০৩ মে ২০২৪, শুক্রবার, ০৩:০৩:১৫ অপরাহ্ন


তানোরে দালাল তোফাত পরিবারের দৌরাত্ম্যে
তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-১০-২০২৩
তানোরে দালাল তোফাত পরিবারের দৌরাত্ম্যে সংগৃহিত ছবি


রাজশাহীর তানোরে এক দালালের খপ্পরে পড়ে একাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে।  বিদেশে মোটা অঙ্কের টাকা বেতনের লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজসরল যুবকদের বিদেশ পাঠিয়ে, তাদের পরিবারকে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন দালাল চক্র। স্থানীয়রা জানান, জনৈক মিজান, মোজাফফর ও রউফের নেপথ্যে মদদে তোফাতের পরিবার দীর্ঘদিন যাবত 

দালালি ব্যবসা করে আসছে।

অন্যদিকে প্রতারণার শিকার উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) ছাঐড় গ্রামের মৃত ইব্রাহিম আলীর পুত্র এমদাদুল হক বাদি হয়ে একই গ্রামের তোফাত আলীর পুত্র বাবুল হোসেন (৪০) ও বাবুলের পুত্র আপনকে(২৩) বিবাদী করে তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। দালালের হাতে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা তুলে দিয়ে তারা এখন নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে। কিন্ত্ত জনৈক মিজান ও মোজাফফর অভিযোগ তুলে নিতে ভুক্তভোগীকে নানা ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) মোহাম্মদ আলীপুর গ্রামের তোফাত আলীর পুত্র বাবুল হোসেন ও বাবুলের পুত্র আপন তারা একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা গ্রামের সহজসরল যুবকদের মোটা অঙ্কের টাকা বেতনের লোভ দেখিয়ে বিদেশ পাঠায়। এর পর বিদেশের মাটিতে তাদের জিম্মি করে দেশে পরিবারের কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হয়। স্থানীয়রা জানান, ইতিমধ্যে তারা এলাকার প্রায় কুড়ি জনকে বিদেশ পাঠিয়েছে। যারা কোনো কাজ না পেয়ে বিদেশের মাটিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এদেরই একজন ছাঐড় গ্রামের এমদাদুল হকের পুত্র সবুজ আলী। আদম ব্যাপারী সিন্ডিকেট চক্রের দালাল মোহাম্মদআলীপুর গ্রামের তোফাত, বাবুল ও আপন ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে

সবুজকে প্রায় তিন মাস আগে মালেশিয়া পাঠায়। এর পর সবুজকে সেখানে জিম্মি করে পরিবারের কাছে থেকে টাকা দাবি করেন। এদিকে তাদের জিম্মি দশায় ঠিকমতো খাবার না পেয়ে সবুজ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। এখবর জানতে পেরে সবুজের পরিবার আবারো দালাল চক্রকে ৩ লাখ টাকা দিয়ে তাকে দেশে ফেরত নিয়ে এসেছে। গত ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সবুজ বাংলাদেশে ফেরত আসেন।

ওদিকে সবুজকে বিদেশ পাঠানোর  জন্য তার পরিবার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা ধারদেনা, ফসলী জমি  ও গরু বিক্রি করে দালাল তোফাত, বাবুল ও আপনের হাতে তুলে দিয়েছেন। আর তাদের হাতে টাকা তুলে দিয়ে সর্বস্ব খুইয়ে প্রতারণার শিকার সবুজের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। 

এবিষয়ে জানতে চাইলে তোফাত আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার পুত্র বাবুল হোসেনের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নাই। বাবুল কিভাবে লোকজন বিদেশ পাঠায় সেটা তার জানা নাই। তবে বাবুল হোসেন বিদেশ থাকায় তার কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এবিষয়ে সবুজ আলীর পিতা এমদাদুল হক বলেন, দালাল তোফাত, বাবুল ও আপন তারা এক সঙ্গে তার কাছে থেকে কয়েক দফায় প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, তাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে তার পুত্র সবুজ এখন মানুষিক ভারসাম্য হারিয়েছে। তিনি টাকা ফেরতসহ তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে