২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ০৮:১৫:০৮ অপরাহ্ন


অ্যাম্বুল্যান্স দুর্ঘটনায় চালক-সহ বেঁচে রইল না কেউ
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৬-২০২৩
অ্যাম্বুল্যান্স দুর্ঘটনায় চালক-সহ বেঁচে রইল না কেউ অ্যাম্বুল্যান্স দুর্ঘটনায় চালক-সহ বেঁচে রইল না কেউ


ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অ্যাম্বুল্যান্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আর কেউ বেঁচে রইল না। ঘটনাস্থলেই মারা যায় একই পরিবারের সাত সদস্য। সেখান থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয় অ্যাম্বুল্যান্সের চালক মৃদুল মালোকে (২৪)। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৫টার দিকে মারা যান মৃদুল।

তার মৃত্যুর বিষয়টি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার। মৃদুল ফরিদপুরের গুহলক্ষীপুর এলাকার সুভাষচন্দ্রর ছেলে।

অ্যাম্বুল্যান্সের চালক মৃদুল মালো ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানান, কয়েকটি মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতির কারণে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন।

এর আগে শনিবার বেলা ১১টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রাম এলাকায় ফ্লাইওভারের ওপর এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় নিহত অন্য সাতজনের বাড়ি বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামে।

তারা হলেন ওই গ্রামের সৌদিপ্রবাসী আজিজার শেখের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৫০), তার বড় মেয়ে ও শেখর ইউনিয়নের মাইটকুমড়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী কমলা পারভীন (৩২), কমলা পারভীনের বড় ছেলে আরিফ (১৩), মেজো ছেলে হাসিব (৮), কন্যা হাফসা (২) এবং তাসলিমার মেজো মেয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়নের কুচিয়াগ্রামের সেনা সদস্য মাহামুদুল হাসান রনির স্ত্রী বিউটি পারভীন (২৭), বিউটি পারভীনের ছেলে মেহেদী (১০)।

নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, তাসলিমা বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হলে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে যান।

প্রায় দেড় মাস আগে ঢাকায় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিয়ে মেজো মেয়ে বিউটি বেগমের বাসায় অবস্থান করছিলেন। নিহত তাসলিমা বেগমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ঢাকার কদমতলী এলাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন তারা। বেলা ১১টার দিকে ভাঙ্গার মালিগ্রাম ফ্লাইওভারের অ্যাপ্রোস সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সটি ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরে যায়। এ সময় চালককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হলেও অ্যাম্বুল্যান্সে থাকা সাতজন দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈমুর ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে বাড়ির ফেরার পথে মালিগ্রাম ফ্লাইওভারের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সটি ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আগুন ধরে যায়।

এতে অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে থাকা সাতজনই মারা যায়। লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের সহায়তায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মাদারপুর হাইওয়ে রিজিয়নের এসপি মাহবুবুর রহমান বলেন, গাড়ির ইঞ্জিন বিস্ফোরিত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, নিহতরা একই পরিবারের সদস্য। নিহতদের লাশ দাফনের জন্য প্রত্যেক লাশপ্রতি ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এই কমিটির প্রধান। তাদের দুই কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।