১৫ মে ২০২৪, বুধবার, ০৩:২৮:৩৫ অপরাহ্ন


পচে নষ্ট হচ্ছে আমদানি করা ভারতীয় আলু
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৪-২০২৪
পচে নষ্ট হচ্ছে আমদানি করা ভারতীয় আলু ছবি: সংগৃহীত


হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আনা ভারতীয় আলু তীব্র গরমে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে আমদানিকারকরা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রতিদিন এই বন্দরের মাধ্যমে দেশে আলু আমদানি করা হচ্ছে। 

বন্দরের স্থানীয় আমদানিকারক ও কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টরা জানান, বন্দরে হিমাগার (কোল্ড ষ্টোরেজ) ব্যবস্থা না থাকায় আলুসহ যেকোন কাঁচামাল আমদানি করা হলে এই অবস্থা হচ্ছে। হিলিতে বেশ কয়েকদিন ধরে তীব্র দাবদাহ বিরাজ করছে। প্রতিদিন প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে। এর ফলে গুদামের ভেতরে বস্তায় থাকা আলু প্রচণ্ড গরমে পচে রস বের হচ্ছে। বিরুপ আবহাওয়ার কারণে আমাদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, দেশে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকার আলু আমদানি করার অনুমতি দেয়। ফলে বন্দরের আমদানিকারকরা প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে আলু আমদানি করছেন। প্রতিদিন তারা আলু আমদানি করে দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করছেন। আমদানি করার পর ভারতীয় ট্রাক থেকে আলুর বস্তাগুলো খালাস করে গুদামে রাখার জন্য নেওয়া হয়। বিক্রির জন্য সেখানে ২/৩দিন মজুদ থাকে। বর্তমানে প্রচণ্ড গরমে বাইরে থেকে পাইকাররা কম আসছেন। আবার তীব্র তাপদাহের কারণে পচে নষ্ট হচ্ছে। এই অবস্থায় আমদানিকারকরা আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাদের লাভ তো দুরের কথা, এখন লোকসান গুনতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত আমদানিকারকদের প্রণোদনার মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া না হলে দেশে পণ্য সংকটকালীন সময়ে পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত হবেন। বিষয়টি সরকারের খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্দরের মোকামে আমদানিকৃত ভারতীয় আলু জাতভেদে ৩৮-৪০ টাকা কেজিতে পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। আর বন্দরের আশ-পাশের বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়। তবে ভারতীয় আলু কিনতে ভোক্তাদের আগ্রহ কম। তারা দেশি আলু কিনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

বন্দরের আমদানিকারকের প্রতিনিধি সিরাজ হোসেন জানান, দেশে আলুর দাম বেশি। তাই আমরা ভারত থেকে আলু আমদানি করছি। কিন্তু সাম্প্রতিককালে হিলিসহ দেশে তীব্র তাপদাহের কারণে বস্তায় থাকা আলু গরমে পচে নষ্ট হচ্ছে। প্রতি বস্তায় ২/৩ কেজি করে নষ্ট আলু বের করা হচ্ছে। এখন আলু আমদানি মানেই আর্থিক ক্ষতি। আবার ভারতে গত কয়েকদিন ধরে কেজিতে ২/৩ টাকা দাম বেড়েছে। বন্দরে কোল্ড ষ্টোরেজ ব্যবস্থা থাকলে এই ক্ষতি হতো না।

পৌর শহরের বাসিন্দা আসাদুর রহমান জানান, ডাঙ্গাপাড়া-ছাতনি সড়কের পাশে ভারতীয় পচা আলুগুলো ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এতে আমাদের যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে। এমনিতেই তীব্র তাপে হাসফাস অবস্থা। তার উপর পচাগন্ধে আরও বিরক্তিকর অবস্থা। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজর দেওয়া দরকার।

এদিকে হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারী অপারেটর পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক জানান, ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানি হচ্ছে। প্রতিদিনই আলু আসছে। আলু পচণশীল পণ্য হওয়ায় কাস্টমসের রাজস্ব আদায় সাপেক্ষে দ্রুত খালাসসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে নিতে আমদানিকারকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে পোর্ট এলাকায় আলুসহ কাঁচাপণ্য রাখার জন্য কোল্ড ষ্টোরেজ ব্যবস্থা থাকলে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন না।