২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৬:৩৬:১৪ অপরাহ্ন


সুখী পরিবার গঠনে স্বামী-স্ত্রীর দায়িত্ব
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৫-২০২৩
সুখী পরিবার গঠনে স্বামী-স্ত্রীর দায়িত্ব ফাইল ফটো


দুনিয়াতে সুখময় সংসারকে জান্নাতের সঙ্গে তুলনা করা হয়। আর অশান্তি ও কলহ-বিবাদে জড়িত পরিবার জাহান্নাম সমতুল্য। পারিবারিক জীবনে সুখ-শান্তি ও কল্যাণের জন্য স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও ভালোবাসার বিকল্প নেই। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশিত পথ ও পদ্ধতির অনুসরণেই মিলবে এ শান্তি ও কল্যাণ। সংসার জীবনে সুখের জন্য স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই রয়েছে বিশেষ করণীয় ও দায়িত্ব। সেসব দায়িত্ব ও করণীয়গুলো কী?

স্বামীর দায়িত্ব: নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের আলোকে স্ত্রী ও সংসারের প্রতি রয়েছে স্বামীর অনেক দায়িত্ব। সুন্নাহ মোতাবেক এসব দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারলেই সংসার জীবনে আসবে শান্তি। পরকালীন জীবনে মিলবে মুক্তি। তাহলো-

১. দ্বীনদার স্ত্রী গ্রহণ করা: পারিবারিক জীবনে শান্তির জন্য দ্বীনদার নারীর বিকল্প নেই। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে বিয়ে করার ইচ্ছা করে, সে যেন দ্বীনকে প্রাধান্য দেয়। অন্য হাদিসে এসেছে, চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদের বিয়ে করা হয়- সম্পদ, বংশমর্যাদা, সৌন্দর্য ও দ্বীনদারি। সুতরাং তুমি দ্বীনদারিকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (বুখারি)

২. ভালোবাসা মুখে প্রকাশ করা: স্ত্রীর প্রতি স্বামীর মনে থাকা ভালোবাসা বাস্তবে দেখানো ও মুখে প্রকাশ করা। হাদিসে এসেছে-

হজরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা সম্পর্কে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার মনে তার প্রতি ভালোবাসা ঢেলে দেওয়া হয়েছে।’ (মুসলিম)

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বলেছেন, ‘সবার চেয়ে আয়েশা আমার কাছে এমন প্রিয়, যেমন সব খাবারের মধ্যে সারিদ (আরবের বিশেষ এক ধরনের খাদ্য) আমার কাছে বেশি প্রিয়।’ (বুখারি)

তাই স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার কথা মুখে প্রকাশ করুন।

৩. স্ত্রীর সামনে নিজেকে পরিপাটি রাখা: পুরুষরা যেমন তাদের সঙ্গিনীকে সুন্দরভাবে দেখতে পছন্দ করে। ঠিক একইভাবে স্ত্রীরাও তাদের সঙ্গীকে সুন্দরভাবে দেখতে পছন্দ করে। হাদিসে পাকে এসেছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীদের জন্য এমনই পরিপাটি থাকা পছন্দ করি, যেমন আমি তাদের ক্ষেত্রে সাজগোজ করে থাকতে পছন্দ করি।’ (বায়হাকি ১৪৭২৮)

৪. স্ত্রীর প্রতি আন্তরিক থাকা: সব সময় স্ত্রীর সঙ্গে আন্তরিকতাপূর্ণ আচরণ করতে হবে। হাদিসে পাকে এসেছে- হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভালোবেসে কখনো কখনো আমার নাম হুমায়রা বা লাল গোলাপ বলে ডাকতেন।’ (ইবনে মাজাহ) তিনি আরও বলেন, পাত্রের যে অংশে আমি মুখ রেখে পানি পান করতাম তিনি সেখানেই মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে পছন্দ করতেন।’ (মুসলিম)

৫. স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা: পারিবারিক সুখ-শান্তির অন্যতম চাবিকাঠি নিজ স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা। তার পাওনাগুলো পরিপূর্ণভাবে আদায় করা। তার অধিকার বুঝিয়ে দেওয়া। তার নিত্যদিনের শারীরিক ও মানসিক চাহিদা পুরণ করা। হাদিসে পাকে এসেছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ভালো যে তার পরিবারের কাছে ভালো। আর আমি আমার পরিবারের কাছে তোমাদের চেয়ে উত্তম।’ (তিরমিজি)

৬. স্ত্রীর মনোরঞ্জন করা: পারিবারিক সুখ-শান্তির জন্য স্বামী তার স্ত্রীর মনোরঞ্জনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করবে। এটি প্রত্যেক স্বামীর জন্য অপরিহার্য। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ স্ত্রীদের সঙ্গে বিনোদনমূলক আচরণ করেতেন। হাদিসে পাকে এসেছে- হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এক সফরে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি তার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করে তার আগে চলে গেলাম। এরপর আমি মোটা হয়ে যাওয়ার পর (অন্য আরেক সফরে) তার সঙ্গে আবারও দৌড় প্রতিযোগিতা করলাম, এবার তিনি (রাসুলুল্লাহ) আমাকে পেছনে ফেলে দিয়ে বিজয়ী হলেন। তিনি বলেন, এ বিজয় সেই বিজয়ের বদলা।’ (আবু দাউদ)

৭. একের কাজে অপরের সহযোগিতা: সুখী পারিবারিক জীবনের জন্য সুযোগ পেলেই পারিবারের লোকদের কাজে সহায়তা করতে হবে। নবিজিও তা করতেন। হাদিসে পাকে এসেছে- হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, নবিজি কি পরিবারের লোকদের তাদের ঘরোয়া কাজে সহযোগিতা করতেন? তিনি বললেন- হ্যাঁ, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরের লোকদের তাদের কাজে সহযোগিতা করতেন এবং নামাজের সময় হলে নামাজের জন্য বের হয়ে যেতেন।’ (বুখারি)

৮. পরিবারকে সময় দেওয়া: পরিবারের সুখ-শান্তির জন্য স্ত্রীর সঙ্গে অধিক সময় কাটানো। নবিজি পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ অবস্থানের উপদেশ দিতেন। হাদিসে পাকে এসেছে- হজরত উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে দু-জাহানের মুক্তির পথ কী? তা জানতে চাইলাম। উত্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনটি উপদেশ দিলেন-

১. কথাবার্তায় আত্মসংযমী হবে।

২. পরিবারের সঙ্গে তোমার অবস্থানকে দীর্ঘ করবে।

৩. নিজের ভুল কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হবে।’ (তিরমিজি)

৯. স্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করা: পারিবারিক যে কোনো কাজে স্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করা। স্ত্রীকে পরিবারের কাজের ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া। এতে পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ বেড়ে যায়। তাই জীবনের যে কোনো বিষয়ে জীবন সঙ্গিনীর মতামতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে। নবিজি শুধু ঘরোয়া বিষয়ই নয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ক্ষেত্রে স্ত্রীদের মতামত নিতেন। ‘হুদায়বিয়ার সন্ধি’ নামক ইসলামি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপটে নবিজি তার স্ত্রী উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছিলেন। পরবর্তী সময় যা অতি কার্যকরী বলে বিবেচিত হয়। (বুখারি)

১০. আল্লাহর কাছে দোয়া করা: পরিবারে সুখ-শান্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। কীভাবে দোয়া করতে হবে আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে তা শিখিয়ে দিয়েছেন। তাহলো-

رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ اَزۡوَاجِنَا وَ ذُرِّیّٰتِنَا قُرَّۃَ اَعۡیُنٍ وَّ اجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِیۡنَ اِمَامًا

উচ্চারণ: ‘রাব্বানা হাবলানা মিন আযওয়াঝিনা ওয়া জুররিয়্যাতিনা কুররাতা আইউনিও ওয়অঝআলনা লিলমুত্তাকিনা ইমামা।’

অর্থ: ‘হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান করো এবং আমাদের মুত্তাকিদের জন্য আদর্শস্বরূপ করো (সুরা ফুরকান: আয়াত ৭৪)

স্ত্রীর দায়িত্ব: নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের আলোকে স্বামী ও সংসারের প্রতি রয়েছে স্ত্রীর অনেক দায়িত্ব। সুন্নাহ মোতাবেক এসব দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারলেই সংসার জীবনে আসবে শান্তি। পরকালীন জীবনে মিলবে মুক্তি। তাহলো-

১. স্বামীর প্রতি সম্মান দেখানো: স্ত্রীর কর্তব্য হচ্ছে স্বামীর আনুগত্য করা। স্বামীর প্রতি সম্মান দেখানো। তাদের মর্যাদার অবহেলা না করা। হাদিসে পাকে এসেছে- কায়িস ইবনু সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত, ‘আমি যদি কোনো মানুষকে মেজদা করার অনুমতি দিতাম তবে স্ত্রীদেরকে দিতাম তাদের স্বামীদেরকে সেজদা করতে। কেননা আল্লাহ স্ত্রীদের উপর স্বামীদের অধিকার দিয়েছেন।’ (আবু দাউদ ২১৪০)

২. স্বামীর কথা মেনে চলা: স্ত্রীর জন্য স্বামীর কথা মেনে চলা অপরিহার্য। তবে ইসলামের নির্দেশের বর্হিভূত কোনো কথার নির্দেশ দিলে তা মানা যাবে না। হাদিসে পাকে এসেছে- নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘স্বামী যখন তার প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডাকে, সে যেন অবশ্যই তার কাছে আসে, যদিও সে চুলার ওপর (রান্নার কাজে) ব্যস্ত থাকুক।’ (তিরমিজি)

৩. স্বামীকে কষ্ট না দেওয়া: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে নারী তার স্বামীকে জীবনযাপনের ক্ষেত্রে দুনিয়াতে কষ্ট দেয়, তাকে জান্নাতের হুর-গেলমানরা লানত দিয়ে বলে, হে হতভাগা! তাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহ তাআলা তোমাকে নিশ্চিহ্ন করুন!’(তিরমিজি)

৪. স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা: স্বামীর সন্তুষ্টিতে রয়েছে মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি। আর আল্লাহ কোনো স্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্ট হলে পরকালে সে সফলকাম। হাদিসে পাকে এসেছে- নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যদি কোনো স্ত্রী এমতাবস্থায় মারা যায় যে, তার স্বামী তার ওপর সন্তুষ্ট ছিল, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (তিরমিজি)

৫. স্বামীর জন্য সাজগোজ: একবার নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক সফর থেকে ফিরে মদিনায় আসার পর বাড়িতে না গিয়ে সাহাবিদের বললেন, তোমরা এখানে থেমে যাও এবং বাড়িতে খবর পাঠাও যেনো তোমাদের স্ত্রীরা নিজেদের তোমাদের জন্য প্রস্তুত করে রাখতে পারে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে সাজগোজ করে নিজেকে উপস্থাপন করতেন।’ (বুখারি)

৬. স্বামীর দোষ গোপন রাখা: নারীদের মধ্যে এ প্রবণতা খুব বেশি দেখা যায় যে, তারা স্বামী দোষ অন্যের কাছে বলে বেড়ায়। অনেকে এটাকে মন হালকা করার অজুহাত দেখায়। না এমনটি করা যাবে না। এটা ইসলামি শরিয়তে হারাম ও কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। এতে করে সংসারে কলহ ও অবিশ্বাস সৃষ্টি হয় এবং সুখ-শান্তি চলে যায়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘ধ্বংস তাদের জন্য, যারা অগ্র-পশ্চাতে দোষ বলে বেড়ায়।’ (সুরা হুমাজাহ: আয়াত ১)

৭. স্বামীর আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা: সুখী পারিবারিক জীবনের জন্য স্বামীর আত্মীয়-স্বজনের প্রতি স্ত্রীর এবং স্ত্রীর আত্মীয়দের প্রতি স্বামীর সুসম্পর্ক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমনিতে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার প্রতি ইসলামে খুব বেশি গুরুত্বারোপ করেছে। হাদিসে আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট করা সম্পর্কে খুব কড়াকড়ি করা হয়েছে। হাদিসে পাকে এসেছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)

৮. বিপদের সময় স্বামীর পাশে দাঁড়ানো: বিপদ-আপদ ও পেরেশানির সময় স্বামীকে সান্ত্বনা দেওয়া সুন্নত। স্বামী বিপদে তার পাশে দাঁড়ানো আবশ্যক। তাকে সে সময় শান্তনা দেওয়া। হাদিসে পাকে এসেছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (প্রথম) অহি পাওয়ার পর অজানা শঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে ঘরে ফিরে এলে হজরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাকে সান্ত্বনা দেন, ‘কখনো না (শঙ্কার কোনো কারণ নেই) নিশ্চয়ই আপনি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখেন। অন্যের বোঝা বহন করেন। মেহমানের আপ্যায়ন করেন।’ (আপনার কিছু হবে না) (বুখারি)

৯. স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেরাজ থেকে ফিরে এসে বলেন, ‘আমি জাহান্নাম কয়েকবার দেখেছি, কিন্তু আজকের মতো ভয়ানক দৃশ্য আর কোনো দিন দেখিনি। তার মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি দেখেছি। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! কেন? তিনি বললেন, তাদের অকৃতজ্ঞতার কারণে। জিজ্ঞাসা করা হলো, তারা কি আল্লাহর অকৃতজ্ঞতা করে? বললেন, না, তারা স্বামীর অকৃতজ্ঞতা করে, তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না। তুমি যদি তাদের কারও ওপর যুগ-যুগ ধরে অনুগ্রহ কর, এরপর কোনো দিন তোমার কাছে তার বাসনা পূর্ণ না হলে সে বলবে, আজ পর্যন্ত তোমার কাছে কোনো কল্যাণই পেলাম না।’ (মুসলিম)

১০. অযথা সন্দেহ না করা: আল্লাহ বলেন, হে মুমিনরা, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাকো। নিশ্চয়ই কোনো কোনো অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গিবত করো না। (সুরা হুজুরাত: আয়াত ১২) তাই স্ত্রীদের উচিত, অযথা স্বামীদের কোনো কাজে সন্দেহ না করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পরস্পরের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে সুখী পরিবার গঠনে মনোযোগী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।