১৯ মে ২০২৪, রবিবার, ০২:৫৬:২৩ পূর্বাহ্ন


কুমিল্লায় গলা কেটে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ইকবাল গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৭-২০২৩
কুমিল্লায় গলা কেটে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ইকবাল গ্রেফতার কুমিল্লায় গলা কেটে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ইকবাল গ্রেফতার


কুমিল্লার কোতয়ালীতে স্যানিটারি মিস্ত্রির গলা কেটে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ইকবাল হোসেন’কে দীর্ঘ ১৭ বছর পর গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।

৭ জুলাই কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানাধীন চম্পকনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার ইকবাল হোসেন (৪০), জেলা- কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানার চম্পকনগর সাতরা গ্রামের মোঃ হোসেন মিয়ার ছেলে।

শনিবার র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

র‌্যাব জানায়, নিহত ভিকটিম রানা খান (২০) কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানাধীন চম্পকনগর এলাকার বাসিন্দা। সে পেশায় একজন স্যানিটারি মিস্ত্রি ছিলেন। গত (৩০ এপ্রিল ২০০৬)  প্রতিদিনের ন্যায় রাতের খাবার শেষ করে রানা খান নিজ শয়ন কক্ষে ঘুমাতে যায়। রাত সাড়ে ১১টায়  তার প্রতিবেশী বন্ধু জুয়েল মিয়া (২০) বাড়ীতে এসে রানার মা’কে বলে রানা খান’কে নিয়ে স্থানীয় বিলে মাছ ধরতে যাবে। এদিন  রাতে নিহত রানা খান বাড়ীতে ফেরত না আসায় তার পিতা-মাতা সকালে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করতে থাকেন এবং দুপুর ৩টায় লোকমুখে শুনতে পায়, উত্তরণ হাউজিং সোসাইটির দক্ষিণ পার্শ্বে বিলের মাঝে একটি লাশ পড়ে আছে। খবর শুনে রানার পিতা-মাতা দ্রুত ঘটনাস্থালে গিয়ে দেখতে পান নিহত যুুবক অন্য কেউ না, তাদের না, তাদের সন্তান রানা।

নিহত রিানা খান এলাকায় মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে গ্রেফতার আসামী ইকবাল হোসেন (৪০) এবং তার অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় তারা রানা খানকে জবাই করে হত্যা করে। 

এ ঘটনায় নিহতের পিতা মোঃ জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানায় ৬ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-০১/০৫/২০০৬, জিআর-২১১/০৬, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলাটি তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও ১০ জনকে আসামী করে মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচারকার্য শুরু হয়। আসামী ইকবাল হোসেন ৬ মাস কারাভোগের পর ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে জামিনে গিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। আসামীরা দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় বিজ্ঞ আদালত পুলিশের প্রতিবেদন এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামীদের অনুপস্থিতিতে নিহত রানা খানকে হত্যার দায়ে গত (১৮ জুন ২০২৩) ৭জনকে মৃত্যুদন্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড এবং ৪ জনকে খালাস প্রদান করেন।

র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে, রানা হত্যা মামালায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইকবাল হোসেন আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানাধীন চম্পকনগর এলাকায় অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল শুক্রবার বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করে। 

জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত হত্যা মামলার যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে। 

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় , সে নহিত রানা খান (২০)’কে নির্মম ও নৃশংসভাবে দেশীয় ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করার পর লাশ গুম করে এবং আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে ছদ্মনাম ধারণ করে দীর্ঘ ১৭ বছর যাবৎ নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে করে ছিলো।

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।