২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১১:২২:২৬ অপরাহ্ন


রাজশাহীতে সবজির বাজারে স্বস্তি, তেল-চিনিতে বাড়তি দাম
ইব্রাহীম হোসেন সম্রাট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-১২-২০২২
রাজশাহীতে সবজির বাজারে স্বস্তি, তেল-চিনিতে বাড়তি দাম রাজশাহীতে সবজির বাজারে স্বস্তি, তেল-চিনিতে বাড়তি দাম


নিত্যপণ্যে বেড়াজালে দিন দিন দুর্বিষহ হয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের জীবন। যতই শীত এগিয়ে আসছে সবজি ও শাকের বাজারে সস্তি ফিরে আসছে। তবে মাছ, পেঁয়াজ, রসুনের দাম কিছুটা কমলেও মাংস, চাল, চিনি ও ডালে দিশেহারা নিম্ন আয়ের মানুষেরা। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজশাহীর সাহেব বাজার ও কোর্টস্টেশন বাজারে ক্রেতাদের বাড়তি টাকায় কিনতে হচ্ছে চাল ও চিনি।

দাম বাড়তি সব কিছুর, চলা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। মাছ-মাংস খাওয়া এখন বিলাসিতা বললেন, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুস সোহবান। তিনি বলেন, শীতের সবজিতে বাজার ভরে উঠলেও মন বেজার করেই ঘরে ফিরতে হচ্ছে। বাজারে সব পণ্যের দাম চড়া কমের লক্ষণ নেই, চাল, আটা, চিনি ও তেলেরও।

বাজারে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম কমলেও আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু-খাসির মাংস ও সোনালি মুরগি। পর্যাপ্ত সবজি সরবরাহ থাকার পরেও চড়া দামে ক্রেতাদের অসন্তোষ থাকলেও বরাবরের মত পাইকারি দাম ও পরিবহন ব্যয়কে দুষছেন খুচরা বিক্রেতারা।

সবজি বিক্রেতা হুমায়ন বলেন, দাম অনেক বেশি। মুলা- পেঁপে ছাড়া সবকিছু ৬০-১০০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। মাছ মাংসেরও দাম বেশি। ভরা মওসুমেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। কেজি প্রতি বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, পাইজাম ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা এবং সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৭৮ টাকায়।

বিশ্ববাজারে মসলার দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দেশের বাজারেও বেড়েছে মসলার দাম। ৫০ টাকা বেড়ে জিরা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। এছাড়া, এলাচ দারুচিনি ও লবঙ্গের দাম মান ভেদে বেড়েছে ৫০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত। সরবরাহ বাড়ায় কমেছে, ডিম, মুরগি ও সবজির দাম। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ সরকারের পক্ষথেকে কোনও পণ্যের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা এলে সঙ্গে সঙ্গেই তা কার্যকর হয়। কিন্তু দাম কমলে দেখা যায় উল্টোটা। দাম কমলে পণ্য সরবরাহে গড়িমসি শুরু করে কোম্পানিগুলো। খুচরা বিক্রেতারা কমদামে কোনও পণ্য ক্রেতার হাতে দিতেই চান না।

গত রোববার থেকে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাঁচ টাকা কমে ১৮৭ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু ক্রেতাদের এখনও গুনতে হচ্ছে আগের নির্ধারিত ১৯২ টাকা। কোম্পানিগুলো এখনও নতুন দরে তেল বাজারে ছাড়েনি। আবার এক মাস আগে চিনির দাম ১০৮ টাকা (প্যাকেট) নির্ধারণ করার পরও ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি। শুধু বোতলজাত সয়াবিন তেল নয়, খোলা পাম তেলও নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার পাম তেল ১১৭ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও বাজারে ১২০ থেকে ১২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কমেনি মসুর ডাল, আটা ও ময়দার দাম। খুচরায় প্রতি কেজি মসুর ডাল এখনও বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। প্রতি কেজি আটা ৭০ টাকা ও ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়।

শীতে সবজি সরবরাহ বাড়লেও মাঝারি আকারের প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। পাকা টক টমেটো ৮০-১০০ টাকা, প্রতি কেজি সিম ৩০-৪০ টাকা, লম্বা বেগুনের কেজি ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, লম্বা বেগুন বা তাল বেগুনের কেজি ৬০ টাকা, নতুন আলুর কেজি ২৫-৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি লাউ ৫০ টাকা, করলার কেজি ১০০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ২০-৩০ টাকা, দেশি গাজর ৫০ থেকে ৬০ টাকায় আর শসা ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চিচিঙ্গা ও ধুন্দুলের কেজি ৬০ টাকা, শালগমের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে মাছের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে চাষের কই, তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছ। এছাড়া রুই, কাতলা কার্পজাতীয় চাষের মাছ ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে দেশি জাতের মাছের দাম খুব একটা হেরফের হয়নি।

এ ছাড়া মাংস ও অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মোসা. আরিফা খাতুন বলেন, ছুটির দিনে সকাল সকাল বাজার করি। শীত আসায় টাটকা কিছু সবজি কেনার জন্য এসেছি। কিন্ত মধ্যবিত্তের জন্য দিন পার করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আর নিম্নবিত্বদের দূর্বিসহ দিন কাটাতে হচ্ছে।