২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৮:৪৫:০৭ অপরাহ্ন


চারঘাট মুক্তারপুরে বেপরোয়া শীর্ষ মাদক সম্রাট বাবু ও লালন সিন্ডিকেট!
নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০২-২০২৩
চারঘাট মুক্তারপুরে বেপরোয়া শীর্ষ মাদক সম্রাট বাবু ও লালন সিন্ডিকেট! চারঘাট মুক্তারপুরে বেপরোয়া শীর্ষ মাদক সম্রাট বাবু ও লালন সিন্ডিকেট


চারঘাটের মুক্তারপুর এলাকায় বেপরোয়া শীর্ষ মাদক সম্রাট লালন ও বাবু সিন্ডিকেট। বর্তমানে এলকায় সক্রিয় এ সিন্ডিকেট প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাদক কারবার করছে এলাকায়। সক্রিয় এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে হামলা, মামলাসহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। চারঘাটের শীর্ষ মাদক সম্রাট মাদক সিন্ডিকেটের দুই প্রধান চকমুক্তারপুর এলাকার লাবানের ছেলে লালন (৩৯) ও রহিম উদ্দিনের ছেলে বাবু (৪০। দীর্ঘদিন প্রশাসনের হাতে গ্রেপ্তার না হওয়ার কারনে বর্তমানে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এ মাদক কারবার সিন্ডিকেট।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চারঘাটের শীর্ষ মাদক সম্রাট চকমুক্তারপুর এলাকার লাবানের ছেলে লালন (৩৯) ও রহিম উদ্দিনের ছেলে বাবু (৪০) এলাকায় গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি মাদক সিন্ডিকেট। তাদের বড় বড় মাদকের চালান ভারত থেকে পাচার করে আনে সিন্ডিকেটের সদস্য চকমুক্তারপুর এলাকার সরকার পাড়ার শ্রী হিরেন মন্ডলের ছেলে শ্রী রনজয় কুমার মন্ডল, ইউসুবপুর এলাকার জামান উদ্দিনের ছেলে মোঃ আশিকুজ্জামান, চকমুক্তারপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে শাকিল।  নিজেদের পদ্মা নদীতে মাছ ধরার নাম করে ভারতে গিয়ে ফেনসিডিলের বড় বড় চালান আনে বাবু ও লালনের। পরে সেই মাদক মুক্তারপুর, চকপাড়া, ইউসুবপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আরো ১০ থেকে ১৫ জন সিন্ডিকেটের সদস্যদের দিয়ে বিতরণ ও বিক্রি করায়।

আরো জানা গেছে, সাম্প্রতিক গত ২৯ তারিখ লালন ও বাবুর নির্দেশে ভারত থেকে রঞ্জয়, আশিক ২৫০ পিচ ফেনসিডিল এনে আশিকের বাড়িতে রাখে। পরে সেই ফেনসিডিল হারিয়ে যায়। এনিয়েও এলাকার মানুষকে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার শুরু করে লালন ও বাবু সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এ ঘটনায় সন্ধেহ করে এলাকার সোহাগ ও জনিকে মারপিট করে নির্যাতন করে। এ ঘটনায় চারঘাট থানায় ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে পারেনি সোহাগ ও জনি।

কিছু দিন আগে মাদক ব্যবসায়ী লালন ও বাবুর মাদক আনতে ভারতে যায় আশিক, রঞ্জয়, শাকিল। ভারতের লোক টাকা পাওয়ার কারনে তাদের মারপিট করে আটকে রাখে তাদের। সে খান থেকে কৌশলে পালিয়ে আসে আশিক, রঞ্জয় ও শাকিল। ওই ঘটনার জের ধরে লালন ও বাবুর নির্দেশে তার কিছু দিন পরে ভারতের এক জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে আনে তারা। বিষয়টি জানাজানি হলে ইউসুবপুর বিওপি ক্যাম্প অভিযান চালিয়ে ভারতের ওই জেলেকে উদ্ধার করে বিএসএফ এর কাছে হস্তান্তর করে। লালন ও বাবুর পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ইউসুবপুরের পাঞ্জাতনকে ওই সব ঘটনায় ফাঁসানোর চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় তারা।

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৩ ইং তারিক উত্তর বাংলা ২৪ নামের এক কথিত নিউজ পোর্টালে রঞ্জয়, আশিক ও সাকিল নিজেদের জেলে হিসাবে দাবি করে ইউসুবপুর এলাকার আফজাল উদ্দিনের ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতনকে ফাঁসাতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মারপিটের অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রচার করে। মাদক ব্যবসা আড়াল করতে রঞ্জয়, আশিক ও শাকিল নিজেদের জেলে হিসাবে উপস্থাপন করে ইউসুবপুরের কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতনকে ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রকাশ করে। যে কোন মূল্যে কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতনকে ফাঁসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বাবু ও লালনের মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

ইউসুবপুরের কাপড় ব্যবসায়ী পাঞ্জাতন বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমাকে ফাঁসাতে একের পর এক চক্রান্ত করছে বাবু, লালনসহ তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দফায় দফায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে। আমার ক্ষতি করতে ময়িয়া হয়ে উঠেছে তারা।

তিনি আরো বলেন, গত বছর খানিক আগেই কোন মাদক ব্যবসার সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই মর্মে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত দিয়েছি। বর্তমানে আমি ইউসুবপুর বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করে আমার পরিবার চালায়। আমার কাপড় ব্যবসার বিষয় প্রশাসনও জানে। এলাকার মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে বর্তমানে আমি। তাই আরো ক্ষিপ্ত ওই মাদক সিন্ডিকেট আমার বিরুদ্ধে। আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ লালন ও বাবুর চক্রান্তে রঞ্জয়, আশিক ও শাকিল তুলেছে তা মিথ্যা ও প্রতিহিংসা মূলক। তাদের কোন ঘটনার সাথে আমার কোন ভাবেই সম্পৃক্ততা নেই।

এ বিষয় রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম এন্ড অপস্ সনাতন চক্রবর্তী বলেন, প্রতিদিন জেলা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যহত রয়েছে। দ্রুত ওই এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান তিনি। 

এদিকে একাধিক স্থানীয়রা জানায়, ফেনসিডিল আর ইয়াবার রাজধানী রাজশাহী চারঘাট, শারদা, ইউসুফপুর, ইউসুফপুর সিপাইপাড়া, টাংগণ, বানেশ্বর এলাকার প্রায় ঘরে ঘরে মাদক সেবী ও মাদক বিক্রেতা। এসকল এলাকায় একাধিক মাদক কারবারীদে সিন্ডিকেট রয়েছে। ভারত সিমান্ত অতি নিকটে হওয়ায় খুব সহজেই তারা সিমান্তবর্তী এলাকা থেকে গাঁজা,  হাজার হাজার বোতল ফেনসিডিল ও কেটি কেটি টাকা মূল্যের ইয়াবা ট্যাবলেটের বড় বড়  চালান এলাকায় নিয়ে এসে। নিজ নিজ এলাকার-সহ পুরো রাজশাহীর চহিদা র্পূরুণ করে রাজধানী ঢাকায় মাদকের চালান সরবরাহ করে থাকে। ধরা পড়ে খুচরা মাদক কারবারি আর মাদক খোর, আর মদক বহনকারী লেবার। মাদকের বিনিময়ে দেশের লাখ ,হাজার, শত কোটি পাঁচার হয়ে যাচ্ছে ভারত ও মায়েন মারে। দেশ পাচ্ছে মাদক নামের বিষ। সেই মাদক সেবন করে লন্ড, ভন্ড বিকৃতী মানুষিকতা নিয়ে বেড়ে উঠছে কিশোর, তরুণ, যুবকরা। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ছাত্র সমাজ ও মাদকাশক্ত হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন শ্রেণীপেশার যুবকদের বড় একটা অংশ মাদকাশক্ত। ফলে ব্যপক হারে বেড়েছে মাদক সেবী ও মাদক কারবারির সংখ্যা।

কাটাখালী থানা অঞ্চলের চৌমহিনি, টাংগন , নওদাপাড়া, বেলঘরিয়া শ্যামপুর, শ্যামপুর বালুঘাট, নগর, শাহাপুর এই সকল এলাকায় রয়েছে শত শত মাদক কারবারি। দিন রাত ২৪ ঘন্টাই হাত বাড়ালেই মেলে মাদক। মাদক সেবির সংখ্যাও রয়েছে ব্যপক।

রাজশাহী মহানগরীর পদ্মাপাড়ের, বসতী, বিভিন্ন অটো গ্যারেজ, বিভিন্ন বসতি, পদ্মারচর, রাজশাহী মহানগরীর গুড়ি পাড়া, পাচানী মাঠ, পঞ্চবটি, খরবোনা, কেদুর মোড়, হাদির মোড়, শহীদ মিনার-সহ পুরো নগরীতে মাদকসেবি গিজ গিজ করছে। সেই সাথে মাদকের রমরমা কারবার চালাচ্ছে পঞ্চবটির মন্নি’রা। তালাইমারী  শহীদ মিনারের গাঁজা কারবারি কমেলা। সে আবার ৩০০টাকার কম গাঁজা বিক্রি করে না। রয়েছে বাসার রোডের টিপুর ছেলে শামীম ।

পুরো মতিহার থানা অঞ্চলের তালাইমারী পাওয়ায় হাইজ পাড়া, জাহাজঘাট, মহব্বতের ঘাট, সাতবাড়িয়া , ডাসমারী স্কুল মোড়, মালেকের মোড়, ডাসমারী ফিল্ড, সুরাপানের মোড়ের মাদক ডিলার অলি এখন অনেক বড় মাপের মাদক ডিলার। তবে নিজ হাতে মাদক ধরেনা। কাজ করায় মানুষ দিয়ে। হাজার বোতল ফেনসিডিল, ইয়াবা, হেরোইনের চালান লেনদেন করে ওলি। সারাদিন ঘুমায়, সন্ধার পর বেরিয়ে কারবার শুরু করে। তার বিষয়ে পুরো ডাসমারী, মিজানের মোড়, তার নিজ এলাকা সুরাপানের মোড়ের অধিকাংশ মানুষই তার বিষয়ে জানে। বিস্তারিত ওই এলাকার অটোরিক্সা চালক জনৈক হানিফকে জিজ্ঞাসা করলেই বিস্তারিত জানা যাবে। শুধু হানিফ-ই নয় আরো অনেক হানিফও তার বিষয়ে বলবে ওলি কত বড় মাদক ডিলার।  তবে তার একটা বিশেষ গুণ আছে সে পুলিশ প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের সদস্যদের সাথে গভীর সম্পর্ক রেখে চলে। যেমন আপ্যায়ন, ছোট ছোট মাদক কারবারিদের পুলিশে ধরিয়ে দেয়া। বখরা আদায় ইত্যাদি। তার বিরুদ্ধে আরএমপি সাবেক পুলিশ কমিশনারকে অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী। এছাড়াও মিজানের মোড়, চর-শ্যমপুর এলাকার, চিহ্নিত মাদক কারবারিরা রয়েছে বহাল তবিয়্যতে।

অপরদিকে, বিভিন্ন ধরনের মাদক-সহ হেরোইনের রাজধানী গোদাগাড়ী মহিষাল বাড়ি, প্রেমতলী, মাটিকাটা ইউনিয়ন ভাসছে মাদকে। মাদকের বড় বড় গডফাদার রয়েছে পুরো গোদাগাড়ী অঞ্চলে। ভোদড়, শীষ মোহাম্মদের মতো মাদক মাফিয়ারা রয়েছে রহাল তবিষ্যতে। গাড়ি, বাড়ি, হাইফাই চেম্বার, নিয়ে রাজশাহী মহানগরীতে সহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ  শহরে থেকে মাদক নিয়ন্ত্রণ করছে মাদক মাফিয়ারা। যেমন শীষ মোহাম্মদ হোরোইনের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে রাজশাহী মহানগরীতে থেকে। রয়েছে একাধিক বাড়ি, একাধিক সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে আলিশান চেম্বারে বসে রাজকীয় জিবন যাপন ও মাদক নিয়ন্ত্রণ। সে আবার বলে আমার সমস্যা নাই। গোদাগাড়ী থানা আমাকে ছুঁবেনা। হাতে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও রাজশাহীসহ ঢাকায় বড় মাপের সাংবাদিক। তাছাড়া গোদাগাড়ি ও চাপাইয়ের বড় বড় মাদক ডিলাররা হরহামেশাই একজন সাংবাদিকের নাম বলে থাকেন। তাহলে কি তিনিও তাদের নিয়ন্ত্রণ করছে ? তবে খোলামলা অলোচনাও যে হয়না তাও না। মোটা অংকের মাদকের টাকা গিলে এই রকম কিছু সাংবাদিকও রয়েছে বড় বড় গডফাদারদের সহযোগী হিসেবে।

একাধিক অভিজ্ঞ, শিক্ষিত, নচেতন মহালের ব্যক্তিরা জানায়, যাদের ভাবলে কাজ হবে, তারা যদি গুরুত্ব না দেয়া যায়, তাহলে ঘরে ঘরে মাদকাশক্তের সংখ্যা আরও বাড়বে। মাদক সেবনের টাকা যোগাড় করতে বর্তমান সমাজে যা ঘটছে, চুরি ছিনতাই, চিট বাটফার, কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধ, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। তাছাড়া মহানগরীতে হরহামেশাই ঘটছে চুরি, ছিনতাই, খুন, ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেল সহ নানা ধরনের অপরাধ।  এই সকল অপরাধ আরও বৃদ্ধি পাবে। কারন হিসেবে বলেন, অপরাধ না করলে প্রতিদিন ৩হাজার টাকা মূল্যের একটি ফেনসিডিল সেবন করবে কিভাবে?  হাজার টাকা খরচ করে নেশার টাকা আসবে কোথা থেকে? আয় রোজগার নাই মাসে লাখ টাকার মাদক সেবন! অপরাধ তো বাড়বেই। 

তারা আরও বলেন, কঠোর দৃষ্টি ভঙ্গি আর অর্থের নেশা কমিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের বিকল্প নাই। বাঁচবে,সংসার, পরিবার, দেশের অর্থণীতি আর দেশের মূল্যবান সম্পদ  তরুণ, কিশোর, যুবক ও ছাত্রসমাজ।