রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে যারা আগামীতে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনসমূহ অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে সক্ষম হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে গঠিত সার্চ কমিটির সদস্যরা বঙ্গভবনে গেলে রাষ্ট্রপতি কমিটির সদস্যদের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য তাদের প্রশংসা করেন এবং ধন্যবাদ জানান।
অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা তাদের কার্যক্রমে সাচিবিক সহায়তাসহ সার্বিক সহায়তার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে সুপারিশ করার লক্ষ্যে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি ১০ জনের নামের তালিকা হস্তান্তর করেছে।
এসময় কমিটির সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, বাংলাদেশের মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন, সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. সামসুল আরেফিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সেক্রেটারি মো. জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি এ তালিকা থেকে একজন সিইসি ও চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন।
তিনি আরও জানান, খুব শিগগিরই নতুন সিইসি ও চারজন নির্বাচন কমিশনারের নাম গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
শেষ বৈঠকে গত মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ১০ জনের নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়।
স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে কোনো আইন ছিল না এদেশে। অবশেষে চলতি সংসদের সবশেষ অধিবেশনে উত্থাপনের পর বেশ কিছু সংশোধনী এনে পাস হয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার গঠন আইন।
আইন অনুসারে, আপিল বিভাগের বিচারকের নেতৃত্বে গঠন করা হয় সার্চ কমিটি। কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে রাজনৈতিক দল ও সমাজের সর্বোস্তর থেকে যোগ্য ব্যক্তির নাম চাওয়া হয়। আলোচনা করা হয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধির সঙ্গে।
গত ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশিষ্টজনদের মতামত নেয় সার্চ কমিটি। দুদিনের সভায় অধ্যাপক, গণমাধ্যমের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তি, সরকারি সাবেক কর্মকর্তা এবং সামরিক বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা, পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেন।
এসব বৈঠকে সার্চ কমিটির কাছে প্রস্তাবিত ৩২২টি নাম প্রকাশ করা হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এসব নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
আরও কয়েক দফা বৈঠকে নামের তালিকা সংক্ষিপ্ত করে কমিটি। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে শেষবারের মতো বৈঠকে বসে সার্চ কমিটি। প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠকশেষে জানানো হয়, চূড়ান্ত হয়েছে তালিকা।
এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সার্চ কমিটি গঠন করেন। আইন অনুযায়ী কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পেশ করার কথা ছিল।
সাংবিধানিক জটিলতা না হলেও নুরুল হুদা কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ১৫ ফেব্রয়ারি থেকে শূন্য রয়েছে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনের পদ।
রাজশাহীর সময় /এএইচ