ফুটবলারদের। কিন্তু সমর্থকরা লাগাতার সেই প্রতিবাদ চালিয়ে গিয়েছিলেন। ইরানে সরকার বিরোধী আন্দোলন যেন দিনে দিনে আরো ভয়ানক আকার নিচ্ছে।

এবার আসা যাক, আমির নাসর-আজাদানির কথায়। কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল? জানা গেছে, আমির নাসর-আজাদানিকে ‘মোহারাবেহ’ করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল। ‘মোহারাবেহ’ হয় ফার্সি শব্দ। যার তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘ইশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা’। যাই হোক, সরকার বিরোধী আন্দোলনের স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে ইরানের সেনাবাহিনীর কর্নেল এস্মায়েল চেরাঘি ও আরও দু’জনের মৃত্যু হয়। পরে এই মৃত্যুর জন্য দোষী সাব্যস্ত করে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আমির। 

জেলবন্দি আমির ও আরও কয়েকজনকে এই ঘটনার জন্য সরকার পরিচালিত এক টিভি চ্যানেলে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু তাতেও শাস্তি কমেনি আমিরের। এবার তাঁদের ফাঁসির কথা ভাবছে তেহরান সরকার।

আমিরের এই ফাঁসির খবরের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরানের আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলোয়াড়দের ইউনিয়ন ফিফপ্রো। তারা একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, পেশাদার ফুটবলার আমির নাসর-আজাদানি তাঁর দেশে নারী অধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করায় ইরানের মৃত্যুদণ্ডের সম্মুখীন হয়েছে। এতে আমরা হতবাক। আমরা আমিরের পাশে রয়েছি। এবং এই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।