১৬ জুন ২০২৪, রবিবার, ০১:২৯:২৭ অপরাহ্ন


ফুলবাড়ীর রাজনীতিতে মুশফিকুর রহমানের অবদান
কংকনা রায়, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৫-২০২৪
ফুলবাড়ীর রাজনীতিতে মুশফিকুর রহমানের অবদান আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী মুশফিকুর রহমান বাবুল।


চলতি বছরের ৫ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী মুশফিকুর রহমান বাবুল। তিনি ফুলবাড়ী উপজেলা শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে তফসিল ঘোষণার পর থেকেই চষে বেড়াচ্ছেন উপজেলার পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রাম, হাট-বাজারসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে। দিচ্ছেন উন্নয়নের নানান প্রতিশ্রুতি। এবার নির্বাচনে তিনি ঘোড়া প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন।

মুশফিকুর রহমান বাবুল ১৯৭০ সালের ৯ নভেম্বর ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের জামগ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন মোবাররক হোসেন এবং মা শাহেদা বেগম। মুশফিকুর রহমান আইন, বিচার ও সংসদ সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক লাগাতার দুইবারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমানের কনিষ্ঠ ভাই।

বৈবাহিক জীবনে তার স্ত্রীসহ এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি বর্তমানে ফুলবাড়ী পৌরএলাকার সুজাপুর গ্রামে (উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপরপার্শ্বে) বসবাস করেন।

মুশফিকুর রহমান বাবুল শিক্ষাজীবনের মাধ্যমিক না পেরোতেই ধরেন রাজনীতির হাল। ১৯৮৪ সালে তৎকালিন সুজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে অধ্যায়ণরত অবস্থায় বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদস্যপদ লাভ করেন। সে সময়ের উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে সুজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম তার নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয় এবং তা সম্মেলনটিতে অংশ নেয়। ফুলবাড়ী সরকারি কলেজে তিনি অধ্যায়ণরত অবস্থায় ১৯৮৭-৮৮ সালে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে অনুষ্ঠিত ফুলবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগ সম্মেলনে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। একই সালে দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগ সম্মেলনে সহ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালের সৈরাচার পতন আন্দোলনের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের আহবায়কের দায়িত্ব পান মুশফিকুর রহমান বাবুল। তিনি ১৯৯১ সালে উপজেলা যুবলীগের সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে দিনাজপুর জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি নির্বাচিত হন। একই বছরে ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্যপদও লাভ করেন তিলে তিলে গড়ে ওঠা তুখার এই রাজনীতির কান্ডারী। ২০০১ সাল থেকে ২০০৯ সাল অবধি দায়িত্ব পালন করেন সাংগঠনিক সম্পাদকের। এরপর ২০০৯ সাল থেকে অধ্যবধি তার কাঁদে রয়েছে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার। সততা ও নিষ্ঠার সাথে নির্বিচ্ছিন্ন নেতৃত্বে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এই নেতা। তার নির্দেশনায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালিত হচ্ছে ফুলবাড়ী উপজেলা শাখা আওয়ামী লীগসহ এর সহযোগী অঙ্গ সংগঠনসমূহ।

মুশফিকুর রহমান বাবুল ২০১৪ সালে ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রথম বারের মতো নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। মার্কা ছিল দোয়াত কলম। সেবার তিনি ৩৪ হাজার ৪১২ ভোট পেয়েছিলেন। তার বিপক্ষে নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতি।

চলতি নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীক পেয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের সমর্থনে দিনরাত নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। কখনো হাট-বাজারে, কখনো গ্রামে-গঞ্জে আবার কখনো শহরের বুকে ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময়সহ প্রচারপত্র বিতরণ করতে দেখা যাচ্ছে তাকে।

ফুলবাড়ীকে স্মার্ট ও নান্দনিক উপজেলা বিনির্মাণে তিনি নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছেন। ইশতেহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, ফুলবাড়ীকে শান্তিময়, আধুনিক, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও সবুজায়ন হিসেবে গড়ে তোলা। ফুলবাড়ীর বুকে বয়ে চলা ছোট যমুনা নদীতে রাবার ড্রাম প্রতিষ্ঠা। ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ শহীদ মিনারের পার্শ্বে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন উন্মুক্ত মঞ্চ প্রতিষ্ঠা এবং ফুলবাড়ী ছোট যমুনা নদীর পার্শ্বে শিশুপার্ক নির্মাণ করা।

মুশফিকুর রহমান বাবুল বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। রাজনীতি আমার রক্তে নেশার মতো বইছে। রাজনীতিতে মানুষের পাশে থাকতে গিয়ে কখনো পরিবারের কথা চিন্তা করিনি। কাঁক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত অবধি রাজনীতি বিভিন্ন কার্যক্রমে আমাকে বাড়ির বাহিরে থাকতে হয়। এমনও দিন যায় বাড়িতে আসার পর দেখি স্ত্রী, সন্তানরা ঘুমিয়ে পড়েছে। তাদেরকে সময় দিতে পারিনা। ছোট থেকে আমার লক্ষ্য মানুষের পাশে থাকা। আমি স্কুল-কলেজে অধ্যয়ণরত অবস্থাতেও আমার খাবারসহ টিফিনের অর্থ গরিব বন্ধুদের মাঝে বিলিয়ে দিতাম। এতে তাদের মুখের হাসি দেখে আমার মন ভরে যেতো। সেই থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করেছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছি। দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে আসছি। রাজনীতিতে আমার জীবন যৌবন বিলিয়ে দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। আমি ফুলবাড়ী উপজেলার সর্বস্তরের জনগণের দোয়া, আর্শিবাদ ও ভোট কামনা করছি। আমি ভোটে নির্বাচিত হলে ফুলবাড়ীকে স্মার্ট ও নান্দনিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবো।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হুদা বলেন, মুশফিকুর রহমান বাবুল দলের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ। তিনি একজন প্রকৃত সংগঠক। তারমধ্যে সংগঠন পরিচালনার সর্বগুণাবলি রয়েছে। তিনি নিজের জীবনের অধিকাংশ সময়টাই দলের জন্য নিবেদন করেছেন। তিনি এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্র্থী। তিনি নির্বাচিত হলে ফুলবাড়ীবাসী আরো উন্নয়নের স্বাক্ষী হবেন।