২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৫:৩৫:২৯ পূর্বাহ্ন


ব্যাংকপাড়ায় ঘুরে বেড়ান তারা, টার্গেট ঋণগ্রহীতা
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৩-২০২২
ব্যাংকপাড়ায় ঘুরে বেড়ান তারা, টার্গেট ঋণগ্রহীতা ব্যাংকপাড়ায় ঘুরে বেড়ান তারা, টার্গেট ঋণগ্রহীতা


রাজধানীর মতিঝিলের ব্যাংকপাড়ায় ঘুরে বেড়ান তারা। টার্গেট ঋণগ্রহীতা। প্রতিশ্রুতি দেন অল্প সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ পাইয়ে দেওয়ার।

ঋণের টাকা নিয়ে তারা আবার নিজেরাই দেখা করেন গ্রাহকের সঙ্গে। ধরিয়ে দেন লাখ লাখ টাকার বান্ডিল। তবে বান্ডিল খোলার পর তাতে মেলে শুধু কাগজ। অভিনব এ প্রতারকচক্রের দুই সদস্যকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

দেখতে লাখ টাকার বান্ডিল মনে হলেও তাতে কোনো টাকাই নেই। পুরোটাই কাগজের। ওপরে এবং নিচে এক হাজার টাকার নোট। তাও আবার জাল। এক শ্রেণির প্রতারক অভিনব কায়দায় কাগজকে টাকা বলে চালিয়ে দিচ্ছে।

খালি চোখে দেখলে ১ হাজার টাকা নোটের বান্ডিলই মনে হবে। তবে ঘোর কেটে যাবে হাতে নিয়ে দেখলেই। ভেতরে কোনো টাকা নেই। টাকার মাপে কাগজ কেটে তৈরি করা হয়েছে বান্ডিলগুলো। 

একটি দুটি নয়, ৩২টি বান্ডিল যেগুলো দৈর্ঘ্য প্রস্থে এক হাজার টাকা নোটের সমান। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগ রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে এই বান্ডিলগুলো। গ্রেফতার করা হয়েছে দুজনকে।

 মতিঝিলের ব্যাংকপাড়ায় ঘুরতে থাকে চক্রের সদস্যরা। টার্গেট লোনগ্রহীতা। কমিশনের বিনিমেয়ে বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও সমিতি থেকে ঋণ পাওয়ার নিশ্চয়তা দেন তারা। কাগজপত্র এবং অগ্রিম কমিশনের টাকা নেওয়ার পর ঋণগ্রহীতাকে জানানো হয় ঋণের অনুমোদন পাওয়া গেছে।

নির্দিষ্ট দিনে লোনের টাকা নিয়ে তারা নিজেই হাজির হন। কাগজের এসব বান্ডিল বিশেষ প্যাকেটে মুড়িয়ে ধরিয়ে দেন ঋণগ্রহীতাকে। বাড়িতে গিয়ে প্যাকেট খোলার পরামর্শ দেন।

পুলিশ বলছে, টাকা দ্বিগুণ করার ব্যবসাও করে চক্রটি। মূলত লোভী মানসিকতার ব্যক্তিরাই তাদের ফাদেঁ পা দেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (রমনা) বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক বলেন, ঋণ নিতে চায় এমন ব্যক্তি খুঁজে বের করে তারা। কী ধরনের ঋণ নিতে চায় সে বিষয়টি আগে তারা বোঝার চেষ্টা করে, তারপর তারা প্রতারণা করার পরিকল্পনা করে থাকে। প্রথমে তাদের সঙ্গে এ চক্রটি সখ্যতা তৈরি করতে থাকে। এরপর কীভাবে লোন ব্যাংক থেকে পাওয়া যাবে তার ব্যবস্থা করার কথা জানায়। এদিকে যারা এভাবে লোন নিতে চায়, তারা মনে করেন কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই লোন পাওয়া যাচ্ছে এটাই ভালো পথ। এ প্রতারক চক্র লোন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে নানা সময় টাকাও নেন তাদের কাছ থেকে। যখন টাকা দেওয়ার সময় আসে তখন তারা জনসমাগম আছে এমন জায়গা বেছে নেয়, তারপর এ জাল নোটের বান্ডিলগুলো তাদের হাতে তুলে দেয় এবং বলে টাকাগুলো এখানে খুলে গোনা যাবে না। কারণ কেউ দেখে ফেলতে পারে, ছিনতাই হতে পারে এমন কথা বলে বিশ্বাস অর্জন করে। বাড়ি গিয়ে টাকা গোনার কথাও তারা বলেন। মূলত এভাবেই তারা প্রতারণা করে আসছিল।       

এই চক্রের মাস্টারমাইন্ডসহ আরও কয়েকজনের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা বলে জানান এ কর্মকর্তা।

রাজশাহীর সময় / জি আর