২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০২:৪৭:৫৩ অপরাহ্ন


মিথ্যা মামলা দিয়ে যুবকদের ফাঁসানোই যার প্রধান কাজ
ইব্রাহীম হোসেন সম্রাট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০১-২০২৩
মিথ্যা মামলা দিয়ে যুবকদের ফাঁসানোই যার প্রধান কাজ মিথ্যা মামলা দিয়ে যুবকদের ফাঁসানোর কারিগর লালবানু


রাজশাহীর বাগমারায় মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর লালবানুর প্রধান কাজ।  বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী জজ কোর্টে ভুক্তুভুগি সোহেল রানা মিথ্যা মামলায় ৪ মাস জেল খাটার পর পাল্টা মামলা করলে লালবানুর বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি হয়।


ভুক্তভুগী সোহেল রানা বাগমারা উপজেলার বাসিন্দা। তিনি পেশায় চা বিক্রেতা। 

সোহেল রানা জানায়, প্রতিদিনের আয়ে চলে তার সংসার। ছয়জনের সংসার নিয়ে সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর নিজ এলাকা থেকে পুলিশ এসে আমকে ধরে নিয়ে যায়। জেলে গিয়ে জানতে পারেন ধর্ষণ মামলার আসামি তিনি। শুরু হয় দুর্ভোগের জীবন। কোর্ট-কাচারি আর উকিলের কাছে ছুটাছুটি। চার মাস মামলা চলার পর তদন্তসাপেক্ষে প্রমাণিত হলো তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি মিথ্যা।

শুধু সোহেলই নন, একই মামলায় জেল খাটেন মাহাবুর রহমান ও মো. দুলাল। এই মিথ্যা মামলাটি করেন লালবানু। রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার চক মহব্বতপুরের এই নারীর দায়ের করা মামলাটি পুলিশি তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এর আগেও এমন এদিকে দীর্ঘ চার মাস পর ছাড়া পেয়েছেন মিথ্যা মামলায় জেলখাটা তিন যুবক। মঙ্গলবার হাজত থেকে বেরিয়ে ওই নারীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন ভুক্তভোগীরা। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে এই মামলায় আদালত লালবানুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

তিনি আরো বলেন, লালবানুর বাড়ি থেকে আমার বাড়ি ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব। তিনি আমাকে চেনেনও না। আমার তিন বছরের সন্তান, ছোট ভাই, বাবা-মা নিয়ে সংসার। আমি একাই আয় করতাম। জেলে যাওয়ার পর অনেক কষ্ট করে আমাদের সংসার চলেছে।

অনেক টাকা-পয়সা শেষ হয়েছে। আমার দোকান শেষ। চার মাস দোকান নেই। দোকানটিও ভাড়া দিয়ে দিয়েছে। এখন আমি রাস্তার ফকির। মানুষের কাছে টাকা চেয়ে নিয়ে আমি আদালতে এসেছি। সবাই মিলে আমাকে ২৫০ টাকা দিয়েছে। ৫০ টাকার খাবার আর ২০০ টাকা গাড়ি ভাড়া। আমি এই লালবানুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

রাজশাহী জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট সুলতানা শারমিন আঁখি বলেন, লালবানু গ্যাং রেপের মামলা করেছিল। পরে মামলার ফাইনাল রিপোর্ট আসার পর বিচারক ১৭ ধারায় প্রসিডিউশন জারি করেন। এরপর প্রতিবেদন গ্রহণ করে আসামিদের খালাস ও বাদীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার আদালত থেকে ছাড়া পেয়ে সোহেল, মাহাবুর ও দুলাল ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলার দরখাস্ত করলে কোর্ট তা আমলে নেন। বৃহস্পতিবার আদালত লালবানুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এর আগেও লালবানুর দায়ের করা দুটি মামলা পুলিশি তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।