২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৫:১০:১৭ অপরাহ্ন


আচরণবিধি লঙ্ঘনে উদ্বেগ, আজমত উল্লার ব্যাখ্যা চায় ইসি
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৫-২০২৩
আচরণবিধি লঙ্ঘনে উদ্বেগ, আজমত উল্লার ব্যাখ্যা চায় ইসি ফাইল ফটো


নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আজমত উল্লা খানের প্রার্থিতা কেন বাতিল করা হবে না, বিষয়টি নিয়ে তার ব্যাখ্যা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার (৪ মে) সন্ধ্যায় এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। গাজীপুর সিটিতে আচরণবিধি লঙ্ঘন দেখে কড়া হুঁশিয়ারির পর আবার একই ঘটনা ঘটায় ছুটির দিনে সভা ডাকে ইসি। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজমত উল্লাকে আগামী ৭ মে বেলা ৩টায় ইসিতে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে। এ ছাড়া সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে তার পক্ষে ভোট চেয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসানকে সতর্ক করা হয়েছে। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এ সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান, ইসি সচিব জাহাংগীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

ইতোমধ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলকে সতর্ক করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন। নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থীকে ৭ মে ইসিতে তলব করা হয়।

এমন পরিস্থিতিতে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ৪ মে বৃহস্পতিবার ফের নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খানের পক্ষে সভা করেন যা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়। আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে ব্যাপক তৎপরতার মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও প্রতিমন্ত্রীকে সামলাতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিইসি অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে বৈঠকে বসেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, দলীয় পর্যায়ে তাগাদা এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা চিঠি দেয়ার পরও ইসির নির্দেশনা উপেক্ষিত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে ইসি। এ অবস্থায় জরিমানা, জেল, উভয়দণ্ড এবং সর্বোচ্চ প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে কমিশনের। পরবর্তী পদক্ষেপে যাওয়ার আগে শেষবারের মতো আরেকবার সতর্ক করা হচ্ছে। ছুটির এই দিন সন্ধ্যায় প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সার্বিক পরিস্থিতি আলোচনার করে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বলেন, সিইসি, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবের উপস্থিতিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করা হয়। সতর্ক করার পরও আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হলে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা তো চাওয়া হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রীকেও চিঠি দেওয়া হচ্ছে ইসি সচিবালয় থেকে। এরপরও পুনরাবৃত্তি ঘটলে কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপে যাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হচ্ছে, ৪ মে প্রতিমন্ত্রী সভা করে মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানের পক্ষে ভোট চেয়েছেন। সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হওয়ার পরও মেয়র প্রার্থীর উপস্থিতিতে ভোট চেয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। বৃহস্পতিবার প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিবের কাছে এ পত্র পাঠানো হচ্ছে।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, আমি এখনও ইসির কোনো চিঠি পাইনি। সিটি করপোরেশন এলাকায় আমি কোনো সভা করিনি আজও। আচরণবিধি লঙ্ঘনও করিনি। আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে আমি বরাবরই সচেতন এবং এ বিষয়ে আমি সব সময় সহযোগিতার করে আসছি। কারও পক্ষে প্রচারে অংশ নেননি বলে দাবি করেন তিনি। রিটার্নিং অফিসারকে জানিয়ে কোনো ধরনের প্রটোকল ছাড়াই এলাকায় যাওয়া-আসা করেছেন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

এর আগে নৌকার প্রার্থীকে আগে এক দফা চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়। ৪ মে ফের আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি স্মরণ করে দিয়ে আবার চিঠি দেয় কমিশন। এতে ব্যাখ্যা তলব করা হয়। তা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার প্রতিমন্ত্রী সভা করে আপনার পক্ষে ভোট চেয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য প্রার্থিতা বাতিলের বিধান রয়েছে। এ অবস্থায় ৭ মে এসে কেন প্রার্থিতা বাতিল করা হবে না সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার কথা বলা হয়।