২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:৫১:২২ পূর্বাহ্ন


পদ্মার চরে রাবি শিক্ষাথীকে আঘাতের ঘটনায় চারজন গ্রেফতার, বিরুপ মন্তব্য স্থানীয়দের
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০২-২০২৩
পদ্মার চরে রাবি শিক্ষাথীকে আঘাতের ঘটনায় চারজন গ্রেফতার, বিরুপ মন্তব্য স্থানীয়দের পদ্মার চরে রাবি শিক্ষাথীকে আঘাতের ঘটনায় চারজন গ্রেফতার, বিরুপ মন্তব্য স্থানীয়দের


পদ্মার চরে বান্ধবী নিয়ে ঘুতে গিয়ে রাবি শিক্ষার্থীকে গাছের ডাল দিয়ে মাথায় আঘাতের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও মতিহার থানা পুলিশ। 

মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু করে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারী) ভোর পর্যন্ত চলা অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো: রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধিন হাদির মোড় নদীরধার এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের দুই ছেলে মোঃ জনি (২৮) ও মোঃ রাবিব (২৫), মতিহার থানাধীন তালাইমারী পাওয়ার হাউজ পাড়া এলাকার মৃত বাবু কসাইয়ের ছেলে মোঃ পলক (২৮) ও একই এলাকার মৃত জাহিদ আলীর ছেলে মোঃ রুমেল (৩২)।

অপরদিকে, ভুক্তভোগী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মোঃ রায়হান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ৩১৩ নং রুমে থেকে পড়াশোনা করেন । 

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাফিজুর রহমান।

তিনি জানান, রাবি শিক্ষাথী রায়হানের দাবি সোমবার (৩০ জানুয়ারী) সন্ধা ৭টায় তার বান্ধবীকে নিয়ে তালাইামারী শহীদ মিনার এলাকায় ঘুরতে যায়। ওই সময় ৪ জন এসে তাদের ঘিরে ধরে। এরপর কাছে যা আছে সবকিছু দিয়ে দিতে বলে। তারা রাজি না হলে গাছের মোটা ডাল দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীর চিৎকার দিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন আসলে আঘাতকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ও তার বন্ধুরা তাকে রামেক হাসপাতালের ৮নং ওয়ার্ডে ভর্তি করে। 

তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে ওই রাতেই সরেজমিনে পরিদর্শণ করেন আরএমপি মতিহার বিভাগের পুলিশের ডিসি, এডিসি, মতিহার থানার ওসি, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি-২ পরিদর্শণ করেন।

এ সময় স্থানীয়দের সাথে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করা সহ পুরো এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। গ্রেফতার চারজনের বিরুদ্ধে পেনাল কোর্ড ৩৯৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্যান্য অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান ওসি।

এদিকে, রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের  ছেলে মেয়েরা এবং বিভিন্ন বয়সি দম্পত্তীরা ছেলে মেয়েদের নিয়ে কাজলা ফুলতলা থেকে শুরু করে তালামারী শহীদ মিনার পর্যন্ত উম্মুক্ত পদ্মার চরে ঘুরতে আসেন। কিন্তু তারা সন্ধার মধ্যেই ফিরে যান। কারণ নগরীর অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রের মতো এই এলাকার সড়ক বাতির ব্যবস্থা নাই। সন্ধার পর অন্ধকারে ছেয়ে যায় যায় পুরো চর। তাই খালি চোখে কোন দৃশ্যও দেখা যায় না। 

সেই সুযোগে পদ্মানদী সংলগ্ন বসতির যুবক কিশোররা সন্ধার পরে পদ্মার চরে বসে আড্ডা দেয় এবং মাদক সেবন করে। 

রাবি শিক্ষার্থী যাই বলুক তার বান্ধবীকে নিয়ে অন্ধাকার চরে গিয়ে ঠিক করেন নি। এবং তাদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতেও দেখা যায়। তবে সাধারণ ছেলেদের বাদ দিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানান স্থানীয়রা। 

সোমবার (৩০) জানুয়ারী রাত ৭টায় আহত রাবি শিক্ষার্থী তার বান্ধবীকে নিয়ে চর পেরিয়ে নদীর পাড়ে অন্ধাকারে আড্ডা দিচ্ছিলো। যার প্রত্যাক্ষদর্শী চরে ধান ক্ষেতে পানি দেয়া দুই ভাই।

তারা গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতে আরএমপি মতিহার বিভাগের পুলিশের ডিসি, এডিসি, মতিহার থানার ওসি, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি-২ কে বলেন, সোমবার (৩০ জানুয়ারী) রাত ৭টাল দিকে কয়েকজন যুবক মিলে এক ছেলেকে মারপিট করে এবং তার সাথে থাকা মেয়েটির সাথে ধস্তাধস্তি করছিলো। তবে অন্ধকারে তারা কাউকে চিনতে পারেনি। 

এ ঘটনার অভিযুক্তদের আটকের লক্ষ্যে চর-সংলগ্ন এলাকায় থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের ব্যপক অভিযান চলছে। ইতিমধ্যেই ভয়ে অনেক কিশোর-যুবক এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।