১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৫:০২:২০ অপরাহ্ন


নজরে ৩৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-১২-২০২৩
নজরে ৩৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ


বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সৌদি আরব। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) সভায় এ প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল। বিনিয়োগের জন্য দুই দেশের বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকও (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছিল। তবে তার পরই করোনা মহামারির কারণে সবকিছু থমকে যায়। সারা বিশ্বেই শুরু হয় দীর্ঘ লকডাউন। ফলে প্রতিশ্রুত বিনিয়োগ নিয়েও কোনো আলোচনা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ তিন বছর পর এখন আবার সেই বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে আশার আলো দেখছে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার বিষয়ে চুক্তির পাশাপাশি বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়ে গতকাল রাতে ঢাকায় পৌঁছেছে সৌদি আরবের ৪০ সদস্যের একটি বৃহৎ প্রতিনিধি দল। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির বিনিয়োগমন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিহ। প্রতিনিধি দলটিতে আছেন দেশটির বন্দর পরিচালনাকারী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনালে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, একাধিক বহুজাতিক কোম্পানির নির্বাহী ও বিভিন্ন শিল্প খাতের উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, প্রতিনিধি দলটির ঢাকায় আগমনের উদ্দেশ্য হচ্ছে পতেঙ্গা টার্মিনাল পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর। সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বন্দরের সুনাম বাড়বে। একই সঙ্গে টার্মিনাল পরিচালনায় প্রযুক্তিগত দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান একান্ত সচিব সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এ সফরে সৌদি প্রতিনিধি দলটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পতেঙ্গা টার্মিনাল পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করবেন রেড সি গেটওয়ের নির্বাহী। এ ছাড়া প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আসা ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের জন্য হোটেল লা মেরিডিয়ানে একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছে বিডা, যেখানে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাত ও সুযোগ সুবিধাগুলো তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া শিল্প খাতে যৌথ বিনিয়োগের লক্ষ্যে এফবিসিসিআই-এর আয়োজনে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন সৌদির প্রতিনিধি দল। 

 

নজরে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ : ২০২০ সালে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের সভায় সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের যেসব বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, তার মধ্যে রাষ্ট্রীয় টেলিটক-এর ফোরজি সেবা সম্প্রসারণে প্রায় ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব; ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র (সোলার আইপিপি) নির্মাণে সৌদি আরবের আলফানার কোম্পানির প্রস্তাব;  ট্রান্সফরমার ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম উৎপাদনে সৌদি কোম্পানি ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইমেনশনের বিনিয়োগ প্রস্তাব; ইউরিয়া ফরমালডিহাইড-৮৫ প্ল্যান্ট নির্মাণে সৌদি আরবের ইউসুফ আল রাজি কনস্ট্রাকশন এস্টেটের বিনিয়োগ প্রস্তাব; ‘সৌদি-বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব বায়ো-মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে সৌদি আরবের আল আফালিক গ্রুপ (এএইচ গ্রুপ)-এর বিনিয়োগ প্রস্তাব;  ইলেকট্রিক্যাল তার উৎপাদনের বিষয়ে রিয়াদ কেবলস গ্রুপ অব কোম্পানির বিনিয়োগ প্রস্তাব। এ ছাড়া বড় বিনিয়োগের জন্য সরকারের কাছে ১ হাজার একর জমি বরাদ্দ চায় দেশটির আল বাওয়ানি গ্রুপ। সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরনো এসব বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ছাড়াও সম্ভাবনাময় নতুন কিছু খাতে সৌদিও বিনিয়োগ চাওয়া হবে।