১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ০৪:৪৯:৪৯ অপরাহ্ন


পার্থ’র নির্দেশেই তাঁকে একটি কোম্পানির ডিরেক্টর করা হয়েছিল, অর্পিতা
সুমাইয়া তাবাস্সুম:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৬-২০২৩
পার্থ’র নির্দেশেই তাঁকে একটি কোম্পানির ডিরেক্টর করা হয়েছিল, অর্পিতা পার্থ’র নির্দেশেই তাঁকে একটি কোম্পানির ডিরেক্টর করা হয়েছিল, অর্পিতা


ক'দিন আগে তাঁর আইনজীবী দাবি করেছিলেন, মক্কেলের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা পাওয়া গেলেও তিনি কিছুই জানতেন না। তিনি পরিস্থিতির শিকার। গোটা পর্বের মাস্টারমাইন্ড হলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, যাঁকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে দাবি করেছে ইডি। সেই অর্পিতার আইনজীবী আরও একধাপ এগিয়ে আদালতে দাবি করলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশেই তাঁকে একটি কোম্পানির ডিরেক্টর করা হয়েছিল। এবং রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রতিপত্তি এতটাই প্রবল ছিল, যে তাঁর নির্দেশ কেউ অমান্য করতে পারতেন না।

যদিও ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারকের এজলাসে বিভিন্ন যুক্তিতে অর্পিতার জামিনের আর্জি জানানো হলেও বুধবার তা খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক। আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য, যে বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তার সম্পর্কে অর্পিতা সম্পূর্ণ অন্ধকারে ছিলেন, এটা ধরে নেওয়া যায় না। পাশাপাশি অপরাধ যদি গুরুতর হয়, তাহলে শুধুমাত্র একজন মহিলা অভিযুক্ত হিসাবে তিনি জামিনের অধিকারী হতে পারেন না। এরপর তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে দেন বিচারক।

গত ২৯ মে ব্যাঙ্কশাল আদালতে সশরীরে হাজির করানো হয়েছিল অর্পিতাকে। তাঁর হয়ে প্রশ্ন করেন আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার। অর্পিতার তরফে আদালতে জানানো হয়, গত বছর অক্টোবরের পর থেকে তাঁর সম্পর্কে তদন্তকারী সংস্থা কোনও রিমান্ড লেটার বা তাঁকে কেন হেফাজতে রাখা প্রয়োজন, তার ব্যাখ্যা দেয়নি। এই মামলায় বেশ কয়েকজন সাক্ষীর বয়ান তুলে ধরে তদন্তকারীরা দাবি করেছিলেন, বিভিন্ন কোম্পানিতে পার্থর প্রয়াত স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের শেয়ার অর্পিতার নামে সাময়িকভাবে ট্রান্সফার করা হয়েছিল।

কারণ, পার্থর মেয়ে দেশের বাইরে থাকেন। অর্পিতার আইনজীবীর দাবি, পার্থর তরফে তাঁকে বিভিন্ন কোম্পানির ডিরেক্টর করা হয়েছিল এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশেই বিভিন্ন নথিতে তাঁকে সই করানো হতো। পার্থর প্রবল রাজনৈতিক দাপটের জন্য তাঁর অস্বীকার করা সম্ভব ছিল না। পাশাপাশি তাঁর আইনজীবীর আরও যুক্তি, এতদিন তদন্তে সহযোগিতার স্বার্থে অর্পিতা জামিনের আর্জি সেভাবে করেনইনি।

প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের যে ধারা বলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার সর্বোচ্চ সাজা সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। অর্পিতা প্রায় ১০ মাস জেলে রয়েছেন। এখনই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে, তেমন সম্ভাবনাও নেই। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। যদিও ইডির কৌঁসুলি ফিরোজ় এডুলজির যুক্তি ছিল, তদন্তে উঠে এসেছে, স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি পর্বের অনেক আগে থেকেই পার্থর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল অর্পিতার। জেরা পর্বে পার্থ বারবার দাবি করেছেন, সবকিছুর ব্যাখ্যা দিতে পারবেন অর্পিতা। আর অর্পিতা বলেছেন, সব জানতেন পার্থই। এভাবে আসলে দু'জন তদন্তকারীদের সুপরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়েছেন।