২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৯:৪৪:১৩ পূর্বাহ্ন


বিয়ের আশ্বাসে শিক্ষিকাকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৩-২০২৩
বিয়ের আশ্বাসে শিক্ষিকাকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ অভিযুক্ত সারোয়ার হোসেন ।


গাজীপুরের টঙ্গীতে বিয়ের কথা বলে কিন্ডার গার্টেনের এক শিক্ষিকাকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক বাইং হাউজের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত সারোয়ার হোসেনকে (৪২) আটক করে আদালতে পাঠায়।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাতে টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন সফি উদ্দিন রোড এলাকার ওই শিক্ষিকার বাসা থেকে পুলিশ তাকে আটক করে।

পোশাক কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেন নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আলমপুর গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে। তার স্ত্রী ও এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। সে টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন দক্ষিন আউচপাড়া (সালাহ উদ্দিন সরকার গলি) এলাকার রাজ্জাকের বাড়ীর ভাড়াটিয়া। সে গত প্রায় ৫ বছরেরও বেশি সময় যাবত ওই বাড়িতে ভাড়া থাকে এবং বর্তমানে একটি বাইং হাউজে কর্মরত রয়েছে।

প্রতারণার শিকার শিক্ষিকা মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে পোশাক কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেনকে একমাত্র অভিযুক্ত করে টঙ্গী পশ্চিম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। তিনি জানান, চাকরির পরিচয়ে সারোয়ার হোসেনের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর সে প্রায়ই আমার বাসায় আসা যাওয়া করতো। এক পর্যায়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। আমার স্বামী ও দুই ছেলে আছে জানিয়ে তার সাথে প্রেম করবো না বলে তাকে বলে দেই। কিন্তু তিনি আমার পিছু ছাড়েননি। একপর্যায়ে আমি তার প্রস্তাবে রাজি হই। এর কিছুদিন পর সে আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এভাবে কিছুদিন চলার পর আমাদের প্রেমের বিষয়টি উভয় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে জানাজানি হয়।

গত ৫ বছর যাবত এভাবে চলতে থাকলে আমি তাকে দ্রুত বিয়ে করার কথা বলি। বিয়ের কথা বলে সে একাধিকবার আমার টঙ্গীর বাসায় এবং ময়মনসিংহের স্কয়ার মাস্টারবাড়ী এলাকায় তার ভাড়া বাসায় নিয়ে স্ত্রী পরিচয়ে রাতযাপন করে শারীরিক সম্পর্ক হয়। কিছুদিন পর বিয়ে করার জন্য তাকে পুনরায় চাপ দিলে সে আমার স্বামীকে ডিভোর্স দিতে বলে। আমি তার কথামতো এ বছরের জানুয়ারির শেষের দিকে স্বামীকে ডিভোর্স দেই। স্বামীকে ডিভোর্স দেয়ার পর থেকে সে আমার সাথে যোগযোগ বন্ধ করে দেয়। তাকে ফোন দিলে সে বলে আমাকে ফোন দিবা না, ডিস্টার্ব করবা না। আমি চাই তুমি আমার সাথে যোগযোগ না কর। তুমি তোমার মতো থাকো এবং আমাকে আমার মতো থাকতে দাও। এক পর্যায়ে সে আমাকে বিয়ে করবেন না বলে জানিয়ে দেয়।

পরে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যার পর সে আমার বাসায় আসে এবং আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। এসময় তাকে বিয়ে করতে বললে সে বিয়ে করবেনা বলে অস্বীকৃতি জানায়। পরে কোনো উপায় না পেয়ে আমি জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯-ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা নিলে পুলিশ রাতেই তাকে আমার বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, সারোয়ার হোসেনের সাথে সম্পর্কের থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময় ব্যবসা করার কথা বলে আমার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা এবং ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নেয়।

অভিযুক্ত সারোয়ার হোসেন জানান, আমার বিরুদ্ধে ওই নারীর অভিযোগগুলো মিথ্যা এবং বানোয়াট। তার সাথে আমার পরিবারের একটা পারিবারিক সম্পর্ক ছিলো। সে হিসেবে তার বাসায় আসা-যাওয়া করতাম। তবে তার সাথে আমার কোনো ধরনের শারীরিক সম্পর্ক হয়নি।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম জানান, ওই নারীর অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই। তাছাড়া তারা দুজনেই বিবাহিত এবং প্রাপ্ত বয়স্ক। তাদের উভয়ের ঘরে স্ত্রী এবং দুইটি করে সন্তান রয়েছে। তাই উত্যক্ত করার অভিযোগে আটক সারোয়ার হোসেনকে জিএমপি অ্যাক্ট সর্বোচ্চ শাস্তি (৭৭ ধারা) অনুযায়ী গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।