ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসে উঠিয়ে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছেন চালক। পরের দুই দিন তাঁকে আবার ধর্ষণ করা হয়। এই অভিযোগে ইমাম পরিবহনের বাসচালক জাহাঙ্গীর আলমকে (৩১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানায় প্রেস ব্রিফিং করে এসব তথ্য জানান সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবিব।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ওই গৃহবধূ (২২) ঢাকায় তাঁর স্বামীর কাছে যেতে গত সোমবার সকালে বৃদ্ধ নানার সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হন। দুপুরের দিকে তাঁর নানা ভুল করে ঢাকার বাসে না উঠিয়ে হালুয়াঘাটগামী একটি বাসে তাঁকে তুলে দেন। গৃহবধূর স্বামী তাঁকে ফোন করে অবস্থান জানতে চান। কিন্তু তিনি না বলতে পারায় বাসচালকের সহকারীকে মোবাইল ফোন দিতে বলেন।
সহকারীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তিনি ঢাকার বাসে না উঠে ভুল করে হালুয়াঘাটের বাসে উঠেছেন। বাসের চালক গৃহবধূকে হালুয়াঘাট বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ঢাকাগামী অন্য বাসে তুলে দেওয়ার আশ্বাস দেন। বিকেল ৩টায় বাসচালকের সহকারী গৃহবধূকে বাসস্ট্যান্ডে এক দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে অন্য বাসে উঠিয়ে দিতে সামনে যান।
এ সময় অন্য এক বয়স্ক নারী জানতে চান তিনি কোথায় যাবেন? সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন হালুয়াঘাটের গোবরাকুড়া এলাকার বাসিন্দা ইমাম পরিবহনের বাসের চালক জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি ঘটনাটি শুনে গৃহবধূর পিছু নেন। যে বাসে করে ওই গৃহবধূ হালুয়াঘাটে এসেছিলেন সেই বাসের চালক তাঁকে ঢাকাগামী একটি বাসে উঠিয়ে দেন। সুযোগ বুঝে সেই বাসে উঠে পড়েন জাহাঙ্গীর। তিনি গৃহবধূকে জানান, এই বাসে গেলে ঢাকায় যেতে যেতে গভীর রাত হয়ে যাবে। তিনি যেন তাঁর বাসে ঢাকায় যান।
তাঁর বাস রিজার্ভ করা আছে এবং ধারা বাজার এলাকায় রাখা।
রাত ৮টার মধ্যেই ঢাকায় নিয়ে যাবে।
ওই গৃহবধূ জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ধারা বাজার মুরগিমহল এলাকায় নামেন। জাহাঙ্গীর তাঁকে মুরগিমহলের পাশে নির্জন স্থানে দাঁড় করিয়ে রাখা ইমাম পরিবহনের বাসে উঠতে বলেন। বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে ওই বাসের চালক জাহাঙ্গীর বাসে উঠে দরজা বন্ধ করে দেন এবং গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। গৃহবধূ চিৎকার করতে চাইলে গলা চেপে ধরে তাঁকে হত্যার হুমকি দেন।
এরপর দুই দিন জাহাঙ্গীর ওই গৃহবধূকে আরো দুইবার ধর্ষণ করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, সুযোগ পেয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই গৃহবধূ তাঁর বাবাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান। তাঁর বাবা হালুয়াঘাট থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানান। পুলিশ গৃহবধূকে পৌরশহরের পাগলপাড়ার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করে। অভিযান চালিয়ে বাসসহ জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে।
হালুয়াঘাট থানার ওসি সুমন চন্দ্র রায় জানান, এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জাহাঙ্গীর আলমকে আসামি করে মামলা করেছেন গৃহবধূ। দুপুরে আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য গৃহবধূকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।