১৯ মে ২০২৪, রবিবার, ১০:২৬:৫০ পূর্বাহ্ন


হিজরি সালের পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়ালের পরিচিতি ও আমল
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-১১-২০২৩
হিজরি সালের পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়ালের পরিচিতি ও আমল প্রতিকী ছবি


আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সালের পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। এর জোড়া মাস হলো জমাদিউস সানি-এটি হিজরি আরবি সালের ষষ্ঠ মাস। আরবিতে এই মাস দুটির নাম হলো-প্রথমটি আল জুমাদাল ঊলা, দ্বিতীয়টি আল জুমাদাল উখরা বা আল জুমাদাল আখিরাহ অথবা আল জুমাদাস সানিয়াহ। ইমাম ফাররা (রহ.) বলেছেন, আরবি মাসের নামগুলো পুরুষবাচক, শুধু এ দুটি মাসের নাম স্ত্রীবাচক। তিনি আরও বলেন জুমাদা শব্দের পুরুষবাচক প্রয়োগ দেখলে বুঝতে হবে এটি শাহর শব্দের প্রতিশব্দরূপে ব্যবহৃত হয়েছে। আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে এ মাস দুটি জমাদিউল আউয়াল ও জমাদিউস সানি নামে সমধিক পরিচিত।

জুমাদা অর্থ শীতকাল। এ দুটি মাসে আরবে শীত পড়ে। শীতকালের মাস হিসেবেই এ দুটি মাসকে জুমাদাল উলা ও উখরা বলা হয় অর্থাৎ শীতকালের প্রথম মাস ও দ্বিতীয় মাস। জুমাদা শব্দের মূল অর্থ হলো স্থির, অবিচল, দৃঢ়, কঠিন, জমাটবদ্ধ ইত্যাদি। যেহেতু আরব দেশে শীতকালে প্রচণ্ড শীতে তরল পানি জমে কঠিন বরফে পরিণত হতো, উদ্ভিদ, জীবসহ সবকিছু জমে শক্ত হয়ে যেত, তাই শীতের দুটি মাসের এরকম নামকরণ করা হয়েছে।

জমাদিউল আউয়াল মাসের বিশেষ কোনো আমলের কথা নবিজি (সা.) থেকে সরাসরি বর্ণিত হয়নি। তবে ফার্সি একটি প্রবাদ আছে, ‘হার কে কদরে শব দারাদ হামা শব শবে কদর আস্ত’ অর্থাৎ যে জন রাতের মূল্য দেন, প্রতি রাতকেই তিনি শবে কদর হিসেবে পান। নেক আমল ও সৎকর্ম দ্বারা সাধারণ সময়ও অসাধারণ বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হয়ে ওঠে। যেসব দিবসের ও যেসব মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত কোরআন এবং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে সেসব দিনে ও মাসে সবাই ইবাদত করেন। সুতরাং যেসব দিন ও মাসের বিশেষ ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য কোরআন ও হাদিসে উল্লেখ করা হয়নি সে সব দিন ও মাসে বেশি করে নেক আমল করলে আমলকারী অবশ্যই অন্যদের চেয়ে এগিয়ে যাবেন ও অগ্রগামী হবেন।

জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, তাওবা-ইস্তিগফার, খতম তিলাওয়াত, সদকা-খয়রাত ইত্যাদি আমলের মাধ্যমে মাস অতিবাহিত করলে নিশ্চিত এর বরকত, ফজিলত ও কল্যাণ লাভ হবে। অন্যথায় সময়ের অপচয়ের জন্য অনুতাপ ও অনুশোচনা করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পরকালে নেককার মুমিন জান্নাতিগণের কোনো আফসোস থাকবে না; শুধু যে সময় তারা কোনো আমল করা ছাড়া অবহেলায় পার করেছেন, সে সময়ের জন্য তারা আফসোস করবেন।

নবীজি (সা.)-প্রায়ই প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। আমরাও এ মাসের চারটি সপ্তাহের প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতে পারি। নেক আমল দ্বারা জীবনকে সমৃদ্ধ করা জ্ঞানীর কাজ। রাসুলে আকরাম (সা.) বলেছেন তোমরা পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিসের পূর্বে মূল্যায়ন করো; যৌবনকে বার্ধক্যের পূর্বে, সুস্থতাকে অসুস্থতার পূর্বে, সচ্ছলতাকে দারিদ্র্যের পূর্বে, অবসরকে ব্যস্ততার পূর্বে এবং জীবনকে মৃত্যুর পূর্বে।