১৯ মে ২০২৪, রবিবার, ০৮:০৭:২৭ পূর্বাহ্ন


ইরান মাতিয়ে রোনালদোর ‘১০০০’
ক্রীড়া ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৯-২০২৩
ইরান মাতিয়ে রোনালদোর ‘১০০০’ ছবি: সংগৃহীত


ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ইরান সফরটা ছিল পুরোপুরিই পেশাদারিত্বের। ক্লাব আল নাসরের হয়ে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ খেলতে এসেছিলেন ইরানের ক্লাব পারসেপোলিসের বিপক্ষে। কিন্তু পেশাদারিত্বের আবরণ সরিয়ে রোনালদোর ইরান সফরটা হয়ে উঠেছিল ভালোবাসা আর উষ্ণ অভ্যর্থনার আনন্দ ভ্রমণ। যেখানেই গেছেন, ইরানিয়ানরা বরণ করেছেন অকৃত্রিম ভালোবাসায়, অভ্যর্থনা জানিয়েছেন নানা পুরস্কারের মাধ্যমে। প্রতিদানে রোনালদোও মাঠ এবং মাঠের বাইরে—দুভাবেই ইরানিয়ানদের মন জয় করেছেন।

নিজে গোল না পেলেও পর্তুগিজ তারকা অসাধারণ খেলেছেন। আল নাসরও জয় পেয়েছে। পারসেপোলিসকে ২-০ গোলে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। রোনালদোর আল নাসর প্রথম গোলটি পায় আত্মঘাতী সূত্রে। ৬২ মিনিটে পারসেপোলিশের ডিফেন্ডার ড্যানিয়েল ইসমাইলিফার বল নিজেদের জালেই ঢুকিয়ে দেন! ৭২ মিনিটে আল নাসরের হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মোহাম্মদ কাসেম। 

এই জয়ের অনন্য একটা কীর্তিও গড়েছেন পর্তুগিজ সুপারস্টার। গড়েছেন ক্যারিয়ারে  ‘১০০০’তম ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড। ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে এই ১০০০ ম্যাচের মধ্যে জিতেছেন ৭৭৬ ম্যাচে। ২২৪ মাঠ করেছেন ড্র। তবে দলের জয়, ব্যক্তিগত কীর্তি ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছিল ইরানিয়ানদের রোনালদো-উন্মাদনা। ৫ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ীকে এক নজর দেখার জন্য, পাশে দাঁড়িয়ে একটা সেলফি তোলার আশায় ইরানিয়ানরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। হোটেল থেকে মাঠে যাওয়া-আসার পথে আল নাসরের টিমবাস যে রাস্তা দিয়ে গেছে, সেই রাস্তার দুই পাশেই ভিড় করেছে হাজার হাজার মানুষ। অনেকে গাড়ির পেছন পেছনে দৌড়েছে! এমনকি, হোটেলে রোনালদোকে একটু দেখতে মানুষ পাহাড় বেয়ে উঠেছে। রোনালদোরা যে উঠেছিলেন পাহাড়ের কোল-ঘেষা হোটেলে।

অকৃত্রিম ভালোবাসা পাওয়ার সফরে রোনালদো আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক কাজ সেরেছেন। দেখা করেছেন সেই ইরানিয়ান শিল্পী ফাতেমে হাম্মামি নাসরাবাদির সঙ্গে, ৬ বছর আগে যিনি রোনালদোর অসাধারণ এক প্রতিকৃতি এঁকে বিশ্বব্যাপী হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। রোনালদো তখন রিয়াল মাদ্রিদে খেলতেন। হাম্মামি নাসরাবাদির চিত্রকর্ম তাকেও অবাক করে দিয়েছিল। শরীরের ৮৫ শতাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হাম্মামি নাসরাবাদি প্রিয় তারকার প্রতিকৃতিটা এঁকেছিলেন ‘পা’ দিয়ে। অবিশ্বাস্য দক্ষতায় হাম্মামি নাসরাবাদি যেন তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছিলেন জীবন্ত রোনালদোকে! 

ইরানে এসে সেই হাম্মামির সঙ্গে দেখা না করলে হয়। রোনালদো তাই হাম্মামির সঙ্গে দেখা করেছেন, নিজের জার্সি উপহার দিয়েছেন, হাসিমুখে ছবি তুলেছেন। প্রিয় রোনালদোকে কাছে পেয়ে হাম্মামি নাসরাবাদির যে জীবনের বড় একটা স্বপ্নই পূরণ হয়েছে, তা ফুটে উঠে তার হাসিতেই।