২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৮:৩৫:৩২ পূর্বাহ্ন


রাগের সময় মুমিনের ভাষা যেমন হওয়া উচিত
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০২-২০২৩
রাগের সময় মুমিনের ভাষা যেমন হওয়া উচিত ফাইল ফটো


রাগ মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। অতিরিক্ত রাগের সময় মানুষ হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আত্মনিয়ন্ত্রণহীন মানুষ অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে। আর তা মারামারি ও হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু মুমিনরা রাগের সময় স্থির থাকে। রাগ নিয়ন্ত্রণের যথাসাধ্য চেষ্টা করে। কোনো মুসলমান যদি রাগ বা বিবাদের সময় অন্যায় আচরণ করে, তাহলে হাদিসের ভাষ্যমতে, তার মধ্যে মুনাফিকি স্বভাব আছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যখন তাকে বিশ্বাস করা হয়, সে বিশ্বাস ভঙ্গ করে। কথা বললে, মিথ্যা বলে। অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে এবং বিবাদ-বিতর্কে উপনীত হলে অন্যায় পথ অবলম্বন (গালাগাল) করে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৪; মুসলিম, হাদিস : ১০৬)

রাসুল (সা.) তাঁর সাহাবিদের রাগ নিয়ন্ত্রণের তাগিদ দিতেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে বলল, আপনি আমাকে উপদেশ দিন। তিনি (নবীজি) বলেন, তুমি রাগ কোরো না। লোকটি কয়েকবার তা বলেন, নবীজি (সা.) প্রত্যেকবার বলেন, রাগ কোরো না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১১৬)

দুই ব্যক্তি নবী করিম (সা.)-এর কাছে বসে পরস্পর গালাগাল করছিল। তাদের একজনের চোখ লাল হয়ে উঠল ও গলার শিরা ফুলে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি একটি বাক্য জানি, যদি সে তা পড়ে তবে তার এ অবস্থা কেটে যাবে। সে বাক্যটি হলো, আমি আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৮১২)

মুমিনরা রাগের সময় শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন করে নেয়। এতে রাগ কমে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কারো রাগ হয় তখন সে যদি দাঁড়ানো থাকে, তবে যেন বসে পড়ে। যদি তাতে রাগ চলে যায় ভালো। আর যদি না যায়, তবে শুয়ে পড়বে।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৭৮৪)

মুমিনরা অজুর মাধ্যমেও রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে। আর শয়তান আগুনের তৈরি। নিশ্চয়ই পানির দ্বারা আগুন নির্বাপিত হয়। সুতরাং তোমাদের কেউ যখন রাগান্বিত হয় সে যেন অজু করে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৮৬)

বিবাদপূর্ণ পরিস্থিতিতে মুমিনরা চুপ হয়ে যায়। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা শিক্ষা দাও এবং সহজ করো। কঠিন কোরো না। যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো; যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো; যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৪৭৮৬)

উত্তেজনা সৃষ্টিকারী ও বিবাদকারীকে উপেক্ষা করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, “রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের যখন অজ্ঞ লোকেরা সম্বোধন করে তখন তারা বলে, ‘সালাম’।” (সুরা : ফুরকান, আয়াত : ৬৩)

মহান আল্লাহ আমাদের রাগ নিয়ন্ত্রণের তাওফিক দান করুন।