০৯ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:৩৯:৫৯ পূর্বাহ্ন


চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৪-২০২৪
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ


চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকা থেকে বালু তুলে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মজুতের ঘটনায় গোদাগাড়ী বালু মহালের ইজারাদার প্রতিবন্ধকতার দোহাই দিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দপ্তরে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছেন বলে দাবি করেছেন, মেসার্স উম্মে রোমান এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার মোঃ আনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, চলতি বছরে মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজের মালিক মুখলেসুর রহমান মুকুল জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বালুমহালের সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারাপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং বালু মহাল বুঝে নিয়েছেন। ওই ইজারাদারের দাবি, গোদাগাড়ীর একটি কুচক্রীমহল রাণীনগর বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলন করে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার সারাংপুর জোতগোশাই নামক স্থানে রাজশাহী ওয়াসার জমিতে অবৈধভাবে বালু মজুত, পরিবহণ ও বিক্রি করছে। এ ঘটনায় মুন এন্টারপ্রাইজের মালিক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করেছেন। 

অপর দিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রানীনগরের বালু মহালের ইজারাদার “মেসার্স দাদু ভাই কনস্ট্রাকশনস”। তিনি চলতি বছরে চাপাইনবাবগঞ্জ অধীন্যস্থ রাণীনগর মৌজায় লীজকৃত বালু মহাল সরকার কর্তৃক সর্বোচ্চ মূল্য দিয়ে লীজ গ্রহণ করেছেন। পরে “মেসার্স উম্মে রোমান এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মেসার্স হাসান হোসেন এন্ট্রারপ্রাইজের প্রোপাইটার মোঃ শামীম আক্তারের (রুমেন) সাথে চুক্তির মাধ্যমে অন্তভুক্ত করে বালু উত্তোলনের কার্যক্রম শুরু করেছেন। এ ব্যপারে গত (১৬ এপ্রিল) জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত পত্র প্রদান করে অবগত করেছেন মেসার্স উম্মে রোমান এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার মোঃ আনোয়ার হোসেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, আমি সহ আমার পার্টনারগণ বালু মহাল ও ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০” মোতাবেক বিধি বিধান মোতাবেক বিগত বছরের ন্যায় ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি।

কিন্তু ইতিমধ্যেই গোদাগাড়ীর ইউএনও আতিকুল ইসলাম জেলা প্রশাসনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে গিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাণীনগর বালুমহালের মজুতকৃত বালু সরিয়ে নিতে বলেছেন এবং বালু মজুত না করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেছেন। এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাণীনগর বালুমহালের মজুতদারগণ বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এবং নীতিমালা ২০১১’ এ কোথাও উল্লেখ করা হয় নাই যে, বিস্তিৃত বালু মহাল হইতে নিদৃষ্ট এলাকা থেকে অন্য কোথাও বালু হস্তান্তর করা যাবে না, আইনটি দেখালে গোদাগাড়ীর ইউএনও জেলা প্রশাসক রাজশাহীর সাথে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।

স্থানীয়রা জানায়, মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজের মালিক মুখলেসুর রহমান মুকুল জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বালুমহাল চালু করে প্রায় ২০ বিঘা কৃষি জমির কাচা ধান কেটে সাবাড় করেছেন। ইজারায় ৭ ও ১০ নং শর্তে বলা আছে ফসলি জমি, বসতবাড়ি ও রাস্তার ক্ষতি করে বালু মজুত করা যাবে না। কিন্তু শর্ত ভঙ্গ করেই কার্যক্রম চলাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও শর্তভঙ্গ করে ১২০টাকা টোল ৫০০ টাকা আদায় করছে ইজারাদারের নিয়োগকৃত কর্মচারী।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজের মালিক মুখলেসুর রহমান মুকুল জানান, ধান আমি কাটব কেন। কে কাটছে ? উত্তরে তিনি বলেন, সেটা আমার জানা নাই।

গোদাগাড়ী সহকারী (ভূমি) মোঃ জাহিদ হাসান বলেন, চুক্তি অনুচ্ছেদে যে ভাবে উল্লেখ করা আছে। সে ভাবেই কাজ করতে হবে। আইনের বাইরে কোন কিছু করার সুযোগ নাই।

গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, কোন আইনের ভাইলেশন হয়, কোন শর্তের ভাইলেশন হয়। তাহলে আমরা সঠিক ব্যবস্থা নিব।

জেলা প্রশাসক মোঃ শামীম আহমেদ বলেন, অবৈধভাবে কাউকেই বালু উত্তোলন অথবা মজুত করতে দেয়া হবে না। এক কথাই বলতে চাই, আইনের উর্দ্ধে কেউ নয়। আইন যিনিই ভঙ্গ করবেন। তার বিরুদ্ধেই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

উল্লেখ্য যে, একই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিলো ২০২২সালে। এনিয়ে চাপাইনবাগঞ্জ বালু মহালের ইজারাদার মহামান্য হাইকোটের দারস্থ হন। চাপাইনবাবগঞ্জ হইতে রাজশাহীর মধ্যে বালু আনা যাবে না। আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্ট রীট পিটিশন নং- ৪৮৮৭/২০২০ দায়ের করিলে মহামান্য হাইকোর্ট সন্তুষ্ট হইয়া গত ৬/৯/২০২২ তারিখে প্রদানকৃত আদেশের বাস্তবায়নের নির্দেশনা প্রদান করেন।