২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৭:৪১:৩৫ অপরাহ্ন


সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিকদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবি
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৩-২০২৩
সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিকদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবি সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিকদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবি


সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিচার ও শাস্তির পাশাপাশি আহত সাংবাদিকদের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি)।

আজ শনিবার দুপুরে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ দাবি তুলেছেন সংগঠনটির নেতারা। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কদম ফোয়ারা ঘিরে এ সমাবেশ হয়।

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ ছিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট। প্রথম দিনের ভোটে আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোলের এক পর্যায়ে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। তাদের লাঠিচার্জে বেসরকারি টেলিভিশ চ্যানেল এটিএন নিউজের জাবেদ আখতার, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জান্নাতুল ফেরদৌস তানভী, আজকের পত্রিকার নূর মোহাম্মদ, জাগো নিউজের ফজলুল হক মৃধা, সময় টিভির ক্যামেরাপারসন সোলাইমান স্বপন, ডিবিসির ক্যামেরাপারসন মেহেদী হাসান মিম ও বৈশাখী টিভির ক্যামেরাপারসন ইব্রাহিমসহ অন্তত ১২ জন সাংবাদিক আহত হন। গুরুতর আহত হন এটিএন নিউজের সাংবাদিক জাবেদ আখতার। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। এখন পর্যন্ত তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে লিখিত অভিযোগ করে সুপ্রিম কোর্ট বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ল রিপোর্টার্স ফোরামের (এলআরএফ) নেতারা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এলআরএফসহ এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। তারই ধারাবাহিকতায় কারওয়ান বাজারের কদম ফোয়ারা ঘিরে সমাবেশ করে বিজেসি ও টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন।

সমাবেশে বিজেসির চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক রাজা বলেন, ‘অনেক সময় নিরাপদ দূরত্বে থেকে সাংবাদিকরা কাজ করতে পারেন না। জনগণের প্রয়োজনে, রাষ্ট্রের প্রয়োজেনে সঠিক তথ্য, চিত্র তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। সে জন্য সাংবাদিকরা বিশেষ সুরক্ষার দাবি রাখেন। সুরক্ষা তো দূরের কথা, ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন পক্ষের হামলা-আক্রমণের শিকার হতে হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে হেনস্তা, আক্রমণের শিকার হতে হয়। এটি খুবই দুঃখজনক।

তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টে যেসব পুলিশ সদস্য সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে, তাদের চিহ্নিত করা কঠিন কিছু না। আমরা দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা দেখতে চাই। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে এখন পর্যন্ত পুলিশ সেটা করেনি। আমরা আশা করেছিলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা ব্যবস্থা নেবেন, নেননি। পুলিশের একজন কর্মকর্তা সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিকদের সংগঠনের (এলআরএফ) কার্যালয়ে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। দুঃখ প্রকাশ করে এ ধরনের ঘটনার মীমাংসা হয় না। আমরা সরকারের কাছে দায়ীদের শাস্তি দাবি করছি, আহতদের ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি।’

পুলিশ বাহিনীকে যারা সাংবাদিকদের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন তাদের হুঁশিয়ার করে রাজা বলেন, ‘এ খেলা বন্ধ করুন। এর পরিণতি ভালো হবে না।

সংগঠনটির সদস্যসচিব শাকিল আহমেদ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সাংবাদিকদের ওপর কোনো হামলা, আক্রমণের বিচার পাইনি। বিচার না পাওয়ার যে সংস্কৃতি, তা থেকেই সাংবাদিকদের ওপর হামলা-আক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। তারই পরিণতি হচ্ছে, আজ সর্বোচ্চ আদালতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা। মানুষের আশা-ভরসার শেষ ভরসার জায়গায় আজ সাংবাদিকরা হামলার শিকার হচ্ছেন। এমন না যে পরিচয় না জেনে পুলিশ পিটিয়েছে। পরিচয় দেওয়ার পরও লাঠিচার্জ করেছে। আমরা দেখব, প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়। যদি প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয় তবে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার, বিচারের দাবি জানাব।’

রাজনৈতিক দল, সুধীসমাজ ও সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী নেতাদের সমালোচনা করে শাকিল বলেন, ‘এ হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে কোনো নিন্দা বা প্রতিবাদ জানাতে দেখিনি। এটা খুবই দুঃখজনক।’

এ ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলেন, প্রধান বিচারপতি সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা প্রধান বিচারপতির কাছে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বিজেসির ট্রাস্টি সাইফ আহমেদ দিলাল, মানস ঘোষ, নূর সাফা জুলহাস, সাংবাদিক শাহনাজ শারমিনসহ আরো অনেকে।