০২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৪:৩৯:৪৪ পূর্বাহ্ন


তানোরে কীটনাশক দিয়ে দাদন ব্যবসা
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-১০-২০২৩
তানোরে কীটনাশক দিয়ে দাদন ব্যবসা সংগৃহিত ছবি


রাজশাহীর তানোরে বিভিন্ন নাম সর্বস্ব কোম্পানির নিম্নমানের দানাদার ও তরল কীটনাশকের আগ্রাসনে বাজার সয়লাব হয়ে পড়েছে। এতে কৃষিক্ষেত্রে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে কৃষকেরা। 

কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি বিভাগের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে অসাধূ ব্যবসায়ীচক্র বছরের পর বছর ভেজাল ও নিম্নমানের  কীটনাশকের কারবার করায় প্রতারিত হচ্ছে কৃষক। এমনকি এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী কতিপয় ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে এসব 

কীটনাশক কিনতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন বলেও কৃষকদের মধ্যে আলোচনা রয়েছে। কৃষক জনৈক মোস্তাফিজুর বলেন, নাম সর্বস্ব কোম্পানির নিম্নমাণের কীটনাশক দিয়ে মাসুদ রীতিমতো দাদন ব্যবসা করছে। তিনি বলেন, ভাল কোম্পানির একটা কীটনাশকের দাম যদি ৫০০ টাকা হয়,তবে নাম সর্বস্ব কোম্পানির সেই কীটনাশকের দাম প্রায় হাজার টাকা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কৃষক জানান, উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) মোহরগ্রামে মেসার্স জুঁই টেড্রার্স  দীর্ঘদিন ধরে নাম সর্বস্ব কোম্পানির নিম্নমানের কীটনাশক এনে বাঁকিতে উচ্চ মুল্য (দাদন) বিক্রি করে কৃষকের পকেট কাটছে। কীটনাশক নিয়ে রীতিমতো দাদন ব্যবসা করছেন।

স্থানীয়রা বলেন, নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার সাবাই হাট, রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট ও শ্যামপুর থেকে এসব নিম্নমাণের কীটনাশক নিয়ে এসে বিক্রি করছে। কীটনাশক আসল, নকল, ভেজাল না নিম্নমানের তা বোঝার ক্ষমতা নাই সাধারণ কৃষকের। 

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, কীটনাশক ব্যবসা করতে রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ, পাকা মেমো ও প্রতিটি কোম্পানির এনওসি বাধ্যতামুলক। স্থানীয়রা জানান, মেসার্স জুঁই টেড্রার্সে কীটনাশক বিক্রি করতে কোনো পাকা মেমো দেয়া হচ্ছে না। সাদা কাগজে মোমো করে দেয়া হচ্ছে। নেই এনওসি এমনকি রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ। এছাড়াও সার বিক্রিতে বেশী দাম নেয়া হয়। ফলে তার কাছে সার বা কীটনাশক কিনে প্রতারিত হলে কৃষকেরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। আর নাম সর্বস্ব কোম্পানির নিম্নমাণের কীটনাশক উচ্চ দামে বিক্রি করা হচ্ছে। জনৈক গোলাম রাব্বানী বলেন, তার জমিতে ব্লাষ্ট রোগ দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, জুঁই টেড্রার্স থেকে কীটনাশক কিনে জমিতে প্রয়োগ করে আশাব্যঞ্জক ফলাফল পাননি। পরে বলতে গেলে মেমো না থাকায় সে তার দোকানের কীটনাশকের কথা অস্বীকার করেছে। কৃষক আব্দুল লতিব বলেন, নাম সর্বস্ব কোম্পানির কীটনাশক বাঁকিতে দিগুন দাম ধরা হচ্ছে। তিনি বলেন, পরিচিত কোম্পানির কীটনাশক একবার প্রয়োগ করে যে ফল পাওয়া যায়। নাম সর্বস্ব কোম্পানির কীটনাশক তিনবার প্রয়োগ করেও সেই ফলাফল পাওয়া যায় না। এবিষয়ে জানতে চাইলে মেসার্স জুঁই টেড্রার্সের স্বত্বাধিকারী মাসুদ রানা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কেউ তার ব্যবসা দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে এমন মিথ্যাচার করতে পারেন। তিনি বলেন, তার কারণে এলাকার কৃষকেরা সময় মতো সার- কীটনাশক পাচ্ছেন ভাল আছেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।