২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৫:৪৫:৫১ পূর্বাহ্ন


আতঙ্কের মাঝেই ক্ষোভে ফুঁসছে ইউক্রেন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০২-২০২২
আতঙ্কের মাঝেই ক্ষোভে ফুঁসছে ইউক্রেন ফাইল ফটো


'পুতিন এবং জেলেন্সকিকেচড় মারতে চাই আমি।' এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলছিলেন আনা ভেলিশকো। ৩৯ বছর বয়সি আনা রাশিয়া ও ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী শহর আভডিভোকার বাসিন্দা।

বোঝাই যাচ্ছিল তাঁর মানসিক অবস্থা। ভয়ে, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। তাঁর মতোই অবস্থা ইউক্রেনের মানুষজনের। ইউক্রেন অশান্ত। যুদ্ধের গন্ধ সেখানে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামা বেজে গিয়েছে। হুঙ্কার পালটা হুঙ্কারে কাঁপছে বিশ্ব। ইউক্রেন ভূখণ্ডের অন্তর্গত ডোনেত্‍স্ক এবং লুহান্সক প্রদেশকে স্বাধীন ঘোষণা করে দিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেন ও রাশিয়ার সীমান্তবর্তী শহর আভডিভোকাতে লাগাতার গোলাবর্ষণ করছে রুশ সেনাবাহিনী। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় আর সাধারণ মানুষের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। তাঁদের কথা আর কে বোঝে! কে শুনতে চায় আনাদের মতো সাধারণ মানুষের আর্তি!

আনা ভেলিশকো তাঁর বহুদিনের বাসস্থানে এখন থাকতে রীতিমতো ভয় পাচ্ছেন। তাঁর আবাসনের অনেকেই এই শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র। কেউ কেউ ব্যাগ গুছিয়ে রাখছেন পালানোর জন্য। আনার স্মৃতিতে এখনও টাটকা ২০১৫-র স্মৃতি। ২০১৫ সালে পূর্ব ইউক্রেনে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষে বহু মানুষের প্রাণহানি হয়। আনা বলছেন, '২০১৫ সালের মতো ভয়ংকর ভাবে গোলা ছুঁড়ছে ওরা।'

আনার থেকে ১২ বছরের ছোট ইয়েভেন। তিনিও ভীত, সন্ত্রস্ত। বোমার আঘাতে আহত হওয়ার ভয় ছড়িয়ে পড়েছে ২৭ বছরের ওই যুবকের মনে। ইয়েভেন বলছেন, 'আমার মা-বাবা আছেন ডোনেত্‍স্কে। তাই তাঁদের ছেড়ে পালাতে পারব না আমি। এই দেশটা আমার।' আজকেই ইউক্রেন সেনার গোলার আঘাতে ডোনেত্‍স্কের এক নিরীহ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত মোট তিনজন সংঘর্ষে মারা গিয়েছেন। সংখ্যাটা আরও বাড়তেই পারে। ইউক্রেনের দুই সেনা এবং একজন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। যদিও এই হিসাব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

সাধারণ মানুষের মতো নেতৃত্ববর্গও কি শঙ্কিত নয়? রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়তে পারে আভডিভোকার মতো শহরগুলিতে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি ক্রমশই সুর চড়াচ্ছেন একে অন্যের বিরুদ্ধে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতিমধ্যে জানিয়েছেন রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ জারি করা হবে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন। উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে রাশিয়ার প্রায় লক্ষাধিক সেনা ইউক্রেন ঘিরে রয়েছে। যে কোনও সময়ে ইউক্রেনে আক্রমণ করতে পারে রাশিয়া। ভয়ের আবহ সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, বিপন্ন হন সাধারণ মানুষ।

রাজশাহীর সময় /এএইচ