২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ০২:৩৯:৩৪ পূর্বাহ্ন


বিপদে খোদ ডাকাত! তিন দিন ধরে যৌন নির্যাতন করেন স্যালোঁর মালকিন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০১-২০২৩
বিপদে খোদ ডাকাত! তিন দিন ধরে যৌন নির্যাতন করেন স্যালোঁর মালকিন ফাইল ফটো


ডাকাতি করতে এসে বিপদে পড়লেন ডাকাত নিজেই। ভেবেছিলেন, ভয় দেখিয়ে টাকাপয়সা লুট করে পালিয়ে যাবেন, কিন্তু তাঁর সঙ্গে যা ঘটল তা তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি।

রাশিয়ার ঘটনা। ২০০৯ সালে রাশিয়ায় মেশচোভিস্ক এলাকার একটি স্যালোঁতে ডাকাতি করতে গিয়েছিলেন ৩২ বছর বয়সি ভিক্টর জাসিনস্কি।

স্যালোঁতে তখন কর্মচারী থেকে শুরু করে স্যালোঁর মালকিন পর্যন্ত সবাই উপস্থিত ছিলেন। ভিক্টর ভেবেছিলেন, ভয় দেখিয়ে স্যালোঁর মালকিনের কাছ থেকে টাকাপয়সা নিয়ে পালিয়ে যাবেন। কিন্তু তিনি জানতেন না, ওই মহিলা ক্যারাটে জানেন। এমনকি, তাঁর ‘ব্ল্যাক বেল্ট’ও রয়েছে।

২৮ বছর বয়সি ওলগা জাজাক ছিলেন ওই স্যালোঁর মালকিন। ভিক্টর স্যালোঁতে ডাকাতি করতে ঢুকলে রুখে দাঁড়ান ওলগা। ভিক্টরের যৌনাঙ্গে সজোরে মারেন তিনি। মারের চোটে ভিক্টর প্রায় অচেতন হয়ে পড়েন। তার পর চুল শোকানোর যন্ত্রের (হেয়ার ড্রায়ার) তার দিয়ে ভিক্টরের হাত বেঁধে দেন ওলগা।

স্যালোঁতে উপস্থিত কর্মচারীরা ভাবেন যে তাঁদের নিরাপত্তার জন্য ভিক্টরের এমন অবস্থা করেন ওলগা। ওলগাও তাঁর স্যালোঁর কর্মচারীদের আশ্বাস দেন যে তিনি পুলিশে খবর দিয়েছেন। খুব তাড়াতাড়ি পুলিশ ভিক্টরকে গ্রেফতার করতে স্যালোঁতে আসছে। কর্মচারীরা যেন তাঁদের হাতের কাজ শেষ করে বাড়ি চলে যান, এমনটাই নির্দেশ দেন ওলগা। কিন্তু তার পরেই ঘটনার চিত্র বদলে যায়।

সবাই চলে গেলে স্যালোঁর পিছনে একটি ঘরে ভিক্টরকে নিয়ে যান ওলগা। সেখানে তাঁকে নগ্ন করেন ওলগা। তার পর ঘরে একটি চেয়ারে বসিয়ে ভিক্টরের হাত পিছনের দিকে শক্ত করে বেঁধে দেন।

ভিক্টর প্রথমে ভেবেছিলেন যে ওলগা তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যা যা ঘটতে শুরু করল, তাতে ভয় পেয়ে যান ভিক্টর। ওই স্যালোঁ থেকে আদৌ বেঁচে ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়েও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। ওলগাকে তিনি দেখতে পেলেন অন্য রূপে।

ভায়াগ্রা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ওলগা। ভিক্টরের অনুমতি ছাড়া জোর করে তাঁর মুখের ভিতর পুরে দেন ভায়াগ্রা। তার কিছু ক্ষণ পরেই ভিক্টরের সঙ্গে শরীরের খেলায় মেতে ওঠেন ওলগা।

টানা তিন দিন এ ভাবেই ভিক্টরের উপর নানা ভাবে যৌন নির্যাতন চালাতে থাকেন ওলগা। তিন দিন ধরে নগ্ন অবস্থায় চেয়ারের সঙ্গে ভিক্টরকে বেঁধে রেখেছিলেন তিনি।

এমনকি ভিক্টরকে কিছু খেতেও দেননি ওলগা। শুধু মুঠো মুঠো ভায়াগ্রা খাইয়েছেন তাঁকে। তিন দিন ভিক্টরের শরীরকে নিজের প্রয়োজন মতো ব্যবহার করে তাঁকে ছেড়ে দেন ওলগা।

ছাড়া পেয়ে ভিক্টর প্রথমে হাসপাতালে যান। ওলগার অত্যাচারে তাঁর যৌনাঙ্গ আহত হয়েছিল। সুস্থ হয়ে ভিক্টর থানায় গিয়ে ওলগার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেন।

ভিক্টরের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওলগাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু ওলগার জবাব শুনে স্তম্ভিত হয়ে যায় পুলিশও। ওলগা দাবি করেন, ভিক্টর যা করেছেন তার জন্য তাঁকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

এমনকি ভিক্টরকে গালিগালাজও করতে শুরু করেন ওলগা। ওলগা পুলিশকে বলেন, ‘‘আমি মাত্র দু-তিন বার ওর সঙ্গে শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলাম।’’ তাঁর আরও দাবি, ভিক্টর অনেক ঘটনাই পুলিশের কাছে উল্লেখ করেননি।

ভিক্টরের অভিযোগ, তিন দিন ধরে ভায়াগ্রা ছাড়া আর কিছু খেতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। কিন্তু ওলগা জানিয়েছেন যে, ভিক্টরকে ভাল মতোই খেতে দিয়েছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, জিন্‌সের নতুন প্যান্টও ভিক্টরকে কিনে দিয়েছেন বলে জানান ওলগা।

ওলগার দাবি, ভিক্টর যখন তাঁর স্যালোঁ থেকে বার হচ্ছিলেন তখন ভিক্টরকে কিছু টাকাও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ভিক্টর পুলিশের কাছে সব অস্বীকার করেন। পুলিশ অবশ্য দু’জনকেই গ্রেফতার করে।

২০০৯ সালে এই ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমে আসায় অনেকের মধ্যে স্যালোঁর ঠিকানা জানার কৌতূহল তৈরি হয়। কেউ কেউ আবার ওই স্যালোঁতে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। ডাকাতি করার শাস্তি যদি এমন হয় তবে তাঁরাও এমন শাস্তি পেতে চান বলে জানান। তবে পুলিশ এই ঘটনার কোনও রেকর্ডই কারও সঙ্গে ভাগ করেনি।