২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১১:১০:৪২ পূর্বাহ্ন


ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণেও হাত বাড়াচ্ছে রাশিয়া, ক্ষুব্ধ জেলেনেস্কি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৪-২০২২
ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণেও হাত বাড়াচ্ছে রাশিয়া, ক্ষুব্ধ জেলেনেস্কি ফাইল ফটো


টানা দু'মাস ধরে চলছে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ। সরাসরি নে হলেও ইউক্রেনকে সাহায্য করছে আমেরিকা ও ন্যাটোর দেশগুলি। এসবের মাঝে বৃহস্পতিবার পুতিন মারিউপোলকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করে দেন। পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ দিকেই যাচ্ছে ইউক্রেনে। এত কিছুর পরেও নাছোড়বান্দা পুতিন। এবার তাই ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন যে ইউক্রেনের ভাগ্য নির্ভর করছে দেশের পূর্ব এবং দক্ষিণে প্রান্তের উপর। কারণ রাশিয়া এবার বলেছে যে প্রায় দুই মাসব্যাপী এই যুদ্ধে তাদের এবার লক্ষ্য পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনের দখল করা।

কী বলেছেন জেলেনেস্কি: শুক্রবার তার দৈনিক ভাষণে রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, "ইজিয়ুম , ডনবাস, আজভ উপকূল, মারিউপোল, খেরসন ওব্লাস্ট হল সেই জায়গা যেখানে এই যুদ্ধের ভাগ্য নির্ধারণ করবে এবং আমাদের দেশের ভবিষ্যত এই স্থানগুলোই নির্ধারণ করে দেবে" ইউরোপের বাকি অংশের জন্য একটি ভয়ঙ্কর সতর্কবার্তায়, জেলেনস্কি বলেছিলেন যে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন একটা আগ্রাসনের একটা ছোট অংশ মাত্র এবং ভ্লাদিমির পুতিন এবার তার সৈন্যদের আরও পশ্চিমে অন্য দেশ দখলের নির্দেশ দেবেন। "

জেলেনেস্কি পশ্চিমের জন্য সতর্কবার্তা: তিনি আরও বলেন , "যে সমস্ত দেশ আমাদের মতো জীবনে যুদ্ধে জয়ে বিশ্বাসী, তাদের অবশ্যই আমাদের মতোই যুদ্ধ করতে হবে। তাদের অবশ্যই আমাদের সাহায্য করতে হবে, কারণ আমরা এই সারিতে প্রথম দাঁড়িয়ে রয়েছি। পরবর্তী লাইনে যে কেউ দাঁড়িয়ে রয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে কোনও পশ্চিমের দেশের উপর হামলা হতে পারে। " বিক্ষুব্ধ ইউক্রেনীয় নেতার মন্তব্যটি একজন রাশিয়ান জেনারেলের বলার পরিপ্রেক্ষিতে এসেছে যে ক্রেমলিনের লক্ষ্য শুধু পূর্ব ইউক্রেনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার নয় , যেখানে ডনবাস অঞ্চলের জন্য সর্বাত্মক যুদ্ধ চলছে। দক্ষিণেও হাত দেবে রাশিয়া ।

রাশিয়া কী বলছে: রাশিয়ার কেন্দ্রীয় সামরিক জেলার ডেপুটি কমান্ডার রুস্তম মিনেকায়েভ, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাগুলিকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে দক্ষিণ ইউক্রেনের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এটিকে পশ্চিমে মোল্দোভার একটি বিচ্ছিন্ন রাশিয়ান-অধিকৃত অংশ ট্রান্সনিস্ট্রিয়াতে প্রবেশাধিকার দেবে।২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে "বিশেষ সামরিক অভিযান" শুরু করার সময়, রাশিয়ান রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এই আক্রমণকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন যে তার লক্ষ্য ছিল "কিভ শাসনের কাছ থেকে অপব্যবহার, গণহত্যার শিকার লোকদের রক্ষা করা" এবং "অসামরিককরণ এবং ইউক্রেনকে ডিনাজিফাই করা।"

ক্ষুব্ধ জেলেনেস্কি: মস্কোর উপর এক ঝাঁঝালো আক্রমণে, জেলেনস্কি বলেছেন যে , একমাত্র অঞ্চল যেখানে রাশিয়ার রাশিয়ান ভাষাভাষীদের অধিকার রক্ষা করা উচিত সেটা রাশিয়ার নিজস্ব জায়গায়। সেটা ইউক্রেনে নয়, কিন্তু সেটা তারা করছে। তিনি রাশিয়ার নিন্দা করে বলেন যে " ওখানে বাক স্বাধীনতা নেই, মানুষের স্বাধীনতা নেই, ভিন্নমত পোষণ করার অধিকার নেই, ওখানে দারিদ্র্য বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে এবং মানুষের জীবন মূল্যহীন।"

ডনবাসে অসংখ্য শহর ও গ্রাম বোমাবর্ষণ করেছে রাশিয়া। রাশিয়ান বাহিনী আনুমানিক ২০০০ ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের উপর গুলিবর্ষণ করেছে যারা বিস্তৃত আজোভস্টাল প্ল্যান্টের ভিতরে লুকিয়ে আছে, কৌশলগত দক্ষিণের বন্দর শহর মারিউপোলের প্রতিরোধের সর্বশেষ পকেট। হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকও ইস্পাত কারখানায় আশ্রয় নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুতিন যখন মারিউপোলের জন্য যুদ্ধে বিজয় ঘোষণা করেছেন, জেলেনস্কি দৃঢ়ভাবে বলেছেন যে বিধ্বস্ত শহরটি "প্রতিরোধ অব্যাহত রেখেছে" যদিও নিরলস রাশিয়ান আক্রমণে সেটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

রাজশাহীর সময়/এম