১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ০২:০৩:২৮ অপরাহ্ন


তাহিরপুরের দুই সীমান্তে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ১২১ মেঃটন কয়লা পাচাঁর: দেখার কেউ নাই
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০১-২০২৩
তাহিরপুরের দুই সীমান্তে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ১২১ মেঃটন কয়লা পাচাঁর: দেখার কেউ নাই ফাইল ফটো


সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার দুই সীমান্তে বিভিন্ন মামলার জামিনে থাকা আসামীরা সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে ভারত থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে প্রায় ২৫লাখ টাকা মূল্যের ১২১মেঃটন কয়লা পাচাঁর করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

সোমবার (৯ জানুয়ারী) ভোর ৫টায় পাচাঁরকৃত অবৈধ কয়লা জেলার তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন নীলাদ্রী লেকের তীরে অবস্থিত অসিউর রহমান, আব্দুল্লাহ ও মজিবুর মিয়াসহ ৭—৮টি ডিপোতে নিয়ে মজুত করে রেখে বিক্রি করেছে চোরাকারবারী ও সোর্সরা। এরআগে রাত সাড়ে ১২টা থেকে বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট ও লাকমা এলাকা দিয়ে ৭টি ভ্যান ও অর্ধশতাধিক ঠেলাগাড়ি বোঝাই করে ভারত থেকে কয়লা পাচাঁর শুরু করে একাধিক মামলার আসামী সোর্স ইয়াবা কালাম, জিয়াউর রহমান জিয়া, রতন মহলদার, মোক্তার মহলদার, বাবুল মহলদার ও লেংড়া বাবুলগং। এখবর পেয়ে রাত ১টায় টেকেরঘাট সীমান্তের পুলিশ ক্যাম্পের পিছনে অবস্থিত কবরস্থান এলাকা দিয়ে সোর্স ইসাক মিয়া ও হানিফ মিয়ার নেতৃত্বে ৩৫টি ঠেলাগাড়ি বোঝাই করে ভারত থেকে কয়লা পাচাঁর শুরু হয়। অন্যদিকে বরুঙ্গাছড়া ও রজনীলাইন এলাকা দিয়ে সোর্স কামাল মিয়াগং কয়লা পাচাঁর করে। পৃথক স্থান দিয়ে রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত চোরাকারবারী ইউনুছ ও তার পার্টনার সোর্স ইসাক মিয়া ১৫২বস্তা, দিলোয়ার হোসেন ৮০বস্তা, বদরুজ্জামান ৬০বস্তা, সিদ্দিক ৭০বস্তা, আলী হোসেন ৮০বস্তা, আশিকনুর ৬৫ বস্তা, সাইকুল ৬৯বস্তা, ফিরোজ ৯২বস্তা, রতন মহলদার ৪২০বস্তা, মোক্তার মহলদার ৩৮০বস্তা, বাবুল মহলদার ১২০বস্তা, মজিবুর সদার ২৮৯বস্তা, সোর্স ইয়াবা কালাম ও জিয়াউর রহমান জিয়াগং ৪৮০বস্তাসহ প্রায় ২৫লাখ টাকা মূল্যের ১২১মেঃটন কয়লা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে পাচাঁর করে টেকেরঘাট বিজিবি ও পুলিশ ক্যাম্পের সামনের অবস্থিত বড়ছড়া—চারাগাঁও শুল্কষ্টেশন সড়ক ব্যবহার করে নিলাদ্রী লেকপাড় নিয়ে মজুত করলেও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অথচ তাহিরপুর থানার সাবেক ওসি আব্দুল লতিফ তরফদার উপরের উল্লেখিত সোর্সদের পাচাঁরকৃত মাদকদ্রব্য ও কয়লাসহ একাধিক নৌকা আটক করে থানায় মামলা দিয়ে সোর্সদেরকে জেলহাজতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে সোর্সদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে তারা সিন্ডিকেডের মাধ্যমে ওপেন চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করছে বলে জানা গেছে।  

খেঁাজ নিয়ে আরো জানা গেছে— পাচাঁরকৃত অবৈধ ১বস্তা কয়লা (৪০কেজি) থেকে টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের নাম ভাংগিয়ে সোর্স ইসাক মিয়া চাঁদা নেয় ২৩০শ টাকা, বড়ছড়া শুল্কস্টেশনে নাম ভাংগিয়ে সোর্স রতন মহলদার চাঁদা নেয় ৫০টাকা, সাংবাদিক ও টেকেরঘাট পুলিশ ক্যাম্পের নাম ভাংগিয়ে সোর্স লেংড়া বাবুল চাঁদা নেয় ৫০টাকা। অন্যদিকে বালিয়াঘাট ক্যাম্পের বিজিবির ভাংগিয়ে চিহ্নিত চোরাকারবারী ও সোর্স ইয়াবা কালাম মিয়া ১বস্তা চোরাই কয়লা থেকে চাঁদা নেয় ১৭০টাকা।

এব্যাপারে বৈধ কয়লা ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস, হারুন মিয়া, ফজলু মিয়াসহ আরো অনেকেই বলেন— রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিজিবির সামনে কয়লা চোরাচালান হচ্ছে। তারা চাইলে এসব বন্ধ করতে পারে কিন্তু করেনা। তাই এব্যাপারে প্রতিবাদ করে কোন লাভ হয়না।

তাহিরপুর প্রেসক্লাব সহ—সভাপতি ও দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি কামাল হোসেন রাফি বলেন— সোর্সদের চোরাচালান ও চাঁদাবাজির বিষয়ে বালিয়াঘাট ও টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পে বারবার জানানোর পরও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়না। এর ফলে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।      

এব্যাপারে টেকেরঘাট বিজিবির কোম্পানীর কমান্ডার জাফর আহমেদ বলেন-৪৭বোতল মদ আটক করেছি এজন্য ব্যস্ত ছিলাম, কয়লা পাচাঁরের বিষয়টি আমার জানা নাই, আর সোর্সদেরকে আমি চিনি না, এব্যাপারে  খোঁজ নিয়ে দেখব।