১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ০২:২৬:০১ অপরাহ্ন


মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ১০৫ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা (২য় অংশ)
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৬-২০২৩
মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ১০৫ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা (২য় অংশ) মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ১০৫ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা (২য় অংশ)


মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন আরো যা কিছু করতে চান: 

০১. ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব হ্রাস ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি।

০২. অর্থনৈতিক-সামাজিক-মানবিক শান্তিময় ও সমৃদ্ধ মহানগরী গড়ে তোলা।

০৩. এই মহানগরীকে সমগ্র বরেন্দ্র অঞ্চলভিত্তিক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

০৪. শিক্ষা ও সংস্কৃতি সমৃদ্ধ মহানগরীর বিশেষত্ব অর্জন।

০৫. মহানগরীর ভৌগোলিক আয়তন ৯৬ বর্গকিলোমিটার থেকে ৩৫০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত সম্প্রসারণ।

০৬. রাজশাহী শহরের পাশে জেগে উঠা পদ্মার চরে রিভারসিটি নির্মাণ।

দক্ষমানবসম্পদ সৃষ্টির জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন:

আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছি। কৃত্রিম মেধা দিয়ে যন্ত্রের মাধ্যমে সকল কাজ সম্পাদন করার জন্য উন্নতবিশ্ব পরিকল্পনা করেছে। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশসমূহ থেকে উন্নত দেশগুলো কর্মী আহ্বান করে থাকে। কিন্তু ভারত, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন থেকে যে পরিমাণ শ্রম বিদেশে বিনিয়োগ হয়, বাংলাদেশ সেই সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। কারণ, দক্ষমানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে  শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা জরুরি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জেলায় জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন, একটি দক্ষমানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম বিশ্বপ্রতিযোগিতায় যেন পিছিয়ে না পড়ে তাই এই শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে আমরাও  সামিল হতে চাই। এই মহানগরীতে শিক্ষার বুনিয়াদ সমৃদ্ধ হলেও জনসংখ্যার অনুপাতে আরো প্রতিষ্ঠান ও সমন্বিত শিক্ষা চালু করতে আমি নি¤েœাক্ত পরিকল্পনা ও প্রকল্প গ্রহণ করবো।

০১. রাজশাহীতে পুর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।

০২. ব্রিটিশ অথবা আমেরিকান কারিকুলামের আদলে রাজশাহীতে একটি ইংলিশ মাধ্যম ‘ও’ লেভেল, ‘এ’ লেভেল পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন। যেন আমাদের দেশের শিক্ষার্থীসহ বহির্বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও এই শহরে লেখাপড়ায় আগ্রহী হয় তার জন্য প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন।

০৩. মাধ্যমিক পর্যায়ে দুইটি সরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠার কাজ চলমান। দ্রুততম সময়ে স্কুল দুটো চালুকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ।

০৪. উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার জন্য একটি গার্লস ক্যাডেট কলেজ স্থাপন।

০৫. কারিগরি শিক্ষার জন্য স্বল্পমেয়াদি কোর্স চালু করে কম্পিউটার, ভোকেশনাল, নার্সিং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং একটি পূর্ণাঙ্গ কারিগরি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হবে। ইংরেজি, আরবী, কোরিয়ান ও জাপানী ভাষা শিক্ষার জন্য  ভাষা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হবে।

০৬. রাজশাহীতে সঙ্গীত, নাট্য ও নৃত্যকলার সমন্বয়ে একটি ললিতকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা।

০৭. নগরীতে একটি আর্কাইভ, আর্ট গ্যালারি ও সিটি মিউজিয়াম স্থাপন করা হবে।

স্বাস্থ্যসেবা: 

সারাবিশ্ব করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত হয়ে আমাদের স্বাস্থ্য পরিসেবার সীমাবদ্ধতা ইঙ্গিত করে গেছে। বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের অনেক জেলা থেকেই চিকিৎসা নিতে মানুষ ছুটে আসেন এই শহরে। এই বিশাল জনপদের মানুষের আশা ভরসার স্থান রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এই ক্ষেত্রে দিন দিন চাপ বাড়ছে, চিকিৎসাসেবার প্রাতিষ্ঠানিক সম্প্রসারণ ও নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সময়ের দাবি। চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত না করলে আধুনিক উন্নত চিকিৎসা নিতে মানুষ পার্শ্ববর্তী দেশ বা অন্যান্য দেশের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। অথচ প্রতিবছর এই নগরীর মেডিকেল কলেজসমূহ থেকে শত শত ডাক্তার এম.বি.বি.এস সনদ পাচ্ছেন। তাদের উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করতে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা প্রসারিত হয়নি। 

আমি দেশি ও বিদেশি সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে এই খাতকে আরো সমৃদ্ধ করতে চাই। মানুষ যেন নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, নিরাপদ খাদ্য, নিরাপদ পানি  এবং পরিসেবা পায় তার জন্য আমার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এই লক্ষ্যে স্বাস্থ্যসেবা খাতে নি¤েœাক্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

০১. রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে যুগপোযোগী করে গড়ে তোলা হবে।

০২.  নবনির্মিত শিশু হাসপাতালটি দ্রুত চালু করে শিশু চিকিৎসা উন্নত করা হবে।

০৩. সিটি হাসপাতালের আধুুনিকায়নের মাধ্যমে নগরীর পূর্বাঞ্চলের নাগরিক ও শিশুদের চিকিৎসা সেবা উন্নত করা হবে।

০৪. ওয়ার্ডভিত্তিক আরবান হেলথ কেয়ার বা নগর স্বাস্থ্যসেবা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হবে।

০৫. নাগরিকগণের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে অনলাইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হবে।

০৬. রাজশাহীস্থ হার্ট ফাউন্ডেশনকে একটি পূর্ণাঙ্গ হৃদরোগ হাসপাতালে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

০৭. সাধারণ রোগ নির্ণয় ও  চিকিৎসার  লক্ষ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া সদর হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে উন্নীত করে পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

০৮. রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ সুবিধা সম্প্রসারণ করা হবে।

০৯. রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নতমানের সেবার জন্য আধুনিক কেবিনের সংখ্যা বৃদ্ধি ও সকল সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।

১০. রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কার্ডিওলজি ইউনিটের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এনজিওগ্রাম, পেসমেকার স্থাপন, কালার ড্রপলারসহ সকল আধুনিক সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

১১.  রাজশাহীতে পূর্ণাঙ্গ ক্যানসার হাসপাতাল স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

১২. আধুনিক ও বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য বেসরকারি উদ্যোগে একটি স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

১৩.  রাজশাহী হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।

১৪.  একটি পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে।

১৫. কার্ডিও ভাসকুলার ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি চিকিৎসা হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে।

১৬.  ফরমালিনমুক্ত ও নিরাপদ খাদ্য বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।

১৭. বর্জ্য ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করা হবে। আধুনিক বর্জ্য রিসাইকেলিং প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে নগরীর ডাম্পিংকৃত বর্জ্য অপসারণের উদ্যোগ নেয়া হবে। নতুন একটি ডাম্পিং স্টেশন ও রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট নগরীর উত্তর প্রান্তে স্থাপনের জন্য প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে।

১৮. নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় ১২টি পাবলিক টয়লেট বা গণশৌচাগার নির্মাণ ও আধুনিকায়ন করা হবে। 

শিল্প-ব্যবসা বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো উন্নয়ন:

রাজশাহী শহরের আন্তঃথানা, আন্তঃজেলা, আন্তঃমহানগর ও বহির্দেশীয় যোগাযোগের ক্ষেত্র সম্প্র্রসারণ করা আমার লক্ষ্য। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নততর না হলে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সকল প্রকার সামাজিক ব্যবস্থাপনা ব্যাহত হয়। আমি এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। কারণ কৃষিকেন্দ্রিক এই জনপদে শিল্প, ব্যবসা বাণিজ্য গড়ে না উঠলে উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জন বিঘিœত হবে। সেই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সম্প্রসারণ করে রাজশাহী মহানগরীর সমৃদ্ধি আনা আমার লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে নি¤েœাক্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

০১. সোনামসজিদ-রাজশাহী-বনপাড়া-হাটিকুমরোল পর্যন্ত সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ।

০২. কাশিয়াডাঙ্গা-কাঠালবাড়িয়া হয়ে কোর্টের ঢালান মোড় পর্যন্ত ৪ লেনের রাস্তা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

০৩. রাজশাহী থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেয়া হবে। রাজশাহী-আব্দুলপুর রেলপথ ডুয়েল গেজে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়া হবে। 

০৪. রাজশাহী-খুলনা-মোংলা-পোর্ট সংযোগ গড়ে তুলতে আরো একটি আন্তঃমহানগর যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন চালু করা হবে। যাতে করে বহির্দেশীয় বাণিজ্যে আমদানি-রপ্তানি সহজীকরণ সম্ভব হয়।

০৫. রাজশাহী থেকে গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ ঘাট হয়ে ভারতের ধূলিয়ান ও মায়া পর্যন্ত নৌবন্দর চালু করে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য এবং নতুন যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।

০৬.  রাজশাহী টু কলকাতা ট্রেন ও রাজশাহী টু কলকাতা বিমান এবং রাজশাহী টু কলকাতা সরাসরি বাস সার্ভিস চালু করা হবে। এছাড়াও রাজশাহী থেকে রহনপুর হয়ে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল দিয়ে নেপাল পর্যন্ত ট্রেন যোগাযোগের উদ্যোগ নেয়া হবে।

০৭. রাজশাহী বিমানবন্দর সম্প্রসারণ কাজ চলমান। রাজশাহী-কক্সবাজার বিমান যোগাযোগ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে সাপ্তাহিক ট্রিপ বৃদ্ধি করা হবে।

০৮. রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে কার্গো বিমান চালুর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য দেশে রাজশাহী অঞ্চলের কৃষিজাতপণ্য, শিল্পজাতপণ্য রপ্তানির ব্যবস্থা করা হবে। এর জন্য কনটেইনার অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে। রাত্রিকালীন বিমান ওঠানামার জন্য বিমানবন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ ও  আলোকায়নের ব্যবস্থা করা হবে।

০৯. সিটি অ্যাপস চালু করে নগর পরিসেবা সংক্রান্ত বিষয়ে নগরবাসীর পরামর্শ ও মতামত গ্রহণ করার উদ্যোগ নেয়া হবে। 

১০.  নগরীতে ২টি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন আরো ৫টি নির্মাণ করা হবে। 

১১.  রাজশাহী বিসিক-২ এ শিল্প কলকারখানা স্থাপন ও দ্রুত চালু করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

১২. ট্যানারি শিল্প ও লেদার ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপন করা হবে।

১৩. রাজশাহীতে মাঝারি, কুটিরশিল্প ও ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে স্থায়ী পণ্যমেলা প্রাঙ্গণ চালু করা হবে।

১৪. আম ও অন্যান্য ফলমূলসহ উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য সংরক্ষণ ও বিপণনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

১৫. ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

১৬. ব্যবসাবান্ধব নিরাপদ পরিবেশ বা নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে। যেন বিদেশি বিনিয়োগকারীগণও বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ হন।

১৭. বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যবসায়ী, জনগণ ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের ব্যবস্থা করা হবে। এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে।

১৮. মহানগরীর সকল বাজারের পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।

১৯. মহানগরীর বাজার ও অন্যান্য ভবনে অগ্নিনির্বাপণের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণের জন্য ল্যাডার মেশিনসহ রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের অন্যান্য সক্ষমতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

২০. পিপিপির-আওতায় বহুতল বাজারের নির্মাণকাজ দ্রুত সমাপ্ত করা এবং সাহেব বাজার, তালাইমারি, বিনোদপুর, লক্ষীপুর, কোটর্, নওদাপাড়া, শালবাগান, ভদ্রা ও অন্যান্য সমস্ত বাণিজ্যিক এলাকায় নতুন বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।

২১. নওদাপাড়ার সন্নিকটে একটি পাইকারি সবজি ও মৎস্য বাজার গড়ে তোলা হবে।

২২. সরকারি সহায়তায় স্বল্প আয়ের মানুষের আবাসন সমস্যা নিরসনের জন্য ৫০০/৬০০ বর্গফুটের বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে।

২৩ নগরীর বিভিন্ন মৌজায় খাসজমি চিহ্নিত করণ ও তালিকা তৈরি করা হবে।

২৪. রাজশাহীর পর্যটন মোটেলকে স্টার মানে উন্নীত করা হবে। নতুন নতুন স্টার মানের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সমন্বয়ের মাধ্যমে স্থাপন করা হবে।

২৫. প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নগরীতে একটি কেন্দ্রীয় স্লটার হাউজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে। এছাড়াও নগরীর শহরতলীতে ছোট ছোট স্লটার হাউজ স্থাপন করা হবে।

২৬. সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, বরেন্দ্র মিউজিয়াম, ফায়ারব্রিগেড, সদর হাসপাতাল, ঘোষপাড়া, চৌদ্দপাই মোড় প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নেয়া হবে।

২৭. একটি জিলেটিন ফ্যাক্টরি তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

২৮. অটোরিক্সা স্ট্যান্ড নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।

২৯. প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হবে।

ক্রীড়া-সংস্কৃতি ও মননচর্চার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ:

০১. রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের উদ্যোগ অব্যাহত রাখা হবে।

০২. খেলাধুলার জন্য বিকেএসপির চলমান কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

০৩. জাতীয় প্রিমিয়ার ডিভিশন ফুটবল লীগ নিয়মিত চালু রাখা হবে।

০৪. মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সকে স্টেডিয়ামসহ পূর্ণাঙ্গ ক্রীড়া কমপ্লেক্স হিসেবে গড়ে তোলার কাজ অব্যাহত রাখা হবে।

০৫. বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম টেনিস কমপ্লেক্সসহ মহানগরীতে একাধিক জিমনেসিয়াম ও ইনডোর ক্রীড়া কমপ্লেক্সে উন্নয়ন করা হবে।

০৬. মহানগরীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠগুলো সারা বছরব্যাপী খেলার উপযোগী করে রাখা ও বিভিন্ন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হবে।

০৭. মিয়াপাড়াস্থ রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগারের নির্মাণাধীন ভবনটি দ্রুত নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করে কার্যক্রম চালু করা হবে।

০৮. নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে বহুমুখী সুবিধাসম্পন্ন নাগরিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে, যেখানে কাউন্সিলরগণের স্থায়ী কার্যালয় থাকবে এবং অডিটোরিয়াম ও কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থা থাকবে।

০৯. রাজশাহী নগরীর প্রগতিশীল বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা হবে।

১০. নগরীতে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত গ্রন্থাগারগুলোর তত্ত্বাবধান ও প্রণোদনা প্রদান করা হবে।

১১. জীবনানন্দ মেলা, নাট্যোৎসব, কান্তকবির মেলাসহ অন্যান্য নিয়মিত সামাজিক সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে নগরীর সাংস্কৃতিক আবহকে প্রাণবন্ত রাখা হবে।

১২. রাজশাহী রেডিও সেন্টারের উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করা হবে।

১৩. রাজশাহীতে একটি পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে।

১৪. ইন্টারনেট সংযোগ ক্যাবলগুলো বৈদ্যুতিক পোল-এ দৃষ্টিকটূভাবে ঝুলে থাকায় সেগুলো সিস্টেমে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেয়া হবে। 

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক উদ্যোগ:

০১. রাজশাহী বিভাগীয় মডেল মসজিদ মেহেরচন্ডীতে স্থাপন করা হবে।

০২. মাদ্রাসা মাঠের সম্প্রসারণ করা হবে। 

০৩. নগরীর উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব দিকে ২টি গোরস্থান তৈরি করা হবে।

০৪. ধর্মসভা ও হনুমানজি আখড়ায় ২টি দৃষ্টিনন্দন মন্দির নির্মাণ করা হবে।

০৫. যুবসমাজের অবক্ষয়রোধে মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 জলবায়ু পরিবেশ ও বিনোদন অবকাঠামো উন্নয়ন:

০১. ব্যাপক বৃক্ষরোপণ ও পদ্মাতীর ঘেঁষে সবুজ বেস্টনি স্থাপন।

০২. নদীর চর ও অন্যান্য খাসজমিতে বনায়নের উদ্যোগ গ্রহণ।

০৩. নগরীতে ওয়ার্ডভিত্তিক শিশুপার্ক নির্মাণ।

০৪. বাংলাদেশ বিল্ডিং কোড যথাযথভাবে অনুসরণের জন্য নাগরিকগণকে উদ্বুদ্ধকরণ।

০৫. শেখ রাসেল শিশু পার্ক, শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা, শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী পার্কসহ সকল উদ্যানের উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন।

০৬. উষ্ণায়ন ও চরম আবহাওয়ায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং নগরবাসীর জীবন যাত্রার অনুকূল পরিবেশ রক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞগণের সুপারিশক্রমে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

০৭. মিনি সাফারি পার্ক ও এভিয়ারি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।

প্রতিবন্ধী ও অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের উন্নয়ন প্রণোদনা:

০১. প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী প্রতিবন্ধীবান্ধব পরিবেশ ও অবকাঠামো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

০২. প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসার জন্য জাতীয় নীতি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা।

০৩. প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র স্থাপন।

০৫. রাষ্ট্রীয় সহায়তায় আশ্রয়নের সুবিধাসহ অটিস্টিক শিশুদের জন্য শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হবে।

মুক্তিযুদ্ধ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ:

০১. রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও পার্শ্ববর্তী এলাকার গণকবরসমূহ চিহ্নিত করে গণকবর সংরক্ষণের কাজ অব্যাহত রাখা।

০২. ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও  সংগঠক এবং বিশিষ্ট নাগরিকদের নামে রাস্তা-ঘাট, মোড় ও স্থাপনার নামকরণ করা হবে।

০৩. সোনাদিঘী সিটি সেন্টারের পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।

০৪. রাজশাহী রেলস্টেশন, বিমানবন্দর ও সড়কের মোড়ে মোড়ে বরেন্দ্র অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য স্মারক স্থাপন করা হবে।

০৫. হযরত শাহ মখদুম রূপোশ (রহ.) এর রওজা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

০৬. জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান সমাধি কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রবীণ ও শিশুদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা:

০১. নগরীর হাসপাতালসহ সরকারি ও বেসরকারি সকল দপ্তরে প্রবীণদের জন্য বিশেষ হেল্প ডেস্ক স্থাপন।

০২. রাষ্ট্রীয় সহায়তায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত প্রবীণ নিবাস স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

০৩. প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিশু-কিশোরদের বিনোদন ও মানসিক স্বাস্থ্য গঠনের লক্ষ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে উদ্বুদ্ধকরণ এবং কাউন্সিলিং সেল গঠন করা হবে। এছাড়াও জন্মনিবন্ধন ও শিশু জরিপের মাধ্যমে টিকাদান সুনিশ্চিত করা হবে।

০৪. কৃতি শিক্ষার্থীরদের নিয়মিত সংবর্ধনা ও পুরস্কার প্রদান অব্যাহত রাখা হবে।

০৫. নগরীর সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে মানসম্মত ও লেখাপড়ার উপযোগী করে গড়ে তুলে প্রাথমিক শিক্ষার সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হবে।

সামাজিক সুরক্ষা ও নারী উন্নয়ন:

০১. নারীর প্রতি সহিংসতা রোধের লক্ষ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করে সর্বত্র মা-বোনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

০২. নারীর আত্মকর্মসংস্থান ও স্বনির্ভরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সিডিসি ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের সহায়তায় নারীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ, আইটি ভিত্তিক উদ্যোগ, কুটিরশিল্প ও হস্তশিল্প স্থাপন ও বিপণনের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

০৩. বাল্যবিবাহ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বাংলাদেশ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় সামিল হয়ে রাজশাহী মহানগরীকে যোগ্য অংশীদার হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেই লক্ষ্যে আমার নির্বাচনী ইশতেহারে উন্নয়ন প্রকল্পের রূপরেখার প্রতি আপনাদের সমর্থন ও অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করি। এই অঙ্গীকার সামনে নিয়ে আমি মেয়র পদপ্রার্থী। নিজেকে এই অঙ্গীকারের বিশ্বাসযোগ্য ও আস্থাভাজন বলে মনে করি। রাজশাহীর মহানগরীর সর্বাত্মক উন্নয়ন, পরিবেশ এবং সৌন্দর্য তার সাক্ষী। একই সঙ্গে আমার ধমনীতে বহন করি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সিপাহসালার শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানের উত্তরাধিকার। আমি এই মাটিরই সন্তান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্নেহধন্য এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন আপনাদের অকুণ্ঠ সমর্থন প্রত্যাশা করে। আমি বিশ্বাস করি রাজশাহীবাসী উন্নয়নের পক্ষে। 

আমরা মতভেদ ভুলে নগরীর উন্নয়নের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হই। আগামী ২১ জুন ২০২৩ অনুষ্ঠিতব্য সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে পুনঃনির্বাচিত করে আপনিও হয়ে উঠুন মেগাসিটি বিনির্মাণ অভিযাত্রার গর্বিত অংশীদার।