১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১০:৪৯:২৪ পূর্বাহ্ন


কিশোরগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রী ও সন্তানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৫-২০২৩
কিশোরগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রী ও সন্তানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার ফাইল ফটো


কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় এক প্রবাসীর স্ত্রী ও সন্তানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে স্বজনদের দাবি, শাশুড়ি ও ননদ মিলে সন্তানসহ ওই গৃহবধূকে হত্যা করেছেন।

সোমবার (১৫ মে) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শুম্ভুপুর পাক্কামাথা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহতরা হলেন ওই এলাকার ইতালি প্রবাসী ফরহাদ মিয়ার স্ত্রী জোনাকি আক্তার (২৮) ও তার ছেলে আলিফ (৩)।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাত বছর আগে উপজেলার কালিকাকপ্রসাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকার রইছ মিয়ার মেয়ে জোনাকি আক্তারের সঙ্গে শুম্ভুপুর পাক্কামাথা এলাকার ফারুক মিয়ার ছেলে ইতালি প্রবাসী ফরহাদ মিয়ার বিয়ে হয়। এটি ফরহাদের দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। শুম্ভুপুরে শ্বশুরবাড়িতে শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের সঙ্গে বসবাস করতেন জোনাকি। পারিবারিক বিষয় নিয়ে জোনাকির সঙ্গে প্রায়ই শাশুড়ি ও ননদের ঝগড়া হতো।

সবশেষ রোববার রাতেও শাশুড়ি ও ননদের সঙ্গে জোনাকির ঝগড়া হয়। সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঘরের ভেতরে জোনাকি ও তার ছেলেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত জোনাকি আক্তারের বড় বোন ঝর্ণা বেগম বলেন, আমার বোনকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ প্রবাসে থাকা স্বামী প্রায়ই যৌতুকের জন্য বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো। অত্যাচারের কথা বললে তাকে আমাদের বাড়িতে চলে আসতে বলি। কিন্তু সে আসতে চায় না। সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে সে সবকিছু সহ্য করে স্বামীর সংসার করতে চায়।

তিনি বলেন, রোববার রাতে হঠাৎ জোনাকি ফোন করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আমাকে দেখবে বলে সকালে তার বাসায় যেতে বলে। আমার সঙ্গে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সম্পর্ক ভালো না হওয়ায় আমি সেখানে যাইনি। আবার আজ সকাল ১০টার দিকে আমাকে কল দিয়ে বলে, আপা আমার আলমারিতে কিছু টাকা আর সোনা আছে সেগুলো তুই এসে নিয়ে যা। পরে আমি আমার স্বামী ও ভাবিকে বোনের বাসায় পাঠাই। তারা গিয়ে দেখে আমার বোন ও তার ছেলে বাসার রুমের ভেতরে গলায় দড়ি বাঁধা অবস্থায় ঝুলছে। এসময় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে যায়।

ঝর্ণা বেগম আরও বলেন, আমার বোনকে যৌতুকের জন্যই শাশুড়ি ও ননদ মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি বোন ও ভাগনে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক নওরিন ফাতেমা সুরভী বলেন, স্বজনরা হাসপাতালে আনলে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের মৃত অবস্থায় পাই। তাদের দুজনের গলায় দাগ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তাদের মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিন্নাহ বলেন, ইতালি প্রবাসীর স্ত্রীসহ সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে যাই। নিহতের গলায় আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। নিহতদের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।