২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:২৯:৪০ অপরাহ্ন


চারঘাট শীর্ষ মাদক সম্রাট বাবু ও লালন সিন্ডিকেট
ইব্রাহীম হোসেন সম্রাট:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০২-২০২৩
চারঘাট শীর্ষ মাদক সম্রাট বাবু ও লালন সিন্ডিকেট চারঘাট শীর্ষ মাদক সম্রাট বাবু ও লালন সিন্ডিকেট


চারঘাটের মুক্তারপুর এলাকায় বেপরোয়া শীর্ষ মাদক সম্রাট লালন ও বাবু সিন্ডিকেট। বর্তমানে এলাকায় সক্রিয় এ সিন্ডিকেট প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। সক্রিয় এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে হামলা, মামলাসহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়।

চারঘাটের শীর্ষ মাদক কারবারি হলো, লালন (৩৯) চারঘাট থানাধীন চকমুক্তারপুর এলাকার লাবানের ছেলে ও একই এলাকার রহিম উদ্দিনের ছেলে বাবু (৪০)।

দীর্ঘদিন প্রশাসনের হাতে গ্রেপ্তার না হওয়ার কারনে বর্তমানে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এ মাদক কারবার সিন্ডিকেট। চারঘাটের শীর্ষ মাদক সম্রাট লালন ও বাবু  গড়ে তুলেছেন চকমুক্তারপুর এলাকার শক্তিশালি মাদক সিন্ডিকেট। তাদের বড় বড় মাদকের চালান ভারত থেকে পাচার হয়ে সিন্ডিকেটের সদস্য চকমুক্তারপুর এলাকার সরকার পাড়ার শ্রী হিরেন মন্ডলের ছেলে শ্রী রনজয় কুমার মন্ডল, ইউসুবপুর এলাকার জামান উদ্দিনের ছেলে মোঃ আশিকুজ্জামান, চকমুক্তারপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে শাকিল।  নিজেদের পদ্মা নদীতে মাছ ধরার নাম করে ভারতে গিয়ে ফেনসিডিলের বড় বড় চালান আনে বাবু ও লালনের। পরে সেই মাদক মুক্তারপুর, চকপাড়া, ইউসুবপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আরো ১০ থেকে ১৫ জন সিন্ডিকেটের সদস্যদের দিয়ে বিক্রি করায়।

আরো জানা গেছে, সাম্প্রতিক গত ২৯ তারিখ লালন ও বাবুর নির্দেশে ভারত থেকে রঞ্জয়, আশিক ২৫০ পিচ ফেনসিডিল এনে আশিকের বাড়িতে রাখে। পরে সেই ফেনসিডিল হারিয়ে যায়। এ নিয়েও এলাকার মানুষকে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার শুরু করে লালন ও বাবু সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এ ঘটনায় সন্ধেহ করে এলাকার সোহাগ ও জনিকে মারধর করে গুরুত্বর আহত করে। এ ঘটনায় চারঘাট থানায় ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে পারেনি সোহাগ ও জনি।

কিছু দিন আগে মাদক ব্যবসায়ী লালন ও বাবুর মাদক আনতে ভারতে যায় আশিক, রঞ্জয়, শাকিল। ভারতের লোক টাকা পাওয়ার কারনে তাদের মারধর করে আটকে রাখে তাদের। সে খান থেকে কৌশলে পালিয়ে আসে আশিক, রঞ্জয় ও শাকিল। ওই ঘটনার জের ধরে লালন ও বাবুর নির্দেশে তার কিছু দিন পরে ভারতের এক জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে আনে তারা। বিষয়টি জানাজানি হলে ইউসুবপুর বিওপি ক্যাম্প অভিযান চালিয়ে ভারতের ওই জেলেকে উদ্ধার করে বিএসএফ এর কাছে হস্তান্তর করে। লালন ও বাবুর পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ইউসুবপুরের পাঞ্জাতনকে ওই সব ঘটনায় ফাঁসানোর চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় তারা।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) উত্তর বাংলা ২৪ নামের এক কথিত নিউজ পোর্টালে রঞ্জয়, আশিক ও সাকিল নিজেদের জেলে হিসাবে দাবি করে ইউসুবপুর এলাকার আফজাল উদ্দিনের ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতনকে ফাঁসাতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মারধরের অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রচার করে। মাদক ব্যবসা আড়াল করতে রঞ্জয়, আশিক ও শাকিল নিজেদের জেলে হিসাবে উপস্থাপন করে ইউসুবপুরের কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতনকে ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রকাশ করে। যে কোন মূল্যে কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতনকে ফাঁসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বাবু ও লালনের মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

ইউসুবপুরের কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতন বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমাকে ফাঁসাতে একের পর এক চক্রান্ত করছে বাবু, লালনসহ তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দফায় দফায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে। আমার ক্ষতি করতে ময়িয়া হয়ে উঠেছে তারা।

তিনি আরো বলেন, গত বছর  কোন মাদক ব্যবসার সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই মর্মে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত দিয়েছি। বর্তমানে আমি ইউসুবপুর বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করে আমার পরিবার চালায়। আমার কাপড় ব্যবসার বিষয় প্রশাসনও জানে। এলাকার মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে বর্তমানে আমি। তাই আরো ক্ষিপ্ত ওই মাদক সিন্ডিকেট আমার বিরুদ্ধে। আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ লালন ও বাবুর চক্রান্তে রঞ্জয়, আশিক ও শাকিল তুলেছে তা মিথ্যা ও প্রতিহিংসা মূলক। তাদের কোন ঘটনার সাথে আমার কোন ভাবেই সম্পৃক্ততা নেই।

এ বিষয় রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম এন্ড অপস্ সনাতন চক্রবর্তী বলেন, প্রতিদিন জেলা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যহত রয়েছে। দ্রুত ওই এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান তিনি।