পুরুষদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা যেন দিন দিন বাড়ছে! এর থেকে সৃষ্ট রোগ সম্পর্কে সব কিছু জানা থাকা সত্ত্বেও নিজেকে শুধরে নেওয়ার কথা ভাবেন না অনেকেই। বেশিরভাগ পুরুষ এবং কিছু শতাংশ মহিলা তাঁদের জীবন বা পরিবারের পরোয়া না করেই অবাধে সিগারেটের নেশায় মত্ত থাকেন। তাঁদের অবর্তমানে পরিবারের বাকিদের কী হবে, সে কথা ভেবেও দেখেন না তাঁরা। এই অভ্যাস থেকে নিজেকে বের করে আনা খুব একটা সমস্যাদায়ক না হলেও তাঁরা আসলে চেষ্টাই করেন না।
কিন্তু এক্ষেত্রে সমস্যা শুধু যাঁরা সিগারেট খাচ্ছেন তাঁদেরই- এমনটা কিন্তু নয়। আশেপাশে থাকা বন্ধু, পারিবারিক সদস্যরাও এর দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন।
সাম্প্রতিক একটি পরিসংখ্যান এই জায়গাটিতেই নাড়া দিয়েছে, যেখানে ধূমপানে অভ্যস্ত পুরুষদের স্ত্রীরাও প্যাসিভ স্মোকিংয়ের কারণে রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানা গেছে। তাঁদের ছাড়া সিগারেটের ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্ত্রী এবং পরিবারও। কানপুরের জিএসভিএম হাসপাতালের চেস্ট ডিপার্টমেন্টের একটি নতুন গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে যে বর্তমানে মহিলারা প্রচুর পরিমাণে সিওপিডি রোগে ভুগছেন। যদিও তাঁরা কখনওই সিগারেটের নেশা করেননি।
বর্তমানে ওই সমীক্ষায় দেখা গেছে, ধূমপান ছাড়াই ফুসফুসের রোগের শিকার হচ্ছেন নারীরা। কানপুরে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘস্থায়ী অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজে আক্রান্ত নারীদের বেশিরভাগই কখনও ধূমপান করেননি। তবে তাঁদের স্বামীদের সিগারেটের নেশা রয়েছে।
জিএসভিএম মেডিক্যাল কলেজের চেস্ট ডিপার্টমেন্টের ওই বিশেষজ্ঞ দলটি সিওপিডি রোগে আক্রান্ত প্রায় ১৭০ জনের উপর গবেষণা করে দেখেছে যে প্রায় ২৬ শতাংশ মানুষ এই রোগের কবলে পড়েছেন যাঁরা কখনও একটিও সিগারেট খাননি। একই সময়ে, ৫৫ শতাংশ আক্রান্ত নারীর পরিসংখ্যান মিলেছে যাঁদের স্বামী, বাবা বা পরিবারের অন্য কোনও সদস্য বাড়িতে থেকেই সিগারেট খান।
নতুন প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে , সিগারেটের কারণে ক্ষতির শিকার ব্যক্তিরা কেবল ধূমপায়ীরাই নয়, যাঁরা কখনও সিগারেট স্পর্শ করেননি তাঁরাও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কারণ, সিগারেটের ধোঁয়া বাতাসে ছড়িয়ে সবার নিঃশ্বাসে মিশে গিয়ে প্রত্যেককে ভীষণ অসুস্থ করে তুলছে। প্রতি বছর প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ সিগারেটের বিষক্রিয়ায় মারা যাচ্ছেন এবং ৮০ শতাংশ মানুষ মারা যাচ্ছে তামাকজাত অন্য পদার্থের সেবনে।
রাজশাহীর সময় / এম জি