২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০২:০১:৩১ পূর্বাহ্ন


মিজোরামে মিয়ানমারের বোমা পড়ার দাবি করছে ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০১-২০২৩
মিজোরামে মিয়ানমারের বোমা পড়ার দাবি করছে ভারত ফাইল ফটো


ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামের একটি সামাজিক সংগঠন ইয়াং মিজো অ্যাসোসিয়েশন শুক্রবার দাবি করেছে, মিয়ানমার বিমানবাহিনীর ছোড়া একটি বোমা মিজোরাম সীমান্তে পড়েছে।

বিবৃতি দিয়ে ইয়াং মিজোর একটি শাখা সংগঠন বলেছে, বোমাটি যে শুধু ভারতের মাটিতে পড়েছে তাই নয় ভারতীয় একটি বেসামরিক গাড়িও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই গাড়িটি টিয়াউ নদী থেকে বালু তুলছিল। টিয়াউ নদীটি ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যবর্তী আন্তর্জাতিক সীমান্ত হিসেবে স্বীকৃত।

মিজো অ্যাসোসিয়েশনের শাখা সংগঠনটির নাম তুইপুইরাল। এটি মিয়ানমারের চিন প্রদেশের লাগোয়া পূর্ব মিজোরামের চম্পাই জেলায় সংগঠনটির কার্যক্রম দেখভাল করার দায়িত্বে রয়েছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত আধা সামরিক বাহিনী আসাম রাইফেলস ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব নিয়োজিত। চম্পাই জেলায় মোতায়েন আসাম রাইফেলসের সেনা সদস্যদের একজন অবশ্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বোমাটি ভারতীয় সীমান্তে পড়েনি।

মিয়ানমারের এই বোমা হামলা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা এই মুহূর্তে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। গত বুধবারও মিয়ানমার সীমান্তে— যা মিজোরামের একেবারেই লাগোয়া অঞ্চল— বোমা হামলা চলায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। এদিকে ভারত সরকার এখনো এই বিষয় নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এরপর গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের সংবাদপত্র দ্য ইরাবতী জানিয়েছে, গণতন্ত্রকামী সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন চিন ন্যাশনাল আর্মির রাজনৈতিক শাখা চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সদরদপ্তর ক্যাম্প ভিক্টোরিয়ায় চলতি সপ্তাহে অন্তত দুই দফায় বোমা ফেলেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। দুই নারীসহ চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের পাঁচ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মিয়ানমারের বিমানবাহিনী প্রথম হামলাটি করে মঙ্গলবার দুপুরে।

হামলা বাড়ার আশঙ্কা করছেন মিজোরামের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ। তারা বলছেন, চিন প্রদেশে বোমা হামলার তীব্রতা ফকাওয়ানে অনুভূত হচ্ছে। এতে বাড়িঘর কাঁপছে ও ফাটল ধরছে।

ফকাওয়ান গ্রাম সংসদের সভাপতি লালরমলিয়ানা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, মানুষের উদ্বেগে থাকার যথেষ্ট কারণ আছে। কারণ বোমা এখন মিজোরামের সীমান্তে পড়তে শুরু করেছে।

লালরমলিয়ানা বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর শিবির (ক্যাম্প ভিক্টোরিয়া) থেকে আমাদের গ্রামের দূরত্ব খুবই কম। তাই সামান্য এদিক–ওদিক হলে বোমা আমাদের গ্রামে পড়বে এবং পড়ছেও। বোমা পড়ে বালু তোলার গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাড়িটি গ্রাম সংসদেরই এক সদস্যের। তবে রাজ্য বা কেন্দ্র সরকার এ নিয়ে মিয়ানমারকে সতর্ক করছে না দেখে আমরা বিষয়টি নিয়ে অবাক হচ্ছি।

চম্পাই জেলা প্রশাসক জেমস লালরিঞ্চানা বলেছেন, বোমা হামলার বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে এই সপ্তাহেই প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে। এ ছাড়া লালরিঞ্চানা বলেছেন, গত কয়েকদিনে তিনি নিজেও অন্তত আটবার বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।

এর আগামী সপ্তাহে চীন প্রদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে অনেকে ভারতে ঢুকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অতীতে এই ধরনের পরিস্থিতিতে সীমান্ত বন্ধের বিপক্ষে রায় দিয়েছেন মিজোরামের মানুষ। এর কারণ, চীন প্রদেশের মানুষের সঙ্গে তাদের সামাজিক ও আত্মীয়তার সম্পর্ক বিদ্যমান।