২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১২:০২:১৪ পূর্বাহ্ন


সুনামগঞ্জে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: আওয়ামীলীগ নেতাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৪-২০২৩
সুনামগঞ্জে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: আওয়ামীলীগ নেতাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা মৃত যুবকেরর নাম- শাকিব মিয়া (২৫


সুনামগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জের ধরে রাস্তা থেকে এক যুবককে তুলে নিয়ে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করার হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মৃত যুবকেরর নাম- শাকিব মিয়া (২৫)। এঘটনার প্রেক্ষিতে আওয়ামীলীগ নেতাসহ ১০জনকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে মৃত যুবকের বাবা মজিবুর রহমান বদী হয়ে এই মামলা করেন।

মামলার আসামীরা হলেন- জেলার তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও এউপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে মোশারফ হোসেন তালুকদার (৫৮), তার ছেলে মোনায়েম তালুকদার রাজু (৩৪), ভাই মোশাহিদ তালুকদার (৫৫), মহিনুর তালুকদার (৫৩), তার ছেলে রফি তালুকদার (২৯), একই গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে নুরুজ আলী (৫০), তার ছেলে কাহার আলী (২৬), বাহার আলী (২২), ছামাদ তালুকদারের ছেলে পটল তালুকদার (৩২) ও রাজা মিয়ার ছেলে সামছু মিয়া (৫৮)। এছাড়াও এই মামলায় আরো ৩-৪ জন অজ্ঞাত আসামী রয়েছে।

এলাকাবাসী ও মামলা সূত্রে জানা গেছে- তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর সংলগ্ন অবৈধ বালি ও পাথর কোয়ারী তৈরির জায়গা নিয়ে ঘাগটিয়া গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মোশারফ হোসেন তালুকদারের সাথে পাশর্^বর্তী টেকেরগাঁও গ্রামের মজিবুর রহমানের সাথে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছিল। এনিয়ে তাদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষও হয়েছে। থানায় হয়েছে একাধিক মামলা। এরপর ওই অবৈধ কোয়ারী নিয়ে সংবাদ প্রকার করতে গেলে স্থানীয় এক সাংবাদিককে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। পরে প্রশাসনিক তৎপরতা বৃদ্ধি পেলে অবৈধ বালি ও পাথর কোয়ারী বেশ কিছুদিন যাবত বন্ধ থাকে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে আবার অবৈধ কোয়ারী চালু হয়। এরপর দুই পক্ষের লোকজনের মাঝে আবারও বাড়তে থাকে উত্তেজনা। এমতাবস্থায় অবৈধ কোয়ারী নিয়ে প্রতিবাদ করায় গত সোমবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিজ বসতবাড়ি থেকে পাশর্^বর্তী চক বাজারে যাওয়ার সময় শাকিব মিয়াকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় আওয়ামীলীগ নেতা মোশারফ হোসেন তালুকদার ও তার বাহিনী। এরপর তার বাড়িতে নিয়ে হাত-পা বেঁধে বেধরক মারপিট করে রক্তাক্ত করে। এখবর পেয়ে রাত ১টায় মুজিবুর রহমান তার ছেলেকে উদ্ধার করতে মোশারফের বাড়িতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে রাত ২টায় এই ঘটনাটি থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবা-ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা শাকিবের অবস্থা আশংকাজনক দেখে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১১টায় শাকিব মিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

তাহিরপুর থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান- মামলা দায়েরের পর এখনও পর্যন্ত আসামী গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি তবে অভিযান চলছে।