০১ মে ২০২৪, বুধবার, ১০:০৮:২৪ অপরাহ্ন


বৈধপথে রেমিট্যান্স কমছে কেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল কোথায়?
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-১০-২০২৩
বৈধপথে রেমিট্যান্স কমছে কেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল কোথায়? ফাইল ফটো


দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের একটি বড় উৎস প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। চলতি বছর সেপ্টেম্বরে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তা বিগত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিদেশে শ্রমিক সংখ্যা বাড়লেও রেমিট্যান্স কমার কারণ অনুসন্ধানে আঙুল উঠেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের দিকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০ সালের এপ্রিলের পর এই প্রথম এত কম রেমিট্যান্স পাঠালেন প্রবাসীরা। এর আগে ২০২০ সালে এপ্রিলে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৯ কোটি মার্কিন ডলার।
 
২০২০ সালে করোনার প্রকোপ ঠেকাতে মার্চের শেষ সপ্তাহে ঘোষিত লকডাউনের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে রেমিট্যান্সে প্রভাব পড়লেও কয়েক মাসের মধ্যে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বহুগুণে বেড়ে যায়। মাঝে করোনা পরবর্তী সংকট, যুদ্ধকালীন অবস্থা এবং ডলারের বিপরীতে অন্যান্য মুদ্রার লাগাতার অবমূল্যায়নের মধ্যেও এত কম রেমিট্যান্স আসেনি যা এবারের সেপ্টেম্বরে এসেছে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, হঠাৎ করে সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমে যায়নি। বরং জুন মাস থেকে দফায় দফায় রেমিট্যান্স কমে সেপ্টেম্বরে এসে এ পর্যায়ে ঠেকেছে। চলতি বছর জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। জুলাই মাসে এটি কমে হয়েছে ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার। আগস্ট মাসে রেমিট্যান্স আরও কমে দাঁড়ায় ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। পরবর্তীতে সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্সের প্রবাহ আরও কমে ৪১ মাসের রেকর্ড ভাঙে।
 
প্রবাসীরা কি টাকা পাঠাচ্ছেন না?
 
বিগত কয়েক মাসে টানা রেমিট্যান্স কমার কারণে প্রশ্ন উঠেছে দেশের বাইরের প্রবাসীরা কি তাহলে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিচ্ছেন? তবে কার্ব মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগের তুলনায় খোলাবাজারে ডলারের প্রবাহ কয়েকগুণ বেড়েছে। প্রবাসীরা মূলত ব্যাংক এবং মানি এক্সচেঞ্জের বদলে হুন্ডির দিকে বেশি ঝুঁকেছেন।
 
এ বিষয়ে মানি এক্সচেঞ্জের কয়েকজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সময় সংবাদকে জানান, প্রবাসীরা ব্যাংক বা বৈধ চ্যানেলে ডলার পাঠালে দাম পাচ্ছেন ১১০ টাকা। কিন্তু খোলাবাজারে এ দাম ১২০ টাকার ওপরে। খোলাবাজারে ডলার পাঠালে তাদের এজেন্ট বাসায় গিয়ে টাকা পৌঁছে দিয়ে আসে। একদিকে নেই কাগজপত্রের ঝামেলা, অন্যদিকে ডলার প্রতি দাম ১০ টাকা বা তারও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে বৈধ চ্যানেলে ডলার না পাঠিয়ে স্বাভাবিকভাবে কার্ব মার্কেটকে বেছে নিচ্ছেন প্রবাসীরা।
 
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংগঠনের (আইওএম) তথ্যানুযায়ী, অভিবাসী প্রেরণে বিশ্বের শীর্ষ ২০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। বর্তমানে দেশের বাইরে ৭৫ লাখেরও বেশি প্রবাসী আছেন। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩-৪ লাখ মানুষ নতুন করে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। বিশেষ করে বিশ্বের ১৪৩টি দেশ বাংলাদেশের অভিবাসন প্রত্যাশীদের গন্তব্য হলেও প্রায় ৯০ শতাংশ অভিবাসী শুধু মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছেন।

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ বাদে শুধু সৌদি আরবেই বাংলাদেশে প্রবাসী প্রেরণ পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিগত তিন বছরে দেশটিতে বাংলাদেশি প্রবাসীর সংখ্যা চারগুণ বেড়েছে।
 
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে ১ লাখ ৬১ হাজার ৭২৬ বাংলাদেশি কাজের সন্ধানে সৌদি আরব গিয়েছেন। ২০২১ সালে এ সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ২২৭ জন এবং ২০২২ সালে আরও বেড়ে হয়েছে ৬ লাখ ১২ হাজার ৪১৮ জনে।
 
কিন্তু ক্রমবর্ধমান হারে জনশক্তি বাড়লেও দেশটি থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ দিনকে দিন কমে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। পরের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২১-২২ এ দেশটি থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স আরও কমে হয় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।
 
সর্বশেষ ২০২২-২৩ সালে পাঠানো রেমিট্যান্স ৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

চলতি বছর জুন মাসে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ সংসদে দেয়া এক বক্তব্যে বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের এ পর্যন্ত ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৫৫২ কর্মী বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজের উদ্দেশ্যে গমন করেছেন।
 
কাজের উদ্দেশ্যে এত বিপুল সংখ্যক মানুষ বিদেশে যাওয়ার পরেও কেন রেমিট্যান্স কম আসছে তা অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়,কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম বেধে দেয়ার পর থেকেই প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন। বিশেষ করে ব্যাংক নির্ধারিত ডলারের দামের সঙ্গে খোলাবাজার অর্থাৎ কার্ব মার্কেটের দামের বিশাল ব্যবধান হওয়ায় প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার না পাঠিয়ে হুন্ডির মতো অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাচ্ছেন।
 
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, প্রবাসীরা অবশ্যই ডলার পাঠাচ্ছেন। কিন্তু বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের বদলে তারা হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছেন। এক্ষেত্রে প্রবাসীদের দোষ দিয়ে কোনো লাভ নেই। ব্যাংকে ডলার পাঠালে পাওয়া যাবে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা, আর খোলা বাজারে ডলার পাঠালে আসবে ১১৯-১২০ টাকা। এই বিশাল ব্যবধানের কারণে প্রবাসীরা ব্যাংক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে হুন্ডির দিকে ঝুঁকছেন।
 
হুন্ডিতে ডলার পাঠানো নিয়ে ইতালি প্রবাসী কয়েকজন সময় সংবাদকে জানান, ব্যাংক প্রণোদনা নিয়ে বড় বড় কথা বলে। আড়াই শতাংশ প্রণোদনা পাওয়ার পরেও খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকে ডলারের দামের পার্থক্য থাকে ৮-১০ টাকা। এতে করে প্রবাসীরা ব্যাংকের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে হুন্ডি ও অন্যান্য মাধ্যমে ডলার পাঠাচ্ছেন।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুলেই কি রেমিট্যান্সে খরা
 
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম বেঁধে দিয়েছে। বাজারব্যবস্থা আমলে না নিয়েই নিজেদের সিদ্ধান্তে ডলারের দাম বেঁধে রাখায় বৈধ চ্যানেলে ডলার প্রবাহ কমে গেছে। এছাড়া অর্থ  মন্ত্রণালয় প্রণোদনার বিষয়ে কার্পণ্য করায় প্রবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে ডলার পাঠাচ্ছেন না।
 
রূপালি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমদ আল কবির সময় সংবাদকে বলেন, বর্তমান বাজারে ডলার সংকট এবং রেমিট্যান্সের নিম্ন প্রবাহের দায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর বর্তায়। বাজার বিবেচনা না করে ডলারের দাম বেধে রাখলে একদিকে রেমিট্যান্স আসবে না, অন্যদিকে অবৈধ চ্যানেলগুলো ফুলেফেঁপে উঠবে।
 
তার মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত বাজারের ওপর ভিত্তি করে ডলারের দাম নির্ধারণ করা। খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকের নির্ধারিত দাম কমে আসলে আপনা থেকে রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করবে।
 
এছাড়া প্রণোদনা বৃদ্ধির ওপরও জোর দিয়েছেন আহমদ আল কবির। তিনি বলেন, বর্তমানে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হয়। প্রতিবছর দশমিক ৫০ শতাংশ করে প্রণোদনা বাড়ানোতে কিছুই হবে না। প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক অর্থের ওপর প্রণোদনা বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ করতে হবে। এতে করে সরকারের রিজার্ভে যেমনি অর্থ আসবে, অন্যদিকে অবৈধ চ্যানেলগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে।
 
প্রণোদনা বাড়ালে শুরুতে একটু চাপ বাড়বে; কিন্তু বৈধ চ্যানেলে টাকা আসা শুরু করলে দিনশেষে দেশের অর্থনীতি লাভবান হবে বলে দাবি করেন এই অর্থনীতিবিদ।
 
রেমিট্যান্সের প্রভাব রিজার্ভে পড়ছে উল্লেখ করে কবির আরও বলেন, শুধু রেমিট্যান্স না, রিজার্ভ ঠিক রাখতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও কঠোর হতে হবে। অনেক রফতানিকারক বাইরে ডলার পাঠিয়ে সেটি আর দেশে ফিরিয়ে আনেন না। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শক্ত কোনো নজরদারি নেই। একদিকে রেমিট্যান্স নিয়ে উদাসীনতা, অন্যদিকে রিজার্ভ বৃদ্ধিতে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়ায় বর্তমান অবস্থার সিংহভাগ দায় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নিতে হবে।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করণীয় কী?
 
বর্তমান পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের মতামত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত ডলারের দাম বেঁধে না রেখে বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া।
 
গত সেপ্টেম্বরে সময় সংবাদকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক সভাপতি আনিস এ খান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত, ডলারের মান ধরে না রেখে বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের মান যত ধরে রাখবে, অবৈধ চ্যানেলে ডলার লেনদেন তত বাড়বে।
 
ডলারের মান বেঁধে দিয়ে কোনো লাভ হচ্ছে না উল্লেখ করে আনিস বলেন, দিনকে দিন ডলারের দাম বাড়ছেই। এমন না ডলারের মান বেঁধে দিয়ে টাকার অবমূল্যায়ন ঠেকানো যাচ্ছে। উল্টো প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে ডলার পাঠাতে আগ্রহ পাচ্ছেন না। যাদের হাতে ডলার আছে, তারাও বিক্রি না করে ধরে রাখছেন বা অবৈধ চ্যানেলে বিক্রি করছেন। ডলারের মান ছেড়ে দিলে হয়তো ডলারের দাম এক লাফে অনেক বেড়ে যাবে। এরপর আবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
 
ডলারের দাম লাগামহীন না করে কীভাবে বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখা যায় এমন প্রশ্নে অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, ধাপে ধাপে বাজার পর্যবেক্ষণ করে ডলারের দাম বাড়ানো উচিত। একবারে বেঁধে না রেখে বা একবারে ছেড়ে দিয়ে, বাজার বুঝে প্রতি মাসে ডলারের দাম ঠিক করলে খোলাবাজারের দৌরাত্ম্য কমে আসবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বুঝতে হবে, ডলারের দাম নির্দিষ্ট করে দেয়া ঠিক না। মাসে মাসে বাজারের ওপর নির্ভর করে ডলারের দাম ঠিক করতে পারলে অর্থনীতিতে ভালো প্রভাব পড়বে।
 
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোরও দায়বদ্ধতা আছে
 
রেমিট্যান্সের প্রবাহ ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারণের পাশাপাশি দায়বদ্ধতা আছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। বিশেষ করে ব্যাংকগুলো কেন রেমিট্যান্স আনতে পারছে না সে বিষয়ে তাদের জবাবদিহিতার একটি জায়গা থাকা জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
  
এ বিষয়ে আহমদ আল কবির বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এমন অনেক শ্রমিক আছেন, যারা প্রচণ্ড কাজের চাপে থাকেন। দিনের বেলা কাজে বের হয়ে মধ্যরাতে ঘরে ফেরেন। ব্যাংকের সঙ্গে এদের যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে গ্রাহককে যাতে ব্যাংক খুঁজতে না হয়, উল্টো ব্যাংক যাতে গ্রাহক খুঁজে নেয়, এমন পদ্ধতি চালু করতে হবে। এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রসারিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রবাসীরা যখন ব্যাংকিং চ্যানেলে সুবিধাজনক মনে করেন না, তখনই হুন্ডির দিকে ঝুঁকছেন। প্রবাসীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা সুবিধাজনক করার দাবি জানান তিনি।
 
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে মার্কেটিং পলিসি শক্তিশালী করতে হবে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাসিনা শেখ বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বিদেশে থাকা গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হবে। একজন গ্রাহক একমাসে টাকা না পাঠালে তার খোঁজখবর রাখতে হবে। এভাবে চ্যানেলভিত্তিক সম্পর্ক উন্নয়ন করতে পারলে প্রবাসীদের ভরসাস্থল হবে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেল।
 
খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকের ২-৩ টাকা ব্যবধান হলেও বিশ্বস্ততা থাকলে এবং পদ্ধতি সহজ হলে প্রবাসীরা ব্যাংকে টাকা পাঠাতে উৎসাহ পাবে। এছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সর্বদা তাগিদ দেয়ার পরামর্শ দেন হাসিনা শেখ।
 
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমানে দেশের বাইরে যে পরিমাণ প্রবাসী আছে তাতে করে মাসে ২৫০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসা উচিত। বিভিন্ন সময়ে এটি কমে-বেড়ে ২০০ কোটি ডলারের মধ্যে থাকলেও গ্রহণযোগ্য। কিন্তু কোনোভাবেই রেমিট্যান্স দেড়শ’ কোটি ডলারের নিচে নেমে যাওয়া মেনে নেয়া যায় না। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল নীতির কারণে দেশের রেমিট্যান্স খাত ভুগছে বলে মনে করেন তারা।