২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৯:৩৭:৫০ অপরাহ্ন


রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ছয় থানার ওসির রদবদল
ইব্রাহীম হোসেন সম্রাট:
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৪-২০২৩
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ছয় থানার ওসির রদবদল ফাইল ফটো


সিটি নির্বাচনের আগে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ছয়টি থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পদে রদবদল আনা হয়েছে। এদের মধ্যে একাধিক ওসি থানায় অল্প কিছু দিন দায়িত্ব পালনের পরই নতুন থানায় বদলি হলেন।
গত ২৫ এপ্রিল আরএমপি কমিশনার মো. আনিসুর রহমান এসব বদলির আদেশ জারি করেছেন। এর আগে তিন দফায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আরও পাঁচ ওসিকে রাজশাহীর বাইরে অন্য ইউনিটে বদলি করা হয়।
সর্বশেষ আদেশে দেখা যায়- আরএমপির ছয় পুলিশ পরিদর্শকের মধ্যে মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মশিউর রহমানকে পাঠানো হয়েছে দামকুড়া থানায়। দামকুড়া থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামানকে পাঠানো হয়েছে কাশিয়াডাঙ্গা থানায়। মাত্র এক মাস আগে রাজপাড়া থানা থেকে বদলী হয়ে বেলপুকুর থানার ওসি হওয়া রুহুল আমিনকে পাঠানো হয়েছে মতিহার থানায়। আর চন্দ্রিমা থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজকে পাঠানো হয়েছে বেলপুকুর থানায়। এর কিছুদিন আগে তিনি কাশিয়াডাঙ্গার ওসির দায়িত্বে ছিলেন।
এদিকে পবা থানার ওসি রফিকুল ইসলামকে বদলি করা হয়েছে চন্দ্রিমা থানায়। আর শাহমখদুম থানার ওসি মোবারক পারভেজকে পাঠানো হয়েছে পবা থানায়। এসব ওসিদের অনেকেই নতুন থানায় ইতোমধ্যে যোগ দিয়েছেন। অন্য দুই একজন যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এর একদিন আগে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেওয়া আদেশে মতিহারের ওসি হাফিজুর রহমানকে বদলী করা হয়েছে সিআইডিতে। আর রাজপাড়া থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমানকে আরএমপি থেকে রাজশাহী রেঞ্জে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে দুই দুই দফায় বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম ও পবা থানার ওসি ফরিদ হোসেনকে রংপুর রেঞ্জে এবং শাহমখদুম থানার ওসি মেহেদী হাসানকে সিআইডিতে বদলি করা হয়।
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, আসন্ন সিটি নির্বাচনকে ঘিরে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে। এতে বিভিন্ন থানায় দায়িত্বরত পরিদর্শক ও উপ-পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তারা কিছুটা বদলি আতঙ্কে রয়েছেন।
জানা গেছে, বদলি হওয়া কয়েকজন ওসির বিরুদ্ধে নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অবহেলার অভিযোগ ছিল। তাদের অবশ্য আরএমপির বাইরে অন্য রেঞ্জে ও ইউনিটে বদলি করা হয়।
এদিকে আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি কর্মকর্তাদের বদলি না করতে এবং ছুটি না দিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন; যা ভোট শেষ হওয়ার ১৫ দিন পর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। সম্প্রতি নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, সিটি নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ তথা সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করার প্রয়োজন হবে।
এতে আরও বলা হয়, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর ৮৯ বিধি অনুযায়ী, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার ১৫ দিন অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ ছাড়া উল্লেখিত কর্মকর্তাদের অন্যত্র বদলি করা, ছুটি দেওয়া অথবা নির্বাচনী দায়িত্ব ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো কাজে নিয়োজিত করা যাবে না।
সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। এছাড়া স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর ৩ নম্বর বিধি অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা প্রদান করার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রের যে কোনো ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারবে এবং নির্দেশিত হলে ওই ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ সেই অনুযায়ী দায়িত্ব পালন বা সহায়তা করতে বাধ্য থাকবে।
কী কারণে আরএমপির ওসিদের বদলি করা হয়েছে তা আদেশে উল্লেখ করা হয়নি।
এ বিষয়ে আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফাইন্যান্স) ফারুক হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বদলির কারণ সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।
তবে আরএমপির মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রফিকুল আলম বলেন, এটি পুলিশের একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। জনস্বার্থে তাদের বদলি করা হয়েছে।