২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ০১:৪২:২২ পূর্বাহ্ন


খাদ্য পরিদর্শক সাকিলার বিরুদ্ধে ৭ লাখ টাকা উৎকোচ দাবির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৪-২০২৩
খাদ্য পরিদর্শক সাকিলার বিরুদ্ধে ৭ লাখ টাকা  উৎকোচ দাবির অভিযোগ খাদ্য পরিদর্শক সাকিলার বিরুদ্ধে ৭ লাখ টাকা উৎকোচ দাবির অভিযোগ


চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা খন্দকার সাব্বির আহম্মেদকে সিরাজগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। আর রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের অধীন রাজশাহী মহানগর ওএমএস তদারকি কর্মকর্তা হিসেবে সংযুক্তি থাকা গোমস্তাপুর উপজেলার দেওপুরা এলএসডির খাদ্য পরিদর্শক সাকিলা নাসরিনকে আমনুরা এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। গত ২ মার্চ একই আদেশে তাদের বদলি করা হয়। তবে এই দুই কর্মকর্তার কেউই এখন পর্যন্ত বদলিকৃত নতুন কর্মস্থলে গিয়ে দায়িত্বগ্রহণ করেননি। এরইমধ্যে খাদ্য পরিদর্শক সাকিলা নাসরিনের বিরুদ্ধে ৭ লাখ টাকা উৎকোচ দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সরকারি এই খাদ্য গুদামে অচলাবস্থা সৃষ্টির আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও তারা এখন পর্যন্ত তদন্তই শেষ করতে পারেননি।    

আমনুরা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা খন্দকার সাব্বির আহম্মেদ বলেন, বদলি হয়ে আসা খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাকিলা নাসরিন আমনুরা খাদ্যগুদামে যোগদান করলেও তিনি এখনো দায়িত্বভার গ্রহণ করেননি। তিনি বলেন, সাকিলা নাসরিন  আমার কাছে ৭ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেছেন। এই টাকা তাকে না দিলে তিনি দায়িত্ব বুঝে নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। সাকিলা তাকে বলেছেন আমাকে বদলি হয়ে আসতে ১২ লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে। তাই আপনি আমাকে ৭ লাখ টাকা দেবেন। অন্যথায় গুদামে চালের মজুদ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে তারতম্যে ব্যাপক ফারাক রয়েছে বলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করবেন। এছাড়া নানা ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। 

সাব্বির আহম্মেদ বলেন, আমি কোনো অনিয়মের সাথে জড়িত না। আমি কেন তাকে ৭ লাখ টাকা দেব। আমি দায়িত্ব হস্তান্তরে সব সময় প্রস্তত। তিনি বলেন, দাবিকৃত টাকা না পেয়ে সাকিলা নিম্নমানের চাল ক্রয় ও ওজনে কম থাকার অভিযোগ তুলে আমাকে ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে তদন্ত কমিটিও কোনো সত্যতা পায়নি বলেও দাবি করেন সাব্বির। 

সাব্বির আহম্মেদ আরো বলেন, সাকিলা নাসরিন দায়িত্বভার গ্রহণ না করেই অবৈধভাবে সরকারি বাসা দখল করে সেখানে অবস্থান করছেন। যদিও সেটি গণপূর্ত অধিদফতর কর্তৃক পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে আমি স্ত্রী সন্তান নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।  

এক প্রশ্নের জবাবে সাব্বির আহম্মেদ বলেন, আমার কাছে ৭ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি, আমাকে লাঞ্চিত করার চেষ্টা ও অবৈধভাবে সরকারি বাসা দখল সহ সার্বিক বিষয়ে সাকিলা নাসরিনের বিরুদ্ধে একাধিক লিখিত অভিযোগ উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে দিয়েছি। আশা করছি তারা সাকিলার বিরুদ্ধে আইন ব্যবস্থা নেবেন। 

তিনি আরা বলেন, সাকিলা নাসরিন গত ৬ এপ্রিল বিকেলে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করেন। ওই সময় গুদামে কর্মরত শ্রমিকদের সহায়তায় আমি রক্ষা পাই।  

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাকিলা নাসরিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা কোনও অভিযোগ সত্য নয়। তদন্ত কমিটি তদন্ত করছে। আশা করছি সেখানে সঠিক সিদ্ধান্ত পাব। আর সবকিছু বুঝে পেলে দায়িত্বভার নেবেন বলে জানান তিনি। 

এদিকে এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে কোনো অভিযোগের এখন পর্যন্ত সত্যতা মেলেনি। আরো সময় প্রয়োজন। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই দুই কর্মকর্তার মধ্যে আগে থেকেই কোনো মনোমালিন্য রয়েছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে হবে। কারণ আগে থেকে কোনো দ্বন্দ্ব থাকলে এ ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক।